ভেজাল প্রতিরোধে কঠোর-কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে

এবার নগরের মেহেদীবাগ এলাকার শহীদ মির্জা লেনের নূর ভিলায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণে নকল ও অনুমোদনহীন ওষুধসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় নকল ওষুধ রাখার দায়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো. আহসানুল কবির ও সুলতানা রাজিয়া (৩৫)। অভিযানে জব্দ করা নকল ওষুধের মধ্যে রয়েছে নার্ভ ডিএক্স, ফেয়ার সোপ, ভিরোজেল, ভিরোকন, ভিএইচ লোশন, ইউনি বাইন, ইউনি ডি ত্রি, জে ওয়ানসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৫ লাখ টাকা।
বুধবার ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও পুলিশের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। নকল ও ভেজাল ওষুধ মজুদ ও সরবরাহ এবং আভিযানিক টিমের সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অপরাধে মো. আহসানুল কবিরকে দোষী সাব্যস্ত করে ওষুধ ও কসমেটিকস আইন, ২০২৩ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় যথাক্রমে মোট ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং রাজিয়া সুলতানা নামে এক মহিলাকে একই আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মোট দুই লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ সময় রাজিয়া সুলতানা জরিমানা পরিশোধ না করায় সাজা পরোয়ানামূলে তাকে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
আটা-ময়দা-কেমিক্যাল বা যখন যা ইচ্ছা তা প্রভৃতি মিশিয়ে তৈরি করা নকল ওষুধ রোগ সারানোর বদলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে রোগীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। লিভার, কিডনি, ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের নকল ওষুধ ক্রয় করে মানুষ কীভাবে প্রতারিত হচ্ছে, তা বারবার গণমাধ্যমে এসেছে। দুঃখজনক হলো, ক্ষতিকর জেনেও বেশি লাভের আশায় কিছু ব্যবসায়ী নকল ওষুধ বিপণনে সহায়তা করে থাকে। নকল ওষুধ বিপণনে যারা সহায়তা করে থাকে, বিন্দুমাত্র মানবিক গুণাবলিও নেই তাদের মধ্যে। এসব অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার। নকল ওষুধের বিস্তার কতটা ঘটেছে, তাও খুঁজে বের করা দরকার। এদের চক্রটিকে শনাক্ত করে কঠিন সাজা দেওয়া উচিত। বিবেচনা করতে হবে নকল বা ভেজাল ওষুধ তৈরি এবং বিপণনের সঙ্গে জড়িতরা বড় ধরনের অপরাধ করছেন। এদের অপরাধ মানবহত্যার মতো গুরুতর। কাজেই এসব অপরাধীর শাস্তি হিসেবে শুধু জরিমানা আদায় করলেই হবে না। শাস্তির পাশাপাশি আর যেন কোনো ধরনের ব্যবসা করতে না পারে সে ব্যবস্থাও নিতে হবে। গণমাধ্যমে তাদের ছবি প্রকাশ করে তাদের চিনিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।