চবির প্রশাসনিক পদে রদবদল

সোহেল রানা, চবি »

এ বছরের ১৯ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো.আবু তাহেরকে। তাঁর দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তনের ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (২১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে.এম.নুর আহমদের সই করা আলাদা তিনটি বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং দুই হলের প্রভোস্ট পদে পরিবর্তন এর আদেশ জারি করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অধ্যাপক ড. নূরুল আজিম সিকদারকে সরিয়ে নতুন প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ওশানোগ্রাফি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অহিদুল আলমকে। এ ছাড়া প্রীতিলতা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ মামুনকে সরিয়ে জিনপ্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. লায়লা খালেদাকে এবং এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট এসএম মোয়াজ্জেম হোসেনকে সরিয়ে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলী আরশাদ চৌধুরীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মোতাবেক প্রদেয় ভাতা, অন্যান্য সুবিধাসহ আগামী এক বছরের জন্য নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এর একদিন পরেই মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে.এম. নুর আহমদ স্বাক্ষরিত পাঁচটি ভিন্ন প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিতে ৫জন শিক্ষককে যথারীতি প্রদেয় ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাসহ ০১ (এক) বছরের জন্য সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ করা হয়।

পাঁচটি ভিন্ন প্রজ্ঞাপনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রক্টরবৃন্দের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নতুন সহকারী প্রক্টরবৃন্দ হলেন, ওশানোগ্রাফি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. এনামুল হক, সংস্কৃত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. লিটন মিত্র, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহম্মদ, ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রন্টু দাশ এবং ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্ইুরেন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিফাত রহমান।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি রক্ষায় প্রশাসনিক পদে রদবদল করা দরকার। পূর্বের প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম শৃঙ্খলা, নিয়োগ বাণিজ্য, দুর্নীতির এক নজির স্থাপন করেছে। নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘৭৩’ আইন অনুযায়ী পরিচালিত করে আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কে নিয়ে যাবে। ক্যাম্পাসের পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি,  শিক্ষার্থীদের হলের পর্যাপ্ত সিট বরাদ্দ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নতুন প্রশাসন কাজ করবে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সূত্র বলছে, অতি শিগগিরই পরিবর্তন আসতে পারে রেজিস্ট্রার পদে। প্রশাসনের অন্যান্য পদেও সময়ের ব্যবধানে পরিবর্তন আসবে।

চবি’র নতুন প্রক্টর অধ্যাপক ড মোহাম্মদ অহিদুল আলম বলেন, আমাদের মূল পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখা। বিশ্ববিদ্যালয় তার গুণগত মানের জায়গা থেকে অনেক দূর পিছিয়ে; তা ফিরিয়ে আনা। এছাড়া আধুনিক হল ব্যবস্থা, পড়ার পরিবেশ তৈরি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা কিভাবে উন্নত করা যায় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা।

উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ পর্যায় ভিসির পরিবর্তন এসেছে। প্রক্টর ও প্রক্টরিয়ালবডি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রধান ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নেতিবাচক দিক উঠে এসেছিল। তারা আস্থার জায়গা ঠিক রাখতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন শৃঙ্খলা বজায় ও গতিশীলতা রক্ষায় নতুন উপাচার্য প্রশাসনে রদবদল করেছে।

প্রশাসনিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, প্রক্টরের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে নতুন প্রক্টর নিয়োগ দেয়া হয়েছে।  প্রীতিলতা ও এ এফ রহমান হলে পূর্বে প্রভোস্ট না থাকায় নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় দায়িত্বে থাকা কোন ব্যক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে নিয়োগ প্রদান করা হবে।