ভালোবাসাটাই অর্জন

সাক্ষাৎকার : কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন

আমার বাবা যেহেতু সাহিত্যর্চচা করতেন। বাড়িতে অনেক বই ছিলো। আমাদের জন্য তিনি নিয়মিত বই আনতেন। আমরা তিন ভাই বোন এক সঙ্গে বড়ো হয়েছি। বড়োরা অনেক বড়ো আমাদের তুলনায়। ছোটরা অনেক ছোট। এই তিনজনের মধ্যে প্রতিযোগিতা হতো কে কোনটা কেড়ে নিয়ে পড়তে পারে। তিনটা বই হয়তো আনতো। আমরা লুকিয়ে রাখতাম। এটা পড়া শেষ হলেই তারপর দেবো। এইভাবে অনেক সাহিত্য পড়া হয়েছে।

হুমাইরা তাজরিন »

কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেনের কর্ম ও আনন্দের মিশ্রণে অতিক্রান্ত বর্ণিল পঁচাত্তরের এক প্রভাতে তাঁর সঙ্গে কথা হয় সুপ্রভাতের।

বর্ণিল ৭৫-এর অর্জন কাকে বলবেন?
‘যখন আমরা কোথাও যাই, ট্রেনে বা যেকোনো যানবাহনে। কিছুক্ষণ পর বেশিরভাগ লোক বলে ওঠে, ইশ্ কখন পৌঁছাবে! একটা বিরক্তিবোধ তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। তখন আমি বলি, তোমরা বিরক্ত হচ্ছো কেন? এই যে যাচ্ছি, দুপাশে দুরকম দৃশ্য আছে। এটাই তো দেখার বিষয়। এটা দেখতে থাকলে, তোমার তো কখনও বিরক্ত লাগার কথা না। জার্নিটা হচ্ছে ইম্পোর্টেন্ট। মানুষ যে সচল আছে সেটাই। আমি সবসময় নিজেকে সচল রাখার চেষ্টা করেছি। চলার পথে বেশিরভাগ লোক অভিযোগ করে। অমুক এতো খারাপ, তমুক এভাবে কষ্ট দিলো। ও এভাবে কথা বললো। কিন্তু আসলে এগুলো তো পার্ট অফ লাইফ। মানুষ তো এমনই। বেশিরভাগ মানুষই দূর্বল প্রকৃতির, আপোষপ্রবণ, সুবিধাবাদী। এগুলো থাকবেই। আমি যা লিখেছি, করেছি এগুলো বিবেচনা করবে ভবিষ্যৎ কাল। আমি যেখানে যেটা দায়িত্ব মনে করেছি, করেছি। এগুলো করতে গিয়ে অনেক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। আমার কাছে মনে হয়, এগুলো আমার জীবনের বড়ো প্রাপ্তি। যেমন, আমাকে আমাদের (ফুলকির) যে বুয়ারা আছে, ওরা একটা উপহার দিয়েছে। তো আমাকে ডাকলো সবাই। পায়ে ধরে সালাম করে একটা উপহার দিলো। বাসায় নিয়ে গিয়ে দেখলাম, আমার অসাধারণ একটা ফটোগ্রাফ! আবার আমার যে ড্রাইভার, ২০ বছর কাজ করেছে। ও বলেছিলো যে, ‘আমি যে আপনাকে ছেড়ে যাবো, এটা ভাবি নাই কোনোদিন।’ এই ভালোবাসাটাই অর্জন।’

শৈশবের কোন বিষয়গুলো সৃজনশীলতার পথে তাড়িত করেছিলো?
শৈশব তো শৈশবের মতোই খেলাধুলা করে কেটেছে। আমাদের ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম হচ্ছে, আমার বাবা যেহেতু সাহিত্যর্চচা করতেন। বাড়িতে অনেক বই ছিলো। আমাদের জন্য তিনি নিয়মিত বই আনতেন। আমরা তিন ভাই বোন এক সঙ্গে বড়ো হয়েছি। বড়োরা অনেক বড়ো আমাদের তুলনায়। ছোটরা অনেক ছোট। এই তিনজনের মধ্যে প্রতিযোগিতা হতো কে কোনটা কেড়ে নিয়ে পড়তে পারে। তিনটা বই হয়তো আনতো। আমরা লুকিয়ে রাখতাম। এটা পড়া শেষ হলেই তারপর দেবো। এইভাবে অনেক সাহিত্য পড়া হয়েছে। আমাদের মামা ছিলেন শফিউল আলম, যিনি এখন ‘টইটম্বুর’ প্রকাশ করেন। তিনি আমাদের নেতার মতো ছিলেন। গল্প বলতেন। হাতে লেখা একটা পত্রিকা করেছিলেন ‘রাঙা তুলির আঁচড়’। সেটাতেও আমি লিখেছি। তখন আমি খুবই ছোট। সেভাবেই লেখালেখির মধ্য দিয়ে যাওয়া, পড়ালেখা সাহিত্যপাঠের দিকে থাকা। ছোটবেলা থেকেই সেটা হয়েছে।

ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকায় কাজ করার গল্পট কেমন ছিলো?
মূল প্রবণতা ছিলো সাহিত্যপাঠ এবং লেখালেখি করার দিকে। তবে ষাটের দশকটা একটু অন্যরকম ছিলো। যেটাতে আমাদের রাজনৈতিক আন্দোলনের জোর তুঙ্গে ওঠে। সেই সাথে সাংস্কৃতিক আন্দোলনটা যুক্ত হয়। ৬ দফা আন্দোলন। ছাত্ররাও আবার এই সংগ্রামে যুক্ত হয়েছিলো। ছাত্ররা দিয়েছিলো ১১ দফা দাবি। আমি ছাত্র সংগঠন করেছি। পয়ষট্টিতে যখন কলেজে উঠলাম তখন থেকে একটা রাজনীতি সচেতনতা ছিলো। এবং সেখান থেকে পিছাইনি আরকি। ধরুন, পয়ষট্টি থেকে উনসত্তর পর্যন্ত। উনসত্তরের গণআন্দোলনের পরে আমি একটু রাজনীতি থেকে নিজেকে দূরে রেখেছিলাম। তখন আমার কিছু বন্ধু ছিলো, যাঁরা লেখালেখিতে অনেক বেশি মনোযোগী ছিলো। মোহাম্মদ রফিক, আলতাফ হোসেন, দিবাকর বড়ুয়া। সত্তরের দিকে আমরা মোহাম্মদ রফিকের নেতৃত্বেই ‘অচিরা’ পত্রিকা প্রকাশ করলাম। কবিতার দিকে ঝুঁকলাম। কিন্তু রাজনীতি আমার মাথায় থাকলো এবং দিনে দিনেই তো আমাদের দেশের পরিস্থিতি উত্তাল হয়েছে। এগুলো করতে করতে মুক্তিযুদ্ধ এসে গেলো। মুক্তিযুদ্ধে একভাবে অংশ নিলাম, দেশের ভিতরে থেকেই। স্বাধীনতার পরে আমার একটা ডাক আসলো একুশের কবিতার লেখক মাহবুবুল আলম চৌধুরীর কাছ থেকে। তিনি ‘স্বাধীনতা’ নামের একটি পত্রিকার সম্পাদক। একাত্তরের ডিসেম্বর মাসে আমি ওই পত্রিকার সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দিই। আবার বাহাত্তরের মার্চ মাসে আমি চলে গেলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ করার জন্য। ফলে সেখানে সাংবাদিকতা তখন থেমে গেলো। তখন আমি খেয়াল করলাম যে, একটা এলোমেলো অবস্থা দেশে। প্রত্যেকেই নিজের মতো করে কাজ করতে চাইছে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। নেতৃত্ব মানছে না। অনেকের মধ্যে লোভ দেখা দিয়েছে। একইভাবে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। তখন আমি ভাবলাম যে, আমাদের তো কিছু করা দরকার। আমরা তো কিছু করার সুযোগ পাচ্ছি না। আমি চাইলাম এমন কিছু কাজ করতে যেটা মানুষের বেসিক যে চাহিদাগুলো সেগুলোকে টাচ্ করে। আমার চিন্তা তখন থেকে ছিলো যে, আমি শিক্ষা নিয়ে কাজ করবো। কারণ, আমরা ছাত্রজীবনে স্লোাগান দিয়েছি, শিক্ষা ব্যবস্থা পাল্টাতে হবে। কিন্তু পাল্টে কি করতে হবে সেটা কোথাও বলা হয়নি।
এম এ শেষ করে ফিরে এসে আমি চট্টগ্রাম চারুকলা কলেজে যুক্ত হলাম এবং নিজের ভাবনাটা গঠন করার কাজে নিয়োজিত হলাম। এর মধ্যে পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটলো। ঘটার পর আমরা কিছুটা বিমূঢ়। এতোগুলো হত্যাকাণ্ডে স্বাভাবিকভাবেই অনেকের মন খারাপ। দম বন্ধ করা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তখন একজনের পরামর্শে আমি বাচ্চাদের জন্য নাটক লিখি, বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করি। তখন আবার অভিভাবকেরা বললো যে, ‘আপনারা এতো ভালো কাজ করছেন, এই বাচ্চাগুলোকে ছেড়ে দেবেন না।’ তখন ছিয়াত্তরের জানুয়ারিতে আমরা একটা ওপেন স্কুল শুরু করেছিলাম। ‘ফুলকি’ নাম দিয়েই। নাটকটার নাম ছিলো ‘ফুলকি’। নাটকের নায়িকার নামে নাম। তো চালাতে চালাতে আমার মনে হয যে, এখানে যদি কেবল ধনীদের বাচ্চাদের দিয়ে যায়, তাহলে আমরা যেটা চাইছি সেটা হবে না। মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত যারা শিক্ষাটাকে সিরিয়াসলি নেয় তাদের মধ্যে হতে হবে।
আটাত্তর সালের জানুয়ারি মাসে আমরা চলে আসলাম মধ্যবিত্তের জায়গা নন্দনকাননে। একাশি সালে আমরা স্কুল চালু করি। আমার লেখালেখি কমে গেছে। চারুকলা কলেজে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছিলো শিক্ষক এবং শিল্পীদের মধ্যে। আমি সেখানে জানালাম যে, একটা অন্যায়ের ওপর দাঁড়িয়ে আমি এখানে চাকরি করবো না। সাতাত্তরের ডিসেম্বরে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ওয়াহিদুল হকের মাধ্যমে আমার আবার একটা চাকরি হলো চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত ডেইলি লাইফ পত্রিকায়। সেই থেকে সাংবাদিকতা আমার পেশা, সাহিত্য একটা ব্রত, শিক্ষা আরেকটা ব্রত। এই তিনটি নিয়ে চলছি। এর বাইরে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চলছে। মানে মানুষের এনলাইটেনমেন্টের জন্য করা বা এই নানা রকম অমানবিক ঘটনা ঘটছে সেগুলোর প্রতিবাদ করাও আমাদের দায়িত্ব। আনন্দের কাজ করি আমি, নিরানন্দের কোনো কাজ আমি করি না। সবগুলো আনন্দের কাজ।

