যোগাযোগের সাথে যোগ হয়েছে পর্যটন সম্ভাবনাও

মহালছড়ি-সিন্ধুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়ক

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি :

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ হবার পর খাগড়াছড়িতে বেড়েছে পর্যটকের আনাগোনা।  আর এবার রাঙ্গামাটি জেলা সদর ও নানিয়ারচর উপজেলার সাথে নতুন মাত্রায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করতে যাচ্ছে খাগড়াছড়ির ‘মহালছড়ি-সিন্ধুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সংযোগ সড়ক’।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার্স কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে ২০ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া থেকে মহালছড়ি উপজেলার ২৪ মাইল পর্যন্ত নয়নাভিরাম এক সড়ক নির্মাণ করেছে।

এ সড়ক ব্যবহার করে ঢাকা থেকে রামগড় জালিয়াপাড়া হয়ে মহালছড়ির ২৪ মাইল এলাকা দিয়ে চালু হবে রাঙামাটির সরাসরি সড়ক যোগাযোগ। খাগড়াছড়ির জালিয়াপাড়া থেকে মহালছড়ি পর্যন্ত মাত্র ২৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের ফলে ঢাকা-রাঙ্গামাটির সড়ক যোগাযোগ কমবে ৭০ কিলোমিটার, সময়ও বাঁচবে প্রায় ৩ ঘন্টা। সড়ক যোগাযোগ ছাড়াও রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর, খাগড়াছড়ির মহালছড়ি, গুইমারা ও লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার কৃষি অর্থনীতিতে গতি আনবে এ সড়ক।

নয়নাভিরাম এ সড়কের ভৌগলিক অবস্থান দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছে পর্যটকও।

মহালছড়ির ফলদ বাগানি হ্লাশিমং চৌধুরী বলেন, আম, ড্রাগনসহ মিশ্র ফলদ বাগানের ফল বাজারজাতে আগে খুব চিন্তা হতো। এ বছর কম সময়ে ঢাকা, চট্টগ্রামে ফল যাচ্ছে সিন্দুকছড়ির নতুন সড়ক ব্যবহার করে।

মহালছড়ির বাসিন্দা মিল্টন চাকমা জানান, বাড়ি মহালছড়ি। চাকরি করি গুইমারা উপজেলায়। আগে খাগড়াছড়ি সদর হয়ে জালিয়াপাড়া যেতে ৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হতো। আর এ নতুন সড়ক হওয়া এ দূরত্ব ২২-২৪ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। সময় ও খরচ দু’য়ে কমেছে।

গুইমারা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উশেপ্রু মারমা বলেন, জালিয়াড়া থেকে মহালছড়ি সিন্দুকছড়ি সড়ক খাগড়াছড়ির দুই উপজেলার কৃষি অর্থনীতি ছাড়াও কাপ্তাই হ্রদ বেষ্ঠিত রাঙামাটির মৎস্য খাত এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন এনে দিবে। এ অঞ্চলের মানুষ এ সড়কের পূর্ণাঙ্গ চালুর অপেক্ষায়।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২০ ইসিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আমজাদ হোসেন দীদার জানান, এ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১৫.৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক, ২৪ কিলোমিটার সাইড ড্রেন ও ৪১০ কিলোমিটার গ্রাভিটি ওয়াল, ৬৩০ কিলোমিটার রিটেইনিং ওয়াল ও ৮০০ মিটার প্যালাসাইডিং নির্মাণ করা হয়েছে। এ সড়ক নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন।

রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রামের যানজট এড়িয়ে এ সড়ক ব্যবহার করে ঢাকার সাথে যোগাযোগ চালু হলে দূরত্ব কমবে ৬৮ কিলোমিটার ও সময়ও বাচঁবে প্রায় ৩ ঘণ্টা। প্রকল্প মেয়াদের ৬ মাস আগে কাজ শেষ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার্স কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে ২০ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন।