রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক গাছ বোঝাই ট্রাকে গুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি »

রাঙামাটি থেকে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া গাছ বোঝাই ট্রাকে ২৫ থেকে ৩০ রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। গতকাল বুধবার বেলা ১২টার দিকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের রাঙামাটি শহরের খুব কাছেই দেপ্প্যাছড়ি নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে রাঙামাটি পুলিশ। যে গাড়িতে গুলিবর্ষণ করা হয় সেই গাড়ির নম্বর চট্ট মেট্রো ১১-০৮৩৭।

ট্রাক চালক জানিয়েছেন, গাছ বোঝাই ট্রাকে পাহাড় থেকে অতর্কিত কে বা কারা গুলিবর্ষণ করে। পরে অস্ত্রসহ কয়েকজন সড়ক ধরে আবার পাহাড়ি পথ ধরে চলে যায়।
রাঙমাটি ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দিনের বেলায় এভাবে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে সন্ত্রাসীরা ট্রাকে গুলি করে চলে গেল। তাহলে আমাদের শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা কোথায়। এভাবে চলতে থাকলে কোন গাড়ি সড়কে চালাব না আমরা।’

রাঙামাটি কাঠ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক শাওন ফরিদ এই প্রসঙ্গে বলেন ‘আমার প্রায় তিন বছর ধরে কোন গ্রুপকে চাঁদা দিচ্ছিনা। চাঁদা না দেয়ার কারণে আঞ্চলিক বিভিন্ন দলের নামে আমাদের কাছে চাঁদা চাওয়া হয়, কিন্তু আমরা চাঁদা দিচ্ছিনা কাউকে। এই কারণেই হয়ত আমাদের কাঠ পরিবহন করা একটি ট্রাকে গুলি করেছে এদের কেউ। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছি আমরা। আমরা আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চাই এবং স্বাভাবিক ব্যবসা করার নিশ্চয়তা চাই। এভাবে দিনেদুপুরে দেপ্যছড়ির মত জায়গায় যদি গুলি করে চলে যায় তাহলে তো এর নেতিবাচক প্রভাব পাহাড়ের ব্যবসাবাণিজ্য পর্যটন সবকিছুতেই পড়বে।’

রাঙামাটির কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আরিফুল আমিন বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় কয়েক জনের সাথে কথা বলেছি। যতটুকু জেনেছি গাড়িতে মোট ২৫-৩০টি গুলি বর্ষণ করেছে ‘সন্ত্রাসীরা’।

প্রাথমিকভাবে ধারণা হচ্ছে ভয়ভীতি দেখানোর উদ্দেশ্যে এই ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ আরও তদন্ত করবে। পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।

প্রসঙ্গত, রাঙামাটি থেকে প্রতিদিনই বেশ কিছু ট্রাক ছেড়ে যায় রাজধানীসহ সারাদেশের উদ্দেশ্যে। এসব ট্রাকে পরিবহন করা হয় পাহাড়ের মূল্যবান সেগুনসহ নানান প্রজাতির গাছ। সচরাচর পাহাড়ে সক্রিয় প্রতিটি আঞ্চলিক দলের সশস্ত্র ইউনিটকে গাছ বাগান থেকে কাটা থেকে পরিবহন পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়েই নির্ধারিত হারে চাঁদা দিয়েই এইসব কাঠ পরিবহন ও ব্যবসা পরিচালিত হত যুগের পর যুগ। কিন্তু গত তিন বছর ধরে প্রশাসনের চাপের মুখে ব্যবসায়ীরা চাঁদা প্রদান থেকে সরে আসে। কোন একটি পক্ষ ভীতি প্রদর্শন করে ফের চাঁদা চালুর জন্য এই হামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করছেন কাঠ ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টরা।