চট্টগ্রামের ভাষার ‘দুর্দান্ত ডায়লগে’ দর্শকের উচ্ছাস

সিলভার স্ক্রিনে ‘মেইড ইন চিটাগং’

নিজস্ব প্রতিবেদক »

বেলা বিস্কুট ও জব্বারের বলীখেলাসহ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যকে ঘিরে বিভিন্ন দৃশ্যায়নে মন মাতানো সিনেমা ‘মেড ইন চিটাগং’। সিনেমাটির একটি গান নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও দর্শকের আগ্রহের কমতি নেই। আর এ আগ্রহকে আরও সতেজ করতে সিনেমাটির পুরো টিম দর্শকদের সঙ্গে মেতে উঠেছে নগরীর অভিজাত সিনেপ্লেক্স সিলভার স্ক্রিনে। সিনেমার পরিচালকসহ অভিনেতারা চান বিশ্ব দরবারে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় আরও কাজ করতে।

গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের ভাষা ও ঐতিহ্য নির্ভর কমেডি ধারার সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের সঙ্গে সময় কাটান এ সিনেমার নায়ক পার্থ বড়ুয়া, নায়িকা অপর্ণা ঘোষসহ পুরো টিম।

দেখা যায়, সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার দ্বিতীয় দিনে সিলভার স্ক্রিন সিনেপ্লেক্স দর্শকরা ভিড় করেন। এমনকি পরবর্তী শো’র টিকেট পেতেও অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেক দর্শনার্থীকে। হল থেকে বের হয়ে দর্শকরা সিনেমার নানা উক্তি নিয়ে মেতেছেন হাসি-ঠাট্টায়। বিশেষ করে, সিনেমার ডায়ালগ নিয়ে দর্শকদের উচ্ছাস ছিল চোখে পড়ার মতো।

এ নিয়ে সিফাত নামের এক দর্শক বলেন, ‘হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেয়েছি। অনেক মজা লেগেছে। নিজের ভাষার সিনেমায় দুর্দান্ত সব ডায়লগ ছিল ভালো লাগার অন্যতম বিষয়। অপর্ণা ও চিত্রলেখা গুহের অভিনয় খুব ভালো লেগেছে।’

নিগার সুলতানা নামে এক দর্শক বলেন, ‘চলচ্চিত্রে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা ও ঐতিহ্যকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, বিষয়টা বেশ ভালো লেগেছে। কর্ণফুলী, বায়েজিদ লিংক রোড, বেলা বিস্কুট, জব্বারের বলি খেলা সবকিছুতে খুব নস্টালজিক করে দিল, ভালো লেগেছে। প্রথম হিসেবে বেশ ভালো।’

মহিবুল হক নামের আরেক দর্শক বলেন, ‘প্রথম হিসেবে ভালো হয়েছে। তবে ভাষা, সবার অভিনয় আরো নিঁখুত হলে আরও বেশি ভালো লাগতো।’

সিলভার স্ক্রিনে বসে জনপ্রিয় ব্যান্ড সংগীত শিল্পী ও অভিনেতা পার্থ বড়ুয়া বলেন, ‘এখনই সফল- কথাটা আসলে বলা যায় না। আরও দুই-একদিন যাক। সিনেমা দেখা দর্শকদের রিভিউ, রেসপন্স পাই- তারপর বলা যাবে আমাদের চেষ্টা কতটুকু সফল হলো।’

সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকা অভিনেত্রী অপর্ণা ঘোষ বলেন, ‘গত ৩-৪ দিন ধরে আমরা সিনেমার প্রমোশনের কাজে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। সবাই খুব উল্লাসিত, বিশেষ করে চট্টগ্রামবাসী। তারা সবাই চাচ্ছেন আমি চট্টগ্রামের ভাষায় ডায়লগ বলি, তাদের সাথে কথা বলি। আমরাও চাই, এরকম সব সিনেমার মাধ্যমে চট্টগ্রামের ভাষাকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করতে। সেই স্বপ্ন থেকে সব মিলিয়ে অনেক সাড়া পাচ্ছি।’

সিনেমাটির পরিচালক ইমরাউল রাফাত বলেন, ‘স্বপ্নটা দেখি ২০১২ সালে। পার্থ দা’কে নিয়ে যখন বসি তখন আমরা ভাবিইনি এতো সাড়া পাবো। এখন এই সিনেমাটির জন্য বিদেশ থেকেও সাড়া পাচ্ছি। মেইড ইন চিটাগংকে আমরা বিদেশেও পৌঁছে দেবো। চট্টগ্রামের ভাষা নিজেই জায়গা ভেদে পরিবর্তন হয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করেছি মোটামুটি কেন্দ্রের একটা ভাষা মেন্টেইন করতে। যাতে সবাই বুঝতে পারে। তাছাড়া সাবটাইটেল ব্যবহার করা হয়েছে। আশা করছি, চট্টগ্রামের বাইরে দর্শকদের কাছেও সিনেমাটি একইভাবে সাড়া পাবে।’