মহাসড়কের পাশে জঙ্গল অপরাধের নিরাপদ আখড়া

খুন করে ফেলে দিচ্ছে ঝোপে ও হাত বদল হচ্ছে ইয়াবার চালান

বিকাশ চৌধুরী, পটিয়া :

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহাসড়কের পটিয়া এলাকায় দুই পাশে ঝাড়ের জঞ্জালে ভরে গেছে। এসবের কারণে রাতে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। খুন করে লাশ ফেলে দেওয়া হচ্ছে ঝোপঝাড়ে ও হাত বদল হচ্ছে ইয়াবার ছোটখাট চালান। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) কর্তৃপক্ষ সড়কের দুইপাশের ঝোপঝাড় পরিস্কার না করার কারণে বর্তমানে অপরাধীদের নিরাপদ স্থান হয়েছে। প্রায় সময় সড়কের পাশের নির্জ্জন এলাকাতে ছিনতাইও হচ্ছে। গত ১৭ অক্টোবর উপজেলার হরিণখাইনের চিটাগাং আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ এলাকায় রাস্তার পাশের ঝোপঝাড়ের জঞ্জাল থেকে মো. নবী হোসেন (২৭) নামের এক প্রবাসীর রগ কাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানাধীন পুরানচর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের পুত্র। পুলিশের ধারণা- অপরাধীচক্র প্রবাসীকে অন্য জায়গায় খুন করে মহাসড়কের পটিয়া এলাকায় ফেলে দিয়েছে। দুই পায়ের রগ কাটা লাশ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে রক্ত পর্যন্ত ছিল না। একইভাবে ৩ অক্টোবর (শনিবার) উপজেলার আমজুরহাট এলাকায় মহাসড়কের পাশের একটি পুকুর থেকে অজ্ঞাতনামা একব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় স্থানীয়রা ধারণা করেন- পরিকল্পিতভাবে অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তিকে খুন করে ঝোপঝাড়সহ রাস্তার পাশের একটি পুকুরে ফেলে দিয়েছে। পুলিশ প্রায় একমাসেও কোন ক্লু বের করতে পারেনি। হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর অবহেলার কারণে পটিয়াতে মহা সড়কের দুইপাশে ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। উপজেলার ভেল্লাপাড়া থেকে শুরু করে মনসাসহ  বিভিন্ন জায়গায় বর্তমানে ঝাড়ের জঞ্জাল দেখা যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ ইয়াবার চালান কক্সবাজার থেকে সড়ক পথে পাচারের সময় নির্জ্জন এলাকায় হাত বদল হয়ে থাকে। মহা সড়কের দুইপাশের ঝোপঝাড় পরিস্কার করার কোন উদ্যোগ না নেওয়ার কারণে খুন করে সড়কের পাশে ফেলে দেওয়া হচ্ছে বলে থানা পুলিশের দাবি। ফলে পুলিশ প্রশাসনও বিব্রত। কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিণখাইন এলাকার উপজেলা যুবলীগ নেতা ইউছুপ খাঁন জানিয়েছেন, ভেল্লাপাড়া থেকে শুরু করে মহা সড়কের পটিয়ার বিভিন্ন এলাকায় এখন অপরাধ হচ্ছে। সড়কের পাশে ঝোপঝাড় থাকার কারণে নিয়মিত অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানিয়েছেন, সম্প্রতি মহা সড়কের পাশ থেকে দু’টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অন্য জায়গায় খুন করে গাড়িতে করে এনে তা পটিয়াতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। পরকীয়া করে প্রবাসী নবী হোসেন বিয়ে করার কারণে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়। এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা রেকর্ড হয়েছে।  ইতোমধ্যে আসামী গ্রেফতার করার পর স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন। পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, মহা সড়কের দুইপাশে ঝোপঝাড় পরিস্কারের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) কে শীঘ্রই একটি চিঠি পাঠানো হবে। এসবের কারণে অপরাধীরা বিভিন্ন স্পটকে নিরাপদ মনে করছে। সড়কের পাশের জঞ্জাল দ্রুত পরিস্কার করা দরকার।