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় ফুলকির কোন দিকগুলো দেখতে চান?
আমরা তো দেখছি, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাটা দিন দিন অর্থহীন হয়ে পড়ছে। একটা কোনো লার্নিং দেয় না। একটা পৃথিবীর বিকাশের জন্য যা যা দরকার। একটা আনন্দময় পরিবেশ, বিকাশমান পরিবেশ, সৃজনশীলতার সুযোগ, চিন্তা ভাবনা করার অবকাশ, তার কিছু হাতে তৈরি করার সুযোগ, তার নানা বিষয়ে চিন্তা করে মতামত দেওয়ার অধিকার। এগুলো দিনে দিনে মুছে যাচ্ছে। ফলে আমরা ওই জায়গাগুলো যেন তৈরি হয় তাই একে ঢেলে সাজিয়েছি। এখানে শিক্ষা ও সংস্কৃতি একই সাথে গড়ে ওঠে। সংস্কৃতি বলতে কেবল গানবাজনা নয়। একটা মানুষ কীভাবে কথা বলবে, তার আচরণ কীভাবে গড়ে উঠবে সেগুলো। তার কিছু অভ্যাস যেমন গান শোনার অভ্যাস, বই পড়ার অভ্যাস, নাটক করার অভ্যাস অর্থাৎ যত রকম অপশন দেওয়া যায় আমরা সেটা দিই। এরপরে তার পছন্দ অনুযায়ী সে কিছু বেছে নেয়। আমরা মনে করি যে, এগুলো করলে লেখাপড়ার ক্ষতি হয়। কিন্তু সে যেহেতু আনন্দে থাকে যেটা করবে সেটা মনে থাকব। এখন নতুন শিক্ষাক্রম আসছে এগুলো সেখানে যুক্ত হবে। যেমন সব স্কুলে লাইব্রেরি থাকা চাই, ল্যাবরেটরি থাকা চাই, সৃজনশীল চর্চার জন্য আলাদা করে ডেডিকেটেড পিরিয়ড চাই। তাদের বই পড়াটা যাতে অভ্যাসে পরিণত হয় তার জন্য এগুলোকে পিরিয়ডের মধ্যে রাখতে হবে।

নতুন প্রজন্মকে সংস্কৃতিবান হতে হলে কী করতে হবে?
আমরা যদি বলি যে, সদা সত্য কথা বলিবে, অথচ সে চারপাশে কেবল অসততা দেখে বড়ো হচ্ছে তাহলে হবে না। সত্য, সততাচর্চার মধ্যে দিয়ে বড়ো হতে হবে। দৃষ্টান্ত পেলেই ও শিখবে। একটা সামাজিক সাংস্কৃতিক পরিবেশ তৈরি করতে হয়। কিছু মানুষ আমরা তৈরি করেছি। যারা একটু মিসফিটও হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ এই পরিস্থিতিতে হাই স্কুলে গিয়েও সমস্যায় পড়ে। তবু আমরা মনে করি যে, ওদের একটা প্রভাব এক সময় গিয়ে পড়বে।

সংস্কৃতিবান হওয়া কেন প্রয়োজন বলে মনে করেন?
সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায়, কিশোর গ্যাং তৈরি হচ্ছে। কিশোরেরা নানান অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এবং তারা কোনো বড়ো কাজে যুক্ত হচ্ছে না। এক সময় কিশোরেরা ক্ষুদিরাম হয়েছিলো বা কিশোরেরা মুক্তিযুদ্ধে গেছে। কিন্তু তারা তো এখন এরকম কাজ করছে না। কোনো মহৎ কাজে যুক্ত হচ্ছে না। তাই মহত্ত্বের সংকট হবে। মহৎ মানুষের যে ভেল্যুস সেগুলোর সংকট হবে। গাঁজায় প্রতি ১০ মিনিটে ১ জন শিশু মারা যাচ্ছে সেটা নিয়ে বাংলাদেশে কেউ তেমন কোনো প্রতিবাদ করছে না। আমরা সাংস্কৃতিকভাবে জাগ্রত না, সুপ্ত জাতি।

রবীন্দ্রনাথ আমাদের কীভাবে প্রভাবিত করেন?
আমাদের সংস্কৃতি অঙ্গনে রবীন্দ্রনাথ হচ্ছেন একজন প্রধান ব্যক্তি। ওনাকে ভালো করে না বুঝলে বাঙালির মননশীলতার, সৃজনশীলতার যে জায়গা সে দুটো জায়গায় ভালো করা যাবে না। যদি শিশুদের ক্ষেত্রে বলি, সেখানে দর্শনটা হচ্ছে তাকে প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে হবে। তাকে নানাভাবে সৃজনশীল কাজের মধ্য দিয়ে আনন্দময় পরিবেশে রাখতে হবে এবং তার মধ্যে একটা দেশাত্ববোধ জাগাতে হবে। আর যদি আমরা গানবাজনার কথা বলি, তিনি নিজে একটা সঙ্গীতের ফর্ম তৈরি করেছেন। রুচিশীল,সংস্কৃতিবান নাগরিক গড়ে তুলতে গান তো লাগবে। সে গানটা তিনি রচনা করেছেন যেটা সবধরনের মানুষের শোনার জন্য উপযোগী, রুচিসম্মত এবং মার্জিত। এভাবে যদি সাহিত্যের কথা বলি, তাহলে তাঁর পূর্বে যাঁরা লিখেছেন সেখানে কিছু ছিলো তৎসম শব্দবহুল, কিছু খাঁটি বাংলা শব্দ দিয়ে অনেকটা হালকাচালে লেখা, সুর করা। রবীন্দ্রনাথের হাতে আধুনিক বাংলা কবিতার আধুনিক যাত্রা শুরু হয়েছে। বলা যায়, বিদ্যাসাগর আমাদের বাংলা ভাষার ফাউন্ডেশন দিয়েছেন, তার ওপরে ভিত রচনা করেছেন বঙ্কিম এবং সেখানে সৌধ রচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ।

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থাকলে সেখানে কি সৃজনশীলতা ব্যাহত হয়?
সবাই মিলে যখন রাজনীতির কাজটা করতে হচ্ছে তখন আসলে খুবই সংকট দেখা দেয়। রাজনীতিবিদও ঠিক মতো রাজনীতি করতে পারে না। এখন যারা বিএনপি করে তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার লাগবে। গণতন্ত্র কি, গণতান্ত্রিক পদ্ধতি কি এগুলো কেউ র্চচা করে না। আজকের এই পরিস্থিতিতে যদি খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করে আনা হয় তাহলে এটা হবে কিনা আমার সন্দেহ। আমি দেখলাম যে, উন্নত বিশ্বের মধ্যে একমাত্র শেখ হাসিনাই ইউক্রেন এবং গাঁজার যুদ্ধের বিরোধিতার সাহস করেছেন। যেগুলো আমেরিকার গায়ে লেগেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার জনমত আছে বলে টলারেট করছে। যখন খালেদা জিয়ার শাসনামল তখন আমেরিকা গ্যাস রপ্তানি করতে চেয়েছিলো। কিন্তু যখন সরকার বদল হলো, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আসার পরও শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আমার দেশের মানুষের প্রয়োজন মেটানোর পর যদি উদ্বৃত্ত থাকে তাহলে দিবো।’ এরকম কথা জাতীয়তাবাদী নেতা ছাড়া কেউ বলতে পারে না।

নতুন প্রজন্মের জন্য আপনার পরামর্শ কী হবে?
প্রথম কাজ হচ্ছে, নিজেকে প্রস্তুত করা। মানে দেশকে, সমাজকে, জাতিকে আমি যে কিছু দেবো আমার থাকতে হবে তো। চটজলদি কাজ করতে হবে এমন কোনো কথা নাই। নিজেকে তৈরি করাটা গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতার পর থেকেই মানুষের প্রস্তুতি পর্ব, সেটা উপেক্ষিত হয়েছে। যে ভাষাটা শিখতে হয়, হাতেখড়ি হতে হয়, সেটা হয়নি। কোনটা পছন্দের সাহিত্য, কেন পছন্দ সেটা বলতে পারে না। কেননা পছন্দটা খাঁটি না, সে সেটা ধারণ করে না। মানুষ হয়ে গড়ে ওঠার যে প্রস্তুতিপর্ব সেটা মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সে যদি ঠিকভাবে লিখতেই না পারে তাহলে সে কীভাবে অন্যকে কনভিন্স করবে? নানা বিষয়ে পড়াশোনা করলে ধারনা পাল্টায়, বদলায়। সেগুলো সম্পর্কে একটা মতামত দিতে পারে।