মুখরোচক খাদ্যাভাসেই হৃদরোগীর সংখ্যা বাড়ছে

সংবাদ সম্মেলনে ৯ প্রস্তাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক »

চট্টগ্রামে হৃদরোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ঢাকায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটসহ মোট ৭ টি বিশেষায়িত হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র থাকলেও চট্টগ্রামে একটিও নেই। শুধুমাত্র সরকারিভাবে চমেক হাসপাতালে হৃদরোগীর চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। ফলে রোগীদের বিরাট একটি অংশ বেসরকারি নতুবা ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। তাই চট্টগ্রামে একটি আলাদা বিশেষায়িত সরকারি হৃদরোগ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ ৯ প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার দুপুরে চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের ডা. সন্দ্বীপ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব প্রস্তাবনা পাঠ করেন বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ হাইপারটেনশন এবং হার্ট ফেইলিউর ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার দাশ। ইন্টারন্যাশনাল কার্ডিওভাসকুলার কনফারেন্স উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে নানা মুখরোচক খাদ্যাভাসের জন্য হৃদরোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্ত সে তুলনায় সরকারি ভাবে চিকিৎসা সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। ঢাকায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটসহ মোট ৭ টি বিশেষায়িত হৃদরোগ চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে। কিন্ত চট্টগ্রামে শুধু চমেক হাসপাতালে সরকারিভাবে হৃদরোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়। হৃদরোগীদের বিরাট অংশকে সরকারি চিকিৎসা সেবার আওতায় আনতে বিশেষায়িত সরকারি হৃদরোগ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা জরুরি। এছাড়া হৃদরোগীদের চিকিৎসা প্রসারিত করতে চমেক হাসপাতালে জনবল নিয়োগ, বিশ্ব হার্ট দিবসকে জাতীয় দিবস ঘোষণা, হৃদরোগ বিষয়ক জনসংখ্যাভিত্তিক গবেষণা কাজ জোরদার করাসহ ৯টি প্রস্তাবনা দেন তিনি।

সম্মেলনে আরও জানানো হয়, চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো দুদিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক হৃদরোগ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ দেশ বিদেশের পাঁচ শতাধিক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ প্রায় ৭০০ জন অংশগ্রহণ করবেন। ১৬ ও ১৭ জুন হাটেল রেডিসন ব্লুর মোহনা হলে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা এ সম্মেলনে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন, অভিজ্ঞতা বিনিময় ও নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে তাদের প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন।
সম্মেলনে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি, করণীয়, প্রতিকার, প্রতিরোধ এবং আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন অধিবেশন পরিচালিত হবে। এছাড়া স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভারতের দিল্লি এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের ক্যাথল্যাব থেকে জটিল গুরুত্বপূর্ণ হৃদরোগ ইন্টারভেনশনাল চিকিৎসা পদ্ধতি দেখানো হবে।

ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ইসমাইল খান। বিশেষ অতিথি থাকবেন চমেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান, বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির সভাপতি এ কে এম মহিবুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল্লাহ আল সাদি মজুমদার, বাংলাদেশ সোসাইটি অব কার্ডিওভাস্কুলার ইন্টারভেনশনের সভাপতি ডা. ফজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ডা মীর জামাল উদ্দিন, বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান, সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামের হৃদরোগের বাস্তবতা বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ হাইপারটেনশন এবং হার্ট ফেইলিউর ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার দাশ।

বাংলাদেশ হাইপারটেনশন এবং হার্ট ফেইলিউর ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল হোসেন শাহীনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও চট্টগ্রাম সোসাইটি অব ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজির সভাপতি ডা. আশিষ দে, সাধারণ সম্পাদক ডা. আনিসুল আউয়াল, ডা রেজোয়ান রেহান, বিপ্লব ভট্টাচার্য।

এতে উপস্থিত ছিলেন ডা. ইব্রাহিম চৌধুরী, ডা. সালেহ উদ্দিন সিদ্দিকি উজ্জ্বল, ডা. নুরুদ্দিন জাহাঙ্গীর, ডা. সাগর চৌধুরী, ডা রাজিব দে, বিধান রায় প্রমুখ।