নতুন বইয়ের ঘ্রাণে মাতোয়ারা

নিজস্ব প্রতিবেদক »

বছরের প্রথম দিন, নতুন বই হাতে পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। সারাদেশে প্রাক-প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং মাদ্রাসায় বই বিতরণ করা হয়েছে। চট্টগ্রামেও গতকাল সকাল ৯টা থেকে স্কুলে স্কুলে বই বিতরণ শুরু হয়। তবে সব কটি বই না পেলেও খুশির কমতি ছিলো না তাদের। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ শুঁকেই বাড়ি ফিরেছে তারা।

গতকাল রোববার সরেজমিনে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের পাশে একটি বড় মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা একে একে অভিভাবকের হাত ধরে স্কুলে প্রবেশ করছে। তাদের চোখে মুখে উচ্ছ্বাসের ছটা।
এ উপলক্ষে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার ফরিদুল আলম হোসাইনী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ অনোয়ার পাশাসহ আরো অনেকে।
এ দিকে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলেও জাকজমকভাবে বইউৎসব পালন করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে বই বিতরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তাফা কামরুল আখতার।
কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আজ (গতকাল) আমাদের সব ছাত্রীদের হাতে বই তুলে দিয়েছি। তবে কিছু বই কম রয়েছে। সেগুলো শীঘ্রই আমাদের দেওয়া হবে। যেগুলো হাতে পেয়েছি সেগুলো দিয়েছি।
শুধু খাস্তগীর এবং কলেজিয়েট নয় গভর্নমেন্ট মুসলিম হাইস্কুল, চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, নাছিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সিটি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ উপজেলার বিভিন্ন স্কুলেও চলেছে বই উৎসব।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে , চট্টগ্রামে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৮১ জন। এসব শিক্ষার্থীর বিপরীতে বইয়ের চাহিদা ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯০৩টি। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাধ্যমিকের প্রাপ্ত বইয়ের সংখ্যা ৫৮ লাখ ৫৪ হাজার ৪৬১টি। মাদ্রাসায় প্রাপ্ত বইয়ের সংখ্যা ২৯ লাখ ৮৭ হাজার ৪১টি। সর্বমোট প্রাপ্ত বইয়ের সংখ্যা ৮৮ লাখ ৪১ হাজার ৫০২টি। এ পর্যন্ত মোট প্রাপ্ত ৫৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ বই বিদ্যালয়ে পৌঁছেছে।

বইয়ের ঘাটতি নিয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ফরিদুল আলম হোসাইনী বলেন, প্রতিনিই তো বই আসছে। যা বই পাওয়া গেছে সেগুলোই আজ (গতকাল) বিতরণ করা হয়েছে। বাকিগুলো জানুয়ারি মাসেই দেওয়া হবে।

আজ ২ জানুয়ারি থেকে পাঠদান শুরু হবে। যে বইগুলো শিক্ষার্থীরা হাতে পায় নি, সে বিষয়ের শিক্ষকরা কিভাবে পাঠদান করাবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বইগুলো যদি হাতেই না পায় সেক্ষেত্রে শিক্ষকরা ওই বিষয়ের উপর আমাদের ওয়েব সাইট থেকে সফট কপি নামিয়ে পাঠদান চালিয়ে যেতে পারবেন। আমরা এখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা দিইনি। যদি না আসে শিক্ষকরা সফট কপি নামিয়ে নিতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, বইয়ের যে সংকট রয়েছে তা জানুয়ারির মধ্যে সমাধান হবে। পাঠদান নিয়ে ব্যাঘাত ঘটার কোনো কারণ নেই। কেননা জানুয়ারির পুরো মাসটাই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলার অনুষ্ঠান করে থাকে। তখন পাঠদানের চাপ থাকে না।