মতবিনিময় সভা : যুগোপযোগী মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের আহ্বান 

‘চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার মাস্টারপ্ল্যান (২০২০-২০৪১) প্রণয়ন’ প্রকল্পের প্রাথমিক প্রতিবেদন উপস্থাপন ও প্রকল্পের সামগ্রিক বিষয়ের ওপর মতবিনিময় সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষসহ অন্যরা-সুপ্রভাত

ব্যক্তি রেশারেশি বাদ দিয়ে চট্টগ্রামের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে: নওফেল


চট্টগ্রামের পাহাড়গুলো সংরক্ষণ করতে হবে: মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক »

ব্যক্তি ইগো বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে ভাবতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে  অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে। একইসাথে সঠিক মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের পাশাপাশি এর প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল চট্টগ্রামের পাঁচতারকা হোটেল র‌্যাডিসনে ‘চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার মাস্টারপ্ল্যান (২০২০-২০৪১) প্রণয়ন’ প্রকল্পের প্রাথমিক প্রতিবেদন উপস্থাপন ও প্রকল্পের সামগ্রিক বিষয়ের উপর মতবিনিময় সভায় বক্তারা একথা বলেন।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, অর্থনৈতিক সক্ষমতাকে কারিগরি সক্ষমতায় রূপান্তরিত করতে প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়তা। যথাযথ সংস্থাকে নিয়ে ও তাদের সাথে সমন্বয় সাধন করে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করতে হবে। একইসাথে এর যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে চট্টগ্রামকে একটি টেকসই মহানগরীতে পরিণত করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ব্যক্তি রেশারেশির কারণে প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই এসব রেশারেশি বাদ দিতে হবে। চট্টগ্রামের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ড্রেন কেউ পরিষ্কার করেনি। এক সংস্থা আরেক সংস্থাকে দোষারোপ করেছে। বিগত অনেকগুলো বছর কোনো কাজ হয়নি। এখন চট্টগ্রাম মহানগরী দেখলে বুঝা যায় এখানে সিটি কর্পোরেশন রয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রামের বন্দর-পতেঙ্গা এলাকার সংসদ সদস্য এম এ লতিফ বলেন, আগেও চট্টগ্রামের মাস্টারপ্ল্যান হয়েছে কিন্তু এর সঠিক বাস্তবায়ন হয়নি। তাই যুগোপযোগী আইনের মাধ্যমে সঠিক পরিকল্পনা করা প্রয়োজন যাতে তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা যায়।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, বাণিজ্যিক ও শিল্প-নগরী চট্টগ্রামের উন্নয়নে বর্তমান সরকার অনেক মেগাপ্রকল্প গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্প অন্যতম। তিনি রূপকল্প ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এর সাথে  সমন্বয় সাধন করে মাস্টারপ্ল্যান প্রনয়ণ করার পরামর্শ দেন এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়াও একটি কার্যকরী মাস্টারপ্ল্যান প্রনয়ণের জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য সকল সংস্থাকে আহ্বান জানান।

চট্টগ্রামের পাহাড় সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম শহরের রিমোট এলাকায় বাস টার্মিনাল, ট্রাক টার্মিনাল স্থাপন এবং আবর্জনা স্তুপীকরণের নিমিত্তে নতুন জোন করার আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি রাস্তার পাশে অপরিকল্পিতভাবে ইমারত নির্মাণ রোধ করারও প্রস্তাবনা করেন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, মাস্টারপ্ল্যান একটি চলমান প্রক্রিয়া যা জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে সবার সাথে সমন্বয় করে প্রতিনিয়ত যুগোপযোগী উন্নয়নকে সুনিশ্চিত করে। তাই তিনি একটি গ্রহণযোগ্য মাস্টারপ্ল্যান সুনিশ্চিত করার জন্য চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার প্রত্যেকটি সরকারি-বেসরকারি সংস্থা এবং জনসাধারণের উদার অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।

সভায় স্বাগত বক্তৃতা দেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস। প্রকল্পের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের টিম লিডার কাজী ড. আহসানুল কবির।

এছাড়া প্রকল্পের গুরুত্ব এবং কর্মপদ্ধতি নিয়ে কথা বলেন প্রকল্পের পরিচালক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আবু ঈসা আনসারী। সিডিএ’র ঊর্ধ্বতন স্থপতি গোলাম রাব্বানীর উপস্থাপনায় সিডিএ’র সকল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বোর্ড সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০ বছর মেয়াদি নতুন মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সার্ভের কাজ শুরু হয়েছে।