ফুটপাত দখলমুক্ত হোক তবে হকারদের কথাও ভাবা হোক

এবার আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকাসহ আশেপাশের জায়গায় সড়ক ও ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা পাঁচ শতাধিক দোকানপাট ও স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এর মধ্যে বেশকিছু স্থায়ী কাঠামোও রয়েছে। এছাড়া ফুটপাতে চলে আসা বিভিন্ন দোকানপাটের বর্ধিত অংশও ভেঙে দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে অভিযান। জানা গেছে, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, কমার্স কলেজ রোড, বাদামতলী মোড়, সিজিএস বিল্ডিং এর সামনের রাস্তা, এক্সেস রোড, আগ্রাবাদ শিশুপার্ক রোড এবং মা ও শিশু হাসপাতালের সামনের রাস্তা ও ফুটপাতে অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানের বিষয়ে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ফুটপাত মানুষের হাঁটার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে, ব্যবসার জন্য নয়। ফুটপাতে ব্যবসা করলে মানুষ হাঁটবে কোথায়? তাই মানুষের হাঁটার ফুটপাতে কোনো হকার বসতে দেব না। ফুটপাত দখলমুক্ত করতে আমাদের যে অভিযান শুরু হয়েছে তা অব্যাহত থাকবে। একইসঙ্গে উচ্ছেদের পর পুনর্দখল ঠেকাতে মনিটরিং করা হবে।
এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম নগরে প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কে ফুটপাতের ওপর বসানো অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। সে সময় প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ অবৈধ স্থাপনা ও দোকান উচ্ছেদ করা হয় বলে জানা গেছে। সড়ক ও ফুটপাতের জায়গা দখল করে এসব স্থাপনা গড়ে উঠেছিল। তবে পুনর্বাসন ছাড়াই উচ্ছেদ শুরু করায় বিক্ষোভ করেছিল হকাররা। পুলিশের সঙ্গে সংঘাতেও জড়ায় তারা।
ফুটপাত দখলমুক্ত করতে সিটি মেয়র যে এখনো অটল তার উদাহরণ পাওয়া গেল আগ্রাবাদ এলাকায় পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযানে। মেয়রের এই অবস্থানকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন অধিকাংশ নগরবাসী। এদের মধ্যে আছেন দোকানমালিক, ফুটপাত ব্যবহারকারী, শিক্ষার্থী, নারী, শিশু ও বয়স্করা। অন্যদিকে হকাররা আন্দোলন করছেন পুনর্বাসন ছাড়া তাদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে। এদের একটি অংশ একটি নির্দিষ্ট স্থানে দোকানদারি করার সুযোগ চান। এদের অনেকেই মনে করছেন রমজানকে সামনে রেখে তাদের দাবি বিবেচনা করা হোক।
আমরা মনে করি ফুটপাত থেকে সড়কের অর্ধেকটা দখল করে দোকান বসানো কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। একটি নগরের সৌন্দর্যের সঙ্গে শৃঙ্খলার বিষয়টিও জড়িত। হকারদের জন্য নির্দিষ্ট স্থান, নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে দিলেও তারা তা মানেনি বেশিদিন। তারপরও মানবিক কারণে সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অনুরোধ জানাতে পারি হকারদের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে হলেও একটি বিকল্প ব্যবস্থা করা যায় কি না তা ভেবে দেখতে।