আকাশপথে আকাশছোঁয়া ভাড়া

উড়োজাহাজের ভাড়া এখন আকাশছোঁয়া উচ্চতায়। আকাশপথের যাত্রীরা চোখে সর্ষে ফুল দেখছেন। গত দেড় মাসে মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়ার মতো বিভিন্ন ব্যস্ত আন্তর্জাতিক রুটে বিমানভাড়া আবার উল্লম্ফন করে প্রায় করোনা মহামারিকালীন উচ্চ ভাড়ার পর্যায়ে চলে গেছে। সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায় ঢাকা-জেদ্দা রুটে বর্তমান ভাড়া দাঁড়িয়েছে ৭৫-৮০ হাজার টাকায়। অতচ দুই মাস আগেও যা ছিল সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা।
আকাশপথে ভ্রমণের চাহিদা বেড়েছে- ওমরাহ হজের পিক মওসুম, মালয়েশিয়ার শ্রম বাজার উন্মুক্ত হওয়া এবং আসন্ন ঈদের মওসুম এসব উপলক্ষে। আর এর ফলে বিমানