পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে রোড ম্যাপ ঘোষণার দাবি

রাঙামাটিতে পিসিপির সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি »

‘সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন করবে, কি করবে না, তার একটা রোড ম্যাপ ঘোষণার দাবি করে আসলেও সরকার তা না করে তালবাহানা করছে।’
গতকাল শুক্রবার সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ছাত্র-জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’র সভাপতি ও অঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন।
রাঙামাটি জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণে ‘আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন জোরদার করেন ছাত্র সমাজ অধিকতর সামিল হউন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে পিসিপি। এর আগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ।
সন্তু লারমা আরও বলেন, সরকারের কাছে পার্বত্য এলাকার মানুষের প্রশ্ন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করবে কিনা। যে জুম্ম জনগণকে সাথে নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছিল তাদের ধ্বংস করার জন্য সরকার প্রতিনিয়ত মামলা হামলা করে যাচ্ছে। একই সাথে জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বকে ধ্বংসের জন্য নানা দমন পীড়ন সব কিছুই করছে এই সরকার। আমাদের সবকিছুই নতুন করে ভাবতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমন মারমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন কণা, শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক মংসানু চৌধুরী, সাংবাদিক নজরুল কবীর, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফয়েজউল্লাহ, সাংস্কৃতিক সংগঠক শিশির চাকমা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পাহাড়ের মানুষ শান্তিতে নেই। ২৫ বছর আগে পাহাড়ে শান্তির জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করা হলেও এতো বছরেও চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ে অশান্তি বিরাজ করছে। সরকার চুক্তি পক্ষের মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করছে। এভাবে পাহাড়ে শান্তি ফিরবে না। ৫১ বছর ধরে জুম্ম জনগণকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা চলে আসছে। পাহাড়ে উন্নয়নের নামে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীকে তার ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এমন উন্নয়ন পাহাড়ের মানুষ চায় না। সমাবেশে বক্তারা দ্রুত চুক্তির বাকী ধারাগুলো বাস্তবায়নের দাবিও জানান।
সমাবেশ শেষে ছাত্র সংগঠনটির বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের বনরূপা ঘুরে আবারও জিমনেসিয়ামে এসে শেষে হয়।