৫৭ কোটি টাকার সড়ক উন্নয়ন কাজে প্রতিবন্ধকতা

চকরিয়ায় বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণে যত ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া :
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অর্থায়নে ৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত চকরিয়া উপজেলার বরইতলী শান্তি বাজার থেকে সুরাজপুর-মানিকপুর হয়ে ইয়াংছা পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ। সড়কটির নির্মাণকাজ এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে চলাচলের ক্ষেত্রে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলছে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
বর্তমানে সড়কটির প্রায় ৭০ ভাগ কাজ এগিয়ে চলছে। তবে শেষমুর্হুতে এসে উন্নয়নকাজে বেশ প্রতিবন্ধকতা তৈরী করেছে সড়কের ১৯ কিলোমিটার অংশজুড়ে স্থিত থাকা বিদ্যুতের ১০২টি খুঁিট। তার মধ্যে ৯৬টি খুঁিট কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এবং ৬টি খুঁিট পিডিবির। অবশ্য বিদ্যুতের এসব খুঁিট (পিলার) অপসারণপুর্বক অন্যত্র সরিয়ে নিতে কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে চিঠি দেওয়া হলেও একবছরে সুফল মিলেনি বলে অভিযোগ তুলেছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আরএবি আরসি প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মকর্তারা।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে চকরিয়া উপজেলার বরইতলী শান্তি বাজার থেকে সুরাজপুর-মানিকপুর হয়ে ইয়াংছা পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ বর্তমানে প্রায় ৭০ ভাগ এগিয়ে চলছে।
তবে শেষমুর্হুতে এসে উন্নয়নকাজে বেশ প্রতিবন্ধকতা তৈরী করেছে সড়কের ১৯ কিলোমিটার অংশজুড়ে স্থিত থাকা বিদ্যুতের ১০২টি খুঁিট। আমরা বিদ্যুতের এসব খুঁিট (পিলার) অপসারণপুর্বক অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে চিঠি দিয়েছি।
ব্যক্তিগতভাবে বিদ্যুৎ বিভাগের দুইটি সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাঁরা সহসা খুটিসমুহ সরিয়ে নিবে বলে এমন কথাও দিয়েছে। তারপরও যথাসময়ে খুঁিট সমুহ সরিয়ে নিতে বিলম্ব হওয়ার কারণে এখন উন্নয়নকাজে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একই ধরনের অভিযোগ করেছেন উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম।
তিনি বলেন, নির্মাণাধীন সড়কটির বেশিরভাগ অংশ পড়েছে তাঁর ইউনিয়নে। এরমধ্যে অন্তত ২০ থেকে ২৫টি বিদ্যুৎ খুঁটি স্থিত রয়েছে সড়কের চার কিলোমিটার এলাকায়।
তিনি বলেন, মানিকপুর ফরেস্ট অফিসের সামনে একটি খুঁিট একাবারে সড়ক দখলে রেখেছে। এই অবস্থার কারণে উপজেলা প্রশাসন পরিচালিত নতুন পর্যটন স্পট মানিকপুর নিভৃত নির্সগ পার্কে সবধরনের যানবাহন চলাচলে খুঁিটটির কারণে প্রতিবন্ধকতা তৈরী হয়েছে। জানতে চাইলে কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চকরিয়াস্থ ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. মোছাদ্দেকুর রহমান বলেন, সড়ক উন্নয়নকাজের অধীন এলাকায় আমাদের ৯৬টি খুঁিট পড়েছে। এসব খুঁিট অন্যত্র সরিয়ে নিতে সড়ক বিভাগ থেকে আমাদের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। উত্তরে আমরা খুঁিটসমুহ সরিয়ে নিতে চারমাস আগে বিভিন্ন খরচ বাবত অর্থবরাদ্দ চেয়ে সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে একটি চাহিদাপত্র দিয়েছি। কিন্তু অধ্যবদি সড়ক বিভাগ আমাদের সেই চাহিদা নিবারণ করতে পারেনি। সেইজন্য সড়ক থেকে খুঁিটসমুহ সরিয়ে নিতে বিলম্ব হচ্ছে।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর জানিয়েছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের অধীনে ৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির উন্নয়নকাজ করা হচ্ছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের চকরিয়া সাইডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো.আনোয়ার হোসেন বলেন, কার্যাদেশ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সড়কটির উন্নয়নকাজ সমাপ্ত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সড়কের মাঝখানে এবং কিছু কিছু স্থানে সড়কের পাশে স্থিত থাকা বিদ্যুতের খুঁিট (পিলার) আমাদেরকে কাজ করতে বেশ সমস্যায় ফেলছে। এই অবস্থায় উন্নয়নকাজ অব্যাহত রাখার নিমিত্তে খুঁিটগুলো অপসারণপুর্বক অন্যত্র সরিয়ে নিতে কক্সবাজার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে অনুরোধ করা হয়েছে।