আটদিনে খোঁজ মেলেনি শিশু আয়নীর

থানাকে মামলা গ্রহণের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক »

নগরীর পাহাড়তলী থানার সাগরিকা রোড এলাকায় বিড়ালের বাচ্চা দেয়ার লোভ দেখিয়ে আবিদা সুলতানা আয়নী (১০) নামে চতুর্থ শ্রেণীর এক শিশু কন্যাকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ চট্টগ্রামে মামলা দায়ের করেছেন কন্যা শিশুটির মা মোছাম্মৎ বিবি ফাতেমা। বিচারক শারমিন জাহান অভিযোগটি আমলে নিয়ে সরাসরি মামলা গ্রহণ করতে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশ প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান।

মামলাটিতে একমাত্র আসামি করা হয়েছে মো. রুবেল (৩৫) নামে একজনকে। তার বাড়ি নগরীর পাহাড়তলী থানার কাজীর দিঘি এলাকায়।

এদিকে বাদির পক্ষে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন এর পক্ষে অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান ও গোলাম মাওলা মুরাদসহ প্যানেল আইনজীবীরা।

অভিযোগের বাদি কন্যা শিশুটির মা মোছাম্মৎ বিবি ফাতেমা তার অভিযোগে জানান, শিশু কন্যা আবিদা সুলতানা আয়নী পাহাড়তলী কাজীর দীঘি (সাগরিকা রোড়) এলাকার একটি বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী। তারা মা-বাবা দুজনেই পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। কয়েকদিন আগে ভুক্তভোগী শিশু তার মাকে জানায়, স্কুলের এক বান্ধবী বিড়াল ছানা কিনেছে। ওই সময় সে মাকে অনুরোধ করে, তাকেও একটি বিড়াল ছানা কিনে দেওয়ার। মা তাকে বেতন পেলে কিনে দেবে বলে আশ্বাস দেয়। সে তখন মাকে বলে রাস্তায় যে তরকারি বিক্রেতা আছে, তাকে বিড়াল ছানা এনে দেবে বলেছে। এরপর মা তার কাছে যেতে বারণ করে। এ ঘটনার কয়েকদিন পর ২১ মার্চ শিশুটি স্কুলে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। এরপর সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনার দিন এবং তার আগের দিন ভুক্তভোগীকে মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তি রুবেলের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এরপর থেকে গত ৮ দিন ধরে শিশু আয়নীর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে পাহাড়তলী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।

শিশুটির মা আরও অভিযোগ করেন, পুলিশ আসামি রুবেলকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। অপহরণের পর থেকে আসামি তার বেশভূষা পরিবর্তন করে এলাকায় অবস্থান করছে।

এদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে পাহাড়তলী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা একটি অপহরণের সাধারণ ডায়েরি পেয়েছি। তদন্তের কাজে সত্যতা নিশ্চিত করতে অনেক ব্যক্তিকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রকৃত অপরাধী না হলে ছেড়ে দিই। পুলিশ প্রকৃত অপরাধীকে ধরার চেষ্টা করছে। সিসিটিভি আমরা দেখেছি। আর আইনি প্রক্রিয়ায় যা করার আমরা করছি। এখনো পর্যন্ত আমরা অপরাধীকে শনাক্ত করতে পারিনি।

মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান বলেন, ‘শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছে দশ দিন। অপহরণের দিন সিসিটিভিতে স্পষ্ট দেখা যায় যে অভিযুক্ত ব্যক্তির সাথে আয়নী কথা বলছে। পুলিশ কি সিসিটিভি দেখে না? সিসিটিভি দেখে অপরাধী শনাক্তের চেষ্টা করলে অভিযুক্ত ব্যক্তি কিভাবে ছাড়া পায়? এমন অবহেলা হলে তো অপরাধীরা সুযোগই পাবে।’