আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করে তারা কাকে ক্ষমতায় আনতে চায়: বামপন্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ সম্মলনে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা

সুপ্রভাত ডেস্ক »

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বামপন্থী দলগুলোর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করে তারা কাকে ক্ষমতায় আনতে চায়। তিনি বলেন, ‘বামপন্থীরা ৯০ ডিগ্রি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তারা আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। কিন্তু তারা কি নির্ধারণ করতে পারবে এরপর কে আসবে? এটা আমার প্রশ্ন। কে ক্ষমতায় আসবে, আর কে দেশের জন্য কাজ করবে? কিন্তু তারা কাকে আনতে চায় তা স্পষ্ট নয়।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এসময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বামপন্থীরা কাকে পরবর্তীতে ক্ষমতায় আনতে চায় তা যেহেতু পরিষ্কার নয়, তাই তারা কেউই জনগণের কাছ থেকে সাড়া পান না।

এর আগে গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, অতি ডান অতি বাম এক হয়ে সরকার উৎখাত করতে চায়। তার সেই মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।

জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, কারা আসবে, কে আসবে ক্ষমতায়। কে দেশের জন্য কাজ করবে, কাকে তারা আনতে চায়। সেটা কিন্তু স্পষ্ট নয়। আর সেটা স্পষ্ট নয় বলে তারা জনগণের সাড়া পাচ্ছে না। আন্দোলন করে যাচ্ছে বিদেশে বসে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। প্রতিদিন অনলাইনে আন্দোলন–সংগ্রাম করে যাচ্ছে, নির্দেশ দিয়েই যাচ্ছে। যারা আন্দোলন করছে করুক, তাদের তো বাধা দিচ্ছি না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, আমার শক্তি জনগণ। জনগণ যত দিন চাইবে ক্ষমতায় থাকব। মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। এ জন্য যত চক্রান্ত আর বাধা আসুক আমরা বিজয় নিয়ে আসি। এখানে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটছে।

উপজেলা নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের স্বজনদের নির্বাচন অংশ না নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চেয়েছি নির্বাচন যাতে প্রভাবমুক্ত হয়। মানুষ যাতে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে, এ জন্য বলেছি। তার মানে এই নয় যে এক জায়গায় ছেলেকে, আরেক জায়গায় স্ত্রীকে- এটা তো হয় না। কর্মীদেরও সুযোগ দিতে হবে। এটাই বলতে চেয়েছি।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে আমেরিকায় ছাত্র বিক্ষোভ দমনের পুলিশের পদক্ষেপের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয়, আমাদের পুলিশ আমেরিকার পুলিশের স্টাইল বা ধরন অনুসরণ করে আন্দোলন দমন করতে পারে। আমাদের পুলিশকে যদি বলে দিই যে আমেরিকার পুলিশ যেভাবে আন্দোলন থামায়, সেটা অনুসরণ করতে পারো।

তিনি আরও বলেন, কারণ, আমরা তো ধৈর্য ধরতে বলেছিলাম। সেই ২৮ অক্টোবরের কথা মনে আছে, ২০২৩ সালে। আমি তো বলেছিলাম পুলিশকে ধৈর্য ধরতে। ধৈর্য ধরতে গিয়ে পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তাদের হাসপাতালে আক্রমণ করেছে। গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। কাজেই আমার মনে হয়, এখন আমাদের পুলিশ আমেরিকার স্টাইলে আন্দোলন দমানোর ব্যবস্থাটা নিতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমারের সেনাসদস্যদের আশ্রয় নেওয়ার বিষয়েও সাংবাদিকেরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করেন। সাংবাদিকেরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, মিয়ানমারের সঙ্গে থাইল্যান্ডের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কিনা। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে আগতদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি দেখবেন বলে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। তিনি বলেছেন, গভীরভাবে তিনি বিষয়টি দেখবেন। মিয়ানমারের বিষয়টি নিয়ে তারাও উদ্বিগ্ন। মিয়ানমারের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।