জুরাছড়ির ১৪শ পরিবারে হাসি ফুটল

প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা

নিজস্ব প্রতিনিধি, জুরাছড়ি »
এ যেন দুর্গম গিরি, কান্তার মরু পথ পাড়ি দেওয়া। ১৬ জন উন্নয়ন কর্মী কখনো বৃষ্টি-আবার কখনো রোদ্রের তীব্রতা মধ্যে ১ হাজার ৪শ পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা খাদ্য শস্য, নগদ টাকা ও করোনা কালে সামাজিক সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। এ সময় ৪ মেট্রিকটন খাদ্য-শস্য ও নগদ ৫ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়। এসব পেয়ে হাসি ফুটেছে লকডাউনে খেয়ে না খেয়ে থাকা দরিদ্র পরিবারের পরিবারের ছোট শিশুদের মুখে।
রাঙামাটি জুরাছড়ি উপজেলার মৈদং ইউনিয়নের ফকিরাছড়ি। উপজেলা থেকে ফকিরাছড়ির দুরুত্ব ২৫/৩০ কিলোমিটার। ইউনিয়নের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম পায়ে হাঁটা। উঁচু-নিচু পাহাড়ে কাঁচা রাস্তা। আবার কখনো গিরি ছড়া হাঁটতে হয়।
উপজেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, মৈদং ইউনিয়নে করোনাকালে দরিদ্র জনগোষ্ঠীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা খাদ্য-শস্য ৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়া নগদ ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার বিপরীতে ১০ কেজি হারে ৪শ পরিবারকে চাল, ৫শ টাকা হারে ১ হাজার পরিবারকে নগদ টাকা বিতরণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়। মৈদং ইউনিয়ন পরিষদের সূত্রে জানা গেছে, মৈদং ইউনিয়নটি নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন ও দুর্গম হওয়াই প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা যথাযথভাবে পৌঁছানো ছিল এক চ্যালেঞ্জ।
এসব সহায়তা দরিদ্র জনগোষ্ঠীদের পৌছে দিতে মৈদং ইউপি চেয়ারম্যান সাধনা নন্দ চাকমার নেতৃত্বে ১৬ সদস্য ত্রাণ নিয়ে গেল শুক্রবার যাত্রা করে। চেয়ারম্যান ছাড়া ১৬ সদস্যর মধ্যে ইউপি সচিব সুমন চাকমা, ট্যাগ ও পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মংলা টুন রাখাইন, ওয়ার্ড সদস্যগণ, দুই স্থানীয় সাংবাদিক।
প্রথম দিন টানা ছয় ঘণ্টা হেঁটে ফকিরাছড়ি পৌঁছাই এ টিম। পরের দিন শনিবার সকালে ফকিরাছড়ি, জামেরছড়ি, কাঠালতুলী, মোন আদামসহ চারটি (৬,৭, ৮ ও ৯)ওয়ার্ডে ৭শ পরিবারের মাঝে নগদ টাকা ও খাদ্য-শস্য বিতরণ করা হয়। আবার রবিবার সকালে শীলছড়ি বাজারে চারশ পরিবারে মাঝে বিতরণ করা হয়।
এক হাজার চারশ পরিবারের মধ্যে ৪শ পরিবারকে খাদ্য-শস্যর প্যাকেট বিতরণ করা হয়। খাদ্য-শস্যর প্যাকেট ছিল চাল ১০ কেজি, ১লিটার সয়াবিন তৈল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি পেয়াজ, ১ কেজি লবণ, আধা কেজি মসুর ডাল।
১ হাজার পরিবারকে ৫শ টাকা হারে নগদ টাকা বিতরণ করা হয়। এছাড়া সবাইকে মাস্ক, হেনস্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়।
ট্যাগ ও পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মংলা টুন রাখাইন বলেন, কখনো গিরি ছড়ায় বাঁশের ভেলায় ত্রাণের প্যাকেট ভাসিয়ে, আবার কখনো র্দীঘপথ হেঁটে আমরা দরিদ্র জনগোষ্ঠীদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে। মৈদং ইউপি চেয়ারম্যান সাধনা নন্দ চাকমা বলেন, সকলের সহযোগিতায় জঙ্গল পরিবেষ্ঠিত মেঠোপথ ধরে হেঁটে চলা। ইউনিয়নের দরিদ্র জনগোষ্ঠীদের মাঝে এসব সহায়তা পৌছে দিতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। সহায়তা প্রাপ্ত শেফালীকা চাকমা, শগা চাকমা বলেন, করোনা কালে লকডাউন চলছে। বাজারে যেতে পারি না, ঘরে তেল, সাবান, লবন, পেয়াজ, চাল শেষ। খুবই হতাশ ছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা পেয়ে খুব উপকার হয়েছে। শুধু তারা নয় মৈদং ইউনিয়ন জুড়ে এ কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন স্থানীয় গণ্যমান্যরা।