৮০০ কনটেইনার আপেল ডেলিভারি নিচ্ছে না ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক :
আপেল ভর্তি ৮০০ কনটেইনার পড়ে আছে বন্দর ইয়ার্ডে। করোনায় বাজারে দাম কমে যাওয়ায় আমদানিকারক ডেলিভারি নিচ্ছে না আপেল। বন্দর কর্তৃপক্ষ এসব হিমায়িত কনটেইনারে (রেফার কনটেইনার) বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে ঠিক রাখছে মাসের পর মাস। কিন্তু কতোদিন? এসব কনটেইনার এখন নিলামে তোলার উদ্যোগ নিচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, বন্দরে রেফার কনটেইনার রাখার পয়েন্ট রয়েছে ১৬০০টি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে করোনার কারণে কনটেইনার ডেলিভারি কমে যাওয়ায় আরো এক হাজার পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। এখন ২৬০০ রেফার কনটেইনার রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব কনটেইনারের কারণে বন্দরে জটের সৃষ্টি হলেও ডেলিভারি নেয়া হচ্ছে না। এতে বিপাকে পড়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
প্রতিদিন জাহাজে করে আসছে রেফার করটেইনার। এসব কনটেইনারে রয়েছে বিভিন্ন পচনশীল দ্রব্য পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হিমায়িত মাছ, আপেল, কমলা, আঙ্গুর, মাল্টা, বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও গরমে নষ্ট হয়ে যায় এসব পণ্য। এখন বন্দরের ইয়ার্ডে জায়গা না থাকায় রেফার কনটেইনার নিয়ে জাহাজ ভাসছে নদী-সাগরে। এই অবস্থায় বন্দরের ইয়ার্ডে জমে থাকা কনটেইনার ১৬ মে মধ্যে ডেলিভারি না নিলে চারগুণ স্টোররেন্ট (মাশুল) আদায় করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
ইয়ার্ডে থাকা বেশিরভাগ পণ্যের মধ্যে কী রয়েছে জানতে চাইলে বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের এক সদস্য জানান, ৮০০ কনটেইনারে রয়েছে আপেল। সম্ভবত বাজারে আপেলের দাম কম থাকায় আমদানিকারকরা আপেলগুলো ডেলিভারি নিচ্ছে না। যদি ডেলিভারি না নেয় তাহলে আমরা তা নিলামে বিক্রি করে দেয়ার ব্যবস্থা নেবো।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ফল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘এসব আপেলের বেশিরভাগ দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিল থেকে এসেছে। কিন্তু করোনার কারণে বিমান চলাচল স্বাভাবিক না থাকায় আপেলের আমদানি কাগজপত্র এখনো আসতে পারেনি। তাই এগুলো বন্দর থেকে ডেলিভারি নেয়া যাচ্ছে না।’
বাজারে আপেলের দাম কম থাকায় ডেলিভারি নিচ্ছে, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বাজারে আপেলের দাম কমে গেছে সত্যি। ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে। কিন্তু কেউ ইচ্ছে করে ডেলিভারি নিচ্ছে না কথাটি সত্য নয়।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, ৩০ দিনের বেশি কোনো পণ্য বন্দরের ইয়ার্ডে থাকলে বন্দর কর্তৃপক্ষ তা নিলামে তুলতে পারবে। নিলামকৃত দর দিয়ে বিদ্যুৎ বিলের টাকা পরিশোধ করা হবে।
উল্লেখ্য, বাজারে এখন প্রতিকেজি আপেল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে। করোনায় মাল্টার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মানুষ আপেল কম খাচ্ছে। আর এসব মালামাল নিজের গুদামে রাখলেও বিদ্যুৎ বিল আসবে অনেক টাকা। এর চাইতে বন্দরের ইয়ার্ডে থাকলে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি কম। বাজারে দাম বাড়লে ডেলিভারি নিয়ে বিদ্যুৎ বিলের টাকা পরিশোধ করা যাবে। এতে ব্যবসায়ীদের গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত হবে বন্দর।