সাধারণ মানুষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর টুথব্রাশও ঝুলিয়ে রাখা যেখানে

সুপ্রভাত ডেস্ক
গরু ছাগলের হাত থেকে আপনার জমি বাঁচাতে নিশ্চয় বেড়া দিয়ে দেন। বাঁশ কিংবা তারকাটা দিয়ে আটকে দেন জমির সীমানা। এতে করে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন জমির ফসল নিয়ে। তবে টুথব্রাশ দিয়ে বেড়া দেয়ার কথা শুনেছেন কি? অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়? অবাকই হবেন বৈকি! এমনই একটি বেড়া রয়েছে নিউজিল্যান্ডে। যেখানে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহৃত টুথব্রাশও ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের হ্যামিলটন শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে টে পাহু অঞ্চলে লাইমওয়ার্কস লুপ রোড। এই রোডেই দেখা পাবেন টুথব্র্যাশ বেড়ার। মূলত এটি একটি তারের বেড়া। ২০০৬ সালে স্থানীয় অধিবাসী গ্রায়েম কেয়ার্নস অদ্ভুতভাবে তারের বেড়াটিতে টুথব্রাশ ঝুলিয়ে রাখতে শুরু করেন। দেশটির টে পাহু অঞ্চলের এই বেড়াটি একটি গ্রামের রাস্তার পাশে ছিল।
গ্রায়েমের এই মজার কাজের সঙ্গে তার বন্ধু ও প্রতিবেশীরাও যুক্ত হয়। এমনকি একসময় দেশটির প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহৃত টুথব্রাশও ঠাই পায় এই বেড়ায়। কয়েকশ টুথব্রাশ ঝুলিয়ে রাখার কারণে বেড়াটি তারের বেড়ার পরিবর্তে টুথব্রাশ বেড়া হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
গ্রায়েম কেয়ার্নস একজন অস্বাভাবিক লোক ছিলেন। এই বেড়াটি তৈরি করতে তিনি আগেই সংগৃহীত টুথব্রাশ ব্যবহার করেন। সেই সময় তিনি বলেন, আমরা যদি কয়েক’শ টুথব্রাশ এখানে যুক্ত করতে পারি তাহলে আমি নিশ্চিত সারাবিশ্ব থেকে এটি দেখতে পর্যটকরা আসবেন। এগুলোর রং ও আকারের ভিন্নতার কারণে টুথব্রাশকে অনেকটা সমুদ্রের নিচের রং বেরঙের মাছের সঙ্গেও তুলনা করেন তিনি।
যখন তিনি এটি শুরু করেন তখন স্থানীয়রাও এতে সায় দেন। ফলে দ্রুত টুথব্রাশের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তবে শুধু টুথব্রাশ নয়, সেখানে কিচেন ব্রাশ, ইলেকট্রিক টুথব্রাশ এমনকি টয়লেট ব্রাশও ঝোলানো হয়। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটক, সেলিব্রেটিরাও সেখানে তাদের টুথব্রাশ যুক্ত করেন, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্ক।
টুথব্রাশ বেড়াটি এতোই জনপ্রিয়তা পায় যে এটি নিয়ে এইচবিওতে একটি টেলিভিশন শো হয়। দেশটির পর্যটন বিভাগও এটির প্রচারণা চালায়, যাতে ইতিবাচক সাড়াও আসে। ২০১৪ সালে পুলিশ তাড়া খেয়ে এক সন্দেহভাজনের গাড়ি ধাক্কা দিলে এর ৫ মিটার ছিঁড়ে যায়। তবে সপ্তাহখানেকের মধ্যে স্থানীয়রা সেটির আগের অবস্থানে নিয়ে আসে। নিউজিল্যান্ড বেড়াতে গেলে এই বেড়াটি দেখে আসতে একেবারেই ভুলবেন না। সাক্ষী হলেন বিশ্বের অন্যতম এক জনপ্রিয় স্থানের। মন্দ কি!