ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলায় নতুন চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরীফ

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক

ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলায় নতুন চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার হোমনা থানা এলাকার বাঘা শরীফ বলী। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে অনুষ্ঠিত বলী খেলার ১১৫তম আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হয় কুমিল্লার বাঘা শরীফ ও রাশেদ। এর আগে প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়ে রাঙামাটির সৃজন চাকমাকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেন রাশেদ।

দ্বিতীয় সেমিফাইনালে রাসেলের প্রতিপক্ষ ছিলেন বাঘা শরীফ। ফাইনালে মাত্র ১১ মিনিট লড়াইয়ের পর বাঘা শরীফের কাছে হার মানতে হয় রাশেদের। এদিকে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে জয় পান সৃজন চাকমা। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার তৃতীয় স্থান অধিকার করেন তিনি। এবারের আসরে খেলার কথা ছিল গত আসরের চ্যাম্পিয়ন শাহ জালাল বলীর। নামও দিয়েছিলেন জমা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে শিষ্যকে সুযোগ দিতে নিজেই সরে দাঁড়ালেন আসর থেকে। জীবন বলী শারীরিক অসুস্থতায় নিজের নাম প্রত্যাহারের পর বাঘা শরীফের নাম প্রস্তাব করলেও তাকে নিতে রাজি হয়নি বলী খেলা কমিটি। কিন্তু দ্বিতীয়বার তাকে আবারও সুযোগ দিতে গুরু শাহ জালালও সরে দাঁড়ান। তাই তো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর কুস্তির রিংয়ে দাঁড়িয়ে গুরুর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুলেননি শরীফ।

তিনি বলেন, আমি প্রথমবার খেলতে এসেছি। গতবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল ভাই আমার গুরু। তিনি না খেলে আমাকে খেলার সুযোগ করে দিয়েছেন। উনি অনেক বড় মনের মানুষ। আপনারা উনার জন্য দোয়া করবেন। গত আসরের রানারআপ জীবন বলী বলেন, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাই নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছি। আমার পরিবর্তে বাঘা শরীফকে খেলানোর নাম প্রস্তাব করেছি। এর আগে বিকেল চারটায় শুরু হয় বলী খেলার ১১৫ তম আসর। এতে ৮৪ জন বলী অংশ নেন। আসর শুরুর আগেই দর্শকদের আগমনে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় লালদীঘির ময়দান।  ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের স্বনামধন্য ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার সাওদাগর এ বলী খেলার সূচনা করেন। সেই থেকে প্রতি বছরের বৈশাখ মাসের ১২ তারিখ এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ব্যতিক্রমধর্মী এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা  আয়োজনের জন্য ব্রিটিশ সরকার আবদুল জব্বার মিয়াকে খান বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল আয়োজিত জব্বারের বলীখেলার ১১৪তম আসরে কুমিল্লার শাহজালাল বলীর কাছে হেরে ছিলেন চকরিয়া উপজেলার তরিকুল ইসলাম জীবন। খবর বাংলানিউজ’র।

বলী খেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরউদ্দীন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বলীখেলার এবারের পৃষ্ঠপোষক বিশিষ্ট ক্রীড়ানুরাগী ও সিজেকেএস নির্বাহী সদস্য ও এনএইচটি হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানসীর। অন্যদের মধ্যে সিজেকেএস সহ সভাপতি এহসানুর হক চৌধুরী বাবুল, বলি খেলা কমিটির সভাপতি আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, সহ সভাপতি সাংবাদিক চৌধুরী ফরিদ ও জামাল হোসেন, সিজেকেএস সহ সভাপতি ও প্রধান বিচারক মো. হাফিজুর রহমান, স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও সিজেকেএস কাউন্সিলর সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি কমিটির কর্মকর্তা সিজেকেএস কাউন্সিলর আলী হাসান রাজু  প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এবার জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলাকে ঘিরে লালদীঘি ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। এদিকে মেলা আজ পর্যন্ত চলবে।