আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর মৃত্যুবার্ষিকী আাজ

সংবাদদাতা, আনোয়ারা »

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু’র ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৪ নভেম্বর। এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুবার্ষিকী সামনে রেখে অক্টোবরের শুরু থেকে আনোয়ারা-কর্ণফুলীতে শুরু হয়েছে নানা আনুষ্ঠানিকতা। ব্যানার-পোস্টারে শ্রদ্ধা নিবেদনে ভরে গেছে আনোয়ারা-কর্ণফুলীর জনপদ।

আনোয়ারার হাইলধরে মরহুমের গ্রামের বাড়িতে তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি, খতমে কুরআন, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, আনোয়ারা উপজেলা পরিষদ, বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ।

আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ১৯৪৫ সালে আনোয়ারা উপজেলার হাইলধর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা নুরুজ্জামান চৌধুরী ছিলেন আইনজীবী। তাঁর মাতার নাম খোরশেদা বেগম। তিনি স্বনামধন্য শিল্পপতি বোয়ালখালী উপজেলার মরহুম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর দ্বিতীয় কন্যা নুর নাহার জামানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আখতারুজ্জামান চৌধুরী ১৯৫৮ সালে পটিয়া হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ঐ বছরই ঢাকা নটরডেম কলেজে ভর্তি হন। ইন্টারমিডিয়েট ক্লাসে পড়ার সময় তিনি বৃত্তি পেয়ে আমেরিকার ইলিনয় ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে ভর্তি হন। পরে তিনি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনে পড়াশোনা করেন। ওখান থেকে অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি অর্জন করে ১৯৬৪ সালের ডিসেম্বরে দেশে ফিরেন। দেশে এসে ১৯৬৫ সালে ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৬৭ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৬৮ সালে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সদস্য নির্বাচিত হন।

তিনি সত্তরের সাধারণ নির্বাচনে আনোয়ারা ও পশ্চিম পটিয়া থেকে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার পর তিনি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ পদে বহাল ছিলেন। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসন থেকে চারবার- ১৯৭০, ১৯৮৬, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আখতারুজ্জামান চৌধুরী আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর স্ত্রী, তিন ছেলে ও তিন মেয়ে আছে। তিন ছেলের মধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বর্তমান সরকারের ভূমিমন্ত্রী, আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি এবং আসিফুজ্জামান চৌধুরী জিমি পারিবারিক ব্যবসা বাণিজ্য দেখাশুনা করেন।

আখতারুজ্জামান বাবু ১৯৭৭ সাল থেকে আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম (দক্ষিণ) এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সংসদের পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি ছিলেন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), জনতা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ও আরামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এছাড়া ফেডারেশান অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) এর সভাপতি, দুইবারের জন্য চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (সিসিসিআই)-এর নির্বাচিত সভাপতি, প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে গ্রুপ-৭৭ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সহ-সভাপতি এবং ও আই সিভুক্ত দেশসমুহের চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

উল্লেখ্য, আখতারুজ্জামান বাবু একটি সফল অধ্যায় শেষ করে ২০১২ সালের ৪ নভেম্বর কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।