লোকাল ট্রেনগুলো চালু হবে কবে

১৯৩১ সালের দিকে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইন চালু হয়। তখন ৬ জোড়া ট্রেন চলাচল করত এই রুটে। দোহাজারী থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত দক্ষিণ চট্টগ্রামের ১২টি স্টেশনে প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী রেলসেবা পেতেন। পরে পর্যায়ক্রমে রুটটিতে কমতে থাকে ট্রেনের সংখ্যা। ট্রেনের সংখ্যা ৯০ দশকের দিকে এক জোড়ায় এসে ঠেকে। তবে যাত্রীদের দাবির মুখে ২০১৮ সালে আবারও এক জোড়া ট্রেন চালু করা হয়। পরে ২০২১ সালে যুক্ত হয় এক জোড়া ডেমু ট্রেন।
কভিডকালে ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল থেকে একই সঙ্গে ডেমু ও লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছিল। পরে একই বছরের ১৯ আগস্ট দুই জোড়া ট্রেন পুনরায় চালু করা হলেও পরে ২০২৩ সালে কালুরঘাট সেতু মেরামতের জন্য তা বন্ধ করা হয়। এখন পর্যন্ত লোকাল ট্রেন আর চালু হয়নি।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম- দোহাজারী রেলপথকে কক্সবাজার পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ নামে প্রথম বাণিজ্যিক ননস্টপ আন্তনগর ট্রেন চলাচল শুরু করে। সর্বশেষ গত ১০ জানুয়ারি থেকে যুক্ত হয় ‘পর্যটক এক্সপ্রেস’ নামে আরও এক জোড়া নতুন আন্তনগর ট্রেন। সঙ্গত কারণে এ দুটি ট্রেন মাঝখানে আর কোনো স্টেশনে থামে না।
পটিয়া, চন্দনাইশ ও বোয়ালখালী এলাকার অনেক মানুষ চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন, যাঁরা নিয়মিত গ্রাম থেকে যাতায়াত করেন। অনেক শিক্ষার্থীকেও নগরের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। এছাড়া দোহাজারীতে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির চাষাবাদ হয়। এসব শাকসবজি ট্রেনে করে চট্টগ্রাম নগরে বিক্রির জন্য কম খরচে নিয়ে যেতেন কৃষক ও পাইকারেরা। ট্রেন চালু থাকলে তাঁরা কম খরচে ভোগান্তি এড়িয়ে যাতায়াত করতে পারতেন।
এদিকে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চালু হতে যাচ্ছে এই রুটে লোকাল ট্রেন। প্রস্তাবিত কমিউটার ট্রেনটি চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছেড়ে ষোলশহর, জানআলী হাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ ও রামু স্টেশন থেকে যাত্রী ওঠানামা করাবে। সর্বশেষ ট্রেন গিয়ে থামবে পর্যটন নগরী কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনে।
এটি ফেব্রুয়ারি থেকে চালু হওয়ার কথা থাকলেও মার্চের মাঝামাঝিতে এসেও চালু হয়নি। কিন্তু এই কাজটি অগ্রাধিকার তালিকায় হওয়া উচিত ছিল। কারণ কালুরঘাটের একটি সেতুর কারণে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিপুল সংখ্যক মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দীর্ঘ সময় ধরে। দ্বিতীয়ত রেলওয়ের মতো গণমুখী, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থাকে যেকোনো মূল্যে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। কাজেই আমরা চাই দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ দেশের সব লোকাল ট্রেনগুলো পূর্ণমাত্রায় সচল হোক।