৩৫ শতাংশ কাজ শেষ

চমেক হাসপাতালের ‘ক্যান্সার ভবন’

নিজস্ব প্রতিবেদক »

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতাল (চমেক) হাসপাতালে ১৫ তলা বিশিষ্ট ক্যান্সার ভবনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে ৩৫ শতাংশ অবকাঠামো নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বছরের শুরুতেই ৭তলা পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন করা হবে। তারপরেই ক্যান্সার চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু হবে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী রাহুল গুহ বলেন,‘চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অর্থের সংকট দেখা দেয়। অবকাঠামোর কাজ চলছিলো ধীরগতিতে। চলতি মাসে প্রকল্পে অর্থ আসতে শুরু করায় দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে ৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এই প্রকল্পের টেন্ডার হয় ২০১৮ সালে। তখনকার দাম আর বর্তমান দামের পার্থক্য অনেক। যার কারণে আগের বাজেট নিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। বাজেট বাড়ানো হয়েছে। একই সাথে ২০২২ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তার মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে। আশা করি এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে।’

এর আগে, চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি সুপ্রভাত বাংলাদেশ পত্রিকায় ‘অর্থ সংকটে আটকা ক্যান্সার ভবনের কাজ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়- ১৮০ শয্যা ক্যান্সার ইউনিট, ৫০টি ডায়ালাইসিস মেশিনসহ ১৬৫ শয্যার কিডনি ইউনিট এবং ১১৫ শয্যার কার্ডিয়াক রোগীর সেবা দিতে ১৫ তলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। ২০২২ সালের জুনে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অর্থ সংকটে শেষ হয়নি। মাত্র ২৭ শতাংশ কাজ শেষ করার দাবি করা হলেও দৃশ্যত হয় শুধু এক তলার একটি নির্মাণাধীন ভবন। যদিও এর নিচের দুই তলার বেইজম্যান্টের অবকাঠামোগত কাজ শেষ হয়েছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রামসহ ৮টি বিভাগীয় শহরের (ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও খুলনা) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একশ শয্যার একটি করে ক্যান্সার ইউনিট স্থাপনে এ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৯ সালে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে গণপূর্ত বিভাগ। চমেক হাসপাতালের প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩৮৮ কোটি ২৯ লক্ষ ৮১ হাজার। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের সময়সীমা ধরা হয়েছে। কিন্ত ২০২৪ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বাড়াতে আবেদন জানানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। একই সাথে বাজেট বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। ভবনটির ২ বেইসমেন্ট ১৫ হাজার ৫৫০ বর্গফুট, নিচ তলা ১৬ হাজার বর্গফুট, দি¦তীয় তলা ১৪ হাজার ৯৪২ বর্গফুট, তৃতীয় তলা ১৬ হাজার ৯৬ বর্গফুট। এছাড়া চতুর্থ তলা ১৬ হাজার ৯৬ বর্গফুট, পঞ্চম থেকে পনের তলা ১৪ হাজার ৮৮৬ হাজার বর্গফুটসহ ১৭ তলা বিশিষ্ট ভবনটি সর্বমোট ২ লক্ষ ৬০ হাজার বর্গফুটের।

আরও জানা যায়, ভবনটিতে বেইসমেন্ট দ্বিতীয় থেকে সপ্তম তলায় ১৮০ শয্যা বিশিষ্ট ক্যান্সার ইউনিট থাকবে। অষ্টম থেকে এগারো তলাতে ১৬৫ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস এবং বারো তলা থেকে পনের তলা পর্যন্ত ১১৫ শয্যার কার্ডিয়াক ওয়ার্ড করা হবে। এছাড়া ভবনটিতে ৯ টি লিফট, ১৫০০ কেভিএ সম্পন্ন ২ টি সাব-স্টেশন, ৫০০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন অটো জেনারেটর, ফায়ার হাইড্রেন্ট, এয়ার কুলার, ১০০ কিলোওয়াটের সোলার সিস্টেম, সিওয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, গভীর নলকূপ, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং, মেডিক্যাল গ্যাস সিস্টেম, এপ্রোচ রোড, এবং কম্পাউন্ড ড্রেইন থাকবে।

কাজ এগিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন,‘ চট্টগ্রামে ক্যান্সার চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে সীমিত পরিসরে। আমরা চেষ্টা করছি প্রথম ৭ তলার কাজ দ্রুত শেষ করতে। এখানে ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হবে। দ্রুত কাজ শেষ করে ক্যান্সার রোগীদের আধুনিক চিকিৎসা দেওয়া হবে। আশা করছি আগামী বছরের শুরুতে ক্যান্সার ভবনের ১ম তলা থেকে ৭ম তলা পর্যন্ত কাজ শেষ হবে। তারপরে বাকি ওয়ার্ডের কাজও দ্রুত শেষ করা হবে।’