চন্দনাইশ : গোলাগুলির ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি, চন্দনাইশ »

চন্দনাইশে হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শাহাদাত বরণকারীদের স্মরণে গত ৩০ আগস্ট আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সন্ত্রাসী হামলা ও ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় এবার পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। গত বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন বাদি হয়ে একটি মামলা করেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. আবুল ফয়সাল বাদি হয়ে পাল্টা মামলা করেন।

মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়কসহ ২১ জনকে আসামি  করা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য গিয়াস উদ্দীন সুজন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শিবলী, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাঈনুর রহমান আসিফ, মো. সেলিম, আজিজুর রহমান, পৌরসভা  ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল জলিল, সাইফুল ইসলাম শাওন, মো. সাইমন, শাহারুখ, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম তুষার, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন, আবুল কাশেম, মো. মুছা, মো. সেলিম, মো. ফারুক ইকবাল টিপু, আওয়ামী লীগ নেতা  মো. ওসমান মো. বদি, নুরুল ইসলাম প্রকাশ রানা, পৌরসভা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর লোকমান হাকিম, হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুবুল আলম বাবুল, আওয়ামী লীগ নেতা আলম মাস্টার। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ১৪৩, ৩২৩, ৩২৪, ৩২৫, ৩০৭, ৩৭৯, ৩৮৫  ৪২৭, ৫০৬, ৩৪ ও বিস্ফোরক উপাদান বহন আইন (১৯০৮) সংশোধনী ২০০২ এর ৩ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

এর আগে, হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত ১৫ আগস্টের শোকসভায় গোলাগুলি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের মতো ঘটনা ঘটায় ছাত্রলীগের বিবদমান দুটি গ্রুপ।

এতে পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর লোকমান হাকিম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুর রহিম, আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আমিন, ছাত্রলীগ নেতা বিজয় বডুয়াসহ কয়েকজন আহত হন। ওই ঘটনার রেশ ধরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের দোহাজারী দেওয়ানহাট, বাগিচাহাটে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

এ ঘটনায় বুধবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন বাদি পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আবু তৈয়বকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলার অন্য আসামিরা হলেন, যুবলীগ  নেতা মো. জিকু, মো. বদন আলী, সাইদুর রহমান ওয়াহিদ, মো. আজম, বেলাল হোসেন, মো. রুবেল, সারোয়ার আলম, মো. ইউনুস মিস্ত্রি ও নুরুল আলম।

পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন উপজেলার বাগিচাহাট পেট্রেলপাম্প সংলগ্ন হল-২৪ এ হাসিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর শোকসভা এবং ২১ আগস্ট শহীদদের স্মরণে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল প-, গোলাগুলি, ভাঙচুর, ইটপাটকেল নিক্ষেপে আহতের ঘটনা মামলার এজাহারে উল্লেখ করে দ্বিতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে।

এ ছাড়া দ্বিতীয়পক্ষও ঘটনার দিন মিছিল সহকারে সভায় আসার পথে হল-২৪ এর সামনে পৌঁছালে প্রথমপক্ষ দ্বিতীয়পক্ষের মিছিলে ককটেল, গোলাগুলি, ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আহত করার ঘটনা এজাহারে উল্লেখ করে দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলা হয়।

আনোয়ারা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর মামলা ২টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সভায় সংঘর্ষের ঘটনায় বাদির এজাহারের ভিত্তিতে গত বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে পৃথক ২টি মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্তের পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।