অন্তত রমজান মাসটি স্বস্তিতে কাটুক

কয়েক বছর ধরে বাজার অস্থির হয়ে আছে। সবধরনের পণ্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানা যাচ্ছে না কিছুতেই। কিছু অসৎ ব্যবসায়ীর হাতে জিম্মি হয়ে আছে সরকার ও জনগণ। সরকারের পক্ষ থেকে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। কোনো পদক্ষেপই ফলপ্রসূ হয়নি।
আজ থেকে শুরু হয়েছে সিয়াম সাধনার রমজান মাস। প্রতি বছরের মতো এ বছরও রমজান শুরুর আগে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নানা ছুতায় এরা দাম বাড়ায়। কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া না গেলেও তারা নিজেদের মতো একটি কারণ দাঁড় করাবেই।
তবে এ বছর রমজানকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেবা খাতগুলোর কোথাও কোনো ধরনের সমস্যা হবে না বলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো দাবি করে বলেছে, ইতোমধ্যে প্রতিটি ক্ষেত্রে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে।
রমজান আসার সাথে সাথে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায়। এবার দ্রব্যমূল্য যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে সেজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগেভাগে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ছোলা, চিনিসহ রমজানে ব্যবহার্য নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে যাতে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেজন্য জেলা প্রশাসন অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক । জানা গেছে, ৪টি টিম বাজার মনিটরিং করছে। তারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দিয়ে এসেছে। বাজারে প্রচুর পণ্যের সরবরাহ এবং মজুদ থাকার কথা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, চিনি নিয়ে কিছু কারসাজির চেষ্টা করা হয়েছিল। এস আলমের সুগার মিলে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডে অপরিশোধিত চিনি পুড়েছে। পরিশোধিত চিনির কোনো ক্ষতি হয়নি। প্রচুর চিনি তাদের ওখানে মজুদ রয়েছে। বাজারেও প্রচুর চিনি রয়েছে। চিনি আমদানিকারক অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছেও বিপুল চিনি রয়েছে। শুধু চিনি নয়, কোনো পণ্যেরই সংকট নেই। তাই কাউকে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ফায়দা লুটতে দেওয়া হবে না।
রমজানে গ্যাসের সংকট যাতে না হয় সেটি নিশ্চিত করতে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (কেজিডিসিএল) নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনসহ অন্য খাতগুলোতে প্রয়োজনীয় গ্যাসের যোগান দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গ্যাসের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন যাতে না কমে সেদিকেও সজাগ থাকার কথা জানিয়েছেন কেজিডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন, পানির কোনো অভাব নেই। আমাদের পানির উৎপাদন অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। আমরা করণীয় নির্ধারণ করে রেখেছি।
যাহোক সাধারণ নাগরিকরা কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে আস্থা রাখতে চায়। চায় অন্তত রমজান মাসটা যেন স্বস্তিতে কাটে। এটুকু নিশ্চয়তা প্রদান করা খুব কঠিন কাজ বলে মনে হয় না।