বিদেশে চিকিৎসারত নেতাকেও আসামি করা হয়েছে

সংবাদ সম্মেলনে ডা. শাহাদাত

চকবাজার থানায় ভারতে চোখের অপারেশন করতে যাওয়া বিএনপির এক নেতাকে ছাত্রলীগ কর্মীর করা মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল শনিবার সকালে নগরীর কাজীর দেউড়ির নসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ে মহানগর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমাদের তারুণ্যের সমাবেশ হয়েছে ১৪ জুন। আর চকবাজার থানায় ছাত্রলীগ কর্মীর করা মামলায় ৪৫ নম্বর আসামি করা হয়েছে মো. ইউসুফকে, অথচ তিনি তখন ভারতের চেন্নাইয়ে ছিলেন। তিনি ঢাকায় এসেছেন ১৫ জুন। মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ও প্রশাসন এসব গায়েবি মামলা করছে। অনৈতিকভাবে এসব মামলা করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঘরছাড়া, মাঠছাড়া করতে চায় সরকার। ঠিক যেভাবে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আমাদের ৫৫ জন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করা হয়েছিল। এই পুলিশি হয়রানি বন্ধ করা না হলে আমরা হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।

ডা. শাহাদাত বলেন, চট্টগ্রামে বিএনপির যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে কাজীর দেউড়ি মোড়ে তারুণ্যের সমাবেশ কর্মসূচি করার কথা ছিল ১১ জুন। কিন্তু যুবলীগ একইদিন পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করায় আমরা সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য আমাদের কর্মসূচি পিছিয়ে ১৪ জুন করি। এরপরও যুবলীগ আমাদের সমাবেশের দিন শান্তি সমাবেশের নামে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ করেছে। ওইদিন আমাদের সমাবেশে যোগদানের জন্য যুবদল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে আসার পথে চট্টগ্রাম কলেজের সামনে ও জামাল খান মোড়ে তারা হামলা চালিয়েনেতাকর্মীদের আহত করে। পরে উল্টো বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ, এম আই চৌধুরী মামুন ও যুবদল নেতা মোশারফ হোসেন, এমদাদুল হক বাদশাসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর নামে কোতোয়ালি ও চকবাজার থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকে পুলিশ চট্টগ্রামে গণগ্রেফতার শুরু করেছে। সেদিন রাতে সমাবেশ থেকে নিজ বাসায় ফেরার পথে মিরসরাইয়ে ছাত্রদল নেত্রী নাদিয়া নুসরাতকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শারীরিক হেনস্তা করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাকে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

জামালখানে ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির কেউ জড়িত ছিলো না দাবি করে শাহাদাত হোসেন বলেন, পুলিশের দায়ের করা মামলায় জামালখান মোড়ে ম্যুরাল ভাঙার অভিযোগ করা হয়। অথচ এ ঘটনার সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের কোনোরকম সম্পর্ক নেই। বরং এর আগের দিন মহানগর যুবলীগের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নিজেদের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি করে। এই মারামারি থেকেই বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়। মামলায় যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা কেউ যদি ওইদিন জামালখানে ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত এমন প্রমাণ থাকে, ভিডিও ফুটেজ থাকে, তাহলে আমরা সব দায় স্বীকার করে নেব।

তিনি বলেন, বুধবার রাতে চান্দগাঁওয়ের বাসা থেকে গ্রেফতার করা সাবেক ছাত্রদল নেতা নওশাদকে ফাঁসানোর জন্য এনায়েত বাজারের গোয়ালপাড়া থেকে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়। বাকলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শামীম ও জাহাঙ্গীরকে চকবাজার থানা পুলিশ ঘর থেকে ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেন্দ্রীয়বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি