প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রাবিপ্রবি’র ভিসির সাথে ‘দুর্ব্যবহারের’ অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি »

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) ভিসির সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহারের’ অভিযোগে রাঙামাটি শহরের শাহ্ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অপসারণের দাবিতে রাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন।

গতকাল বুধবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে এসে এ বিক্ষোভ করেন।

রাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে তিন লক্ষ টাকা বরাদ্দের ভিত্তিতে শহরের মাঝেরবস্তি এলাকায় অবস্থিত শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের মালিকানাধীন রাবিপ্রবি’র অস্থায়ী আবাসিক হলটি সংস্কার করে দেয়ার কথা ছিল।

মঙ্গলবার বিকেলে রাবিপ্রবি ভিসি প্রফেসর ড. সেলিনা আক্তার হলের সংস্কার কাজ পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু কাজের মান ভালো না হওয়ায় তিনি শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমানকে ডেকে নিয়ে এর কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক ভিসি ম্যামের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। এ ঘটনায় আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের মাঠে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে এবং প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক ঘটনার পর প্রকাশ্যে ক্ষমা চাননি। তাই আমরা উনার দুর্ব্যবহারের জন্য জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে এসে বিক্ষোভ করছি এবং তাকে অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাবিপ্রবির ভিসি প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার বলেন, ‘আমরা শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ছাত্রাবাস ভাড়া নিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য হল হিসেবে ব্যবহার করি। হলটির বাথরুমের অবস্থা ভালো না হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ সংস্কারের দায়িত্ব নেয়। কিন্তু বাথরুমে ভালো টাইলস না লাগানো, শাওয়ার বা পুরনো কমোড ব্যবহার করার কারণ জানতে চাইলে তিনি আমার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। যাওয়ার পথে তিনি ছাত্রদেরও দেখে নেয়ার হুমকি দেন। এতে ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে’।

অভিযোগ বিষয়ে শাহ্ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ভিসি ম্যাম আমাকে ডেকে নেয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সামনে প্রধান শিক্ষক হিসেবে আমার কোন রুচিবোধই নেই বলে মন্তব্য করেন। এই মন্তব্য শোনার পরই আমি তাঁর রুম থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ভিসি ম্যামের উপস্থিতিতেই আমার উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে এবং আমাকে ভিসি ম্যামের কাছে ক্ষমা চাইতে বলে। কিন্তু আমি চলে আসি। আমি চলে আসার পরই ছাত্ররা আমার বিরুদ্ধে আপত্তিকর স্লোগান দিতে থাকে।’

এদিকে বিক্ষোভের পরে শিক্ষার্থীরা রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সাথে দেখা করেন এবং অভিযোগ জানিয়ে তাঁকে স্মারকলিপি প্রদান করেন। পরে জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আমলে নিবেন বলে জানান।

প্রসঙ্গত, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫ সাল থেকে ক্লাস শুরু হলেও এখনো নিজস্ব কোনো ছাত্রাবাস নেই। শহরের মাঝেরবস্তি এলাকায় শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে একটি ভবন ভাড়া নিয়ে সেখানে অস্থায়ী ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।