বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা না আনলে এ জাতি কোনদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে পারত না

ক্লাব কলেজিয়েটের স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় এম এ মালেক

কলেজিয়েট স্কুলের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধান্জলি অর্পন করছেন আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, ক্লাব চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহীত উল আলমসহ ক্লাব মেম্বাররা।

নিজস্ব প্রতিবেদক »
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের ৫৩তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য  কলেজিয়েট স্কুল প্রাঙ্গণে ক্লাব কলেজিয়েট চিটাগাং লিমিটেডের সদস্যরা সকাল সাড়ে ১১টায় সমবেত হন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুহম্মদ সিরাজুল ইসলাম স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ও ক্লাব মেম্বারদের সাদর অভ্যর্থনা জানান। এরপর প্রধান শিক্ষক স্কুলের “হৃদয়ে মুজিব” কক্ষটি ঘুরে দেখান। শিক্ষার্থীরা যাতে দেশের ইতিহাস, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর অবদান সম্পর্কে জানতে পারে সে জন্য এ আকর্ষণীয় ছোট্ট যাদুঘরটি রাখা হয়েছে।

এরপর স্কুল সংলগ্ন প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠন চট্টগ্রাম কলেজিয়েটস কার্যালয়ে স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা সভায় মিলিত হয় ক্লাব সদস্যরা। মন্জুর মোরশেদ ফিরোজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম কলেজিয়েটস-এর সভাপতি ও ক্লাবের সিনিয়র মেম্বার রাষ্ট্রীয় সম্মননা একুশে পদকপ্রাপ্ত  দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম, এ, মালেক। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্লাব চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহীত উল আলম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম, এ, মালেক বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা না আনলে এ জাতি কোনদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে পারত না। তিনি আরও বলেন, জীবনের আকাঙ্খা চরিতার্থে লালায়িত হতে নেই, সহজ জীবনবোধই সবচেয়ে মঙ্গলজনক। তিনি ক্লাব কলেজিয়েটের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, টিম ওয়ার্ক ছাড়া কোন বড় উদ্দেশ্য সাধিত হতে পারে না।

ক্লাব চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহীত উল আলম তাঁর সভাপতির ভাষণে বলেন বঙ্গবন্ধু এ বাংলাদেশটা সৃষ্টি করে কত বড় কাজটা যে করেছেন তা দিনে দিনে আরও ভাস্বর হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু এখন বিশ্বস্বীকৃত নন্দিত জননেতার মধ্যে শীর্ষস্থানীয়দের মধ্যে একজন।

অধ্যাপক মোহীত আরও বলেন, বাংলাদেশ নানান সূচকে প্রভুত উন্নতি সাধন করলেও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন দারিদ্র দূরীকরণ, অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা, নারীর ক্ষমতায়ন ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন জীবনচর্চা থেকে মুক্তি এগুলো এখনও সাধিত হয় নি। স্বাধীনতা আসলেও জনজীবনের বহু ক্ষেত্রে মুক্তি এখনও আসেনি। তিনি আরও বলেন, শুধু মেধা কিছুই নিশ্চিত করে না। মেধার সঙ্গে যদি সমাজচিন্তা, রাজনৈতিক চিন্তা, অপরের প্রতি সহানুভূতিশীলতা এবং অন্যান্য মানবিক গুণাবলী যুক্ত না হয়, তা হলে মেধাবী মানুষ খুবই স্বার্থপর জীবন যাপন করে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা উদগ্র মেধাস্বাতন্ত্র্যকে আশকারা দেয় বলে, জাতি মেধাবী লোকদের সহায়তা খুব কমই পায়।

আলোচনা সভা শেষে স্কুল প্রাঙ্গণের স্মৃতিসৌধে ক্লাব মেম্বাররা শ্রদ্ধান্জলি অর্পন করেন। সে সময় কলেজিয়েট স্কুলের বিএনসিসি শাখার ক্যাডেট ও স্কাউটেরা মার্চ পাস্ট করে ক্লাব কলেজিয়েটের সদস্যদের এ উদ্যোগকে অভিবাদন জানায়।

এখানে উল্লেখ্য যে, স্কুলের এই স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করে দিয়েছে কলেজিয়েট ৮৬ ব্যাচ। বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মুরীদুল আলমের দুই ছেলে মাহবুবুর রহমান শিবলী ও মাহবুবুল আলম চিশতি কলেজিয়েট স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র, তাঁদের মা শহীদ জায়া জেসমিন আলম এই স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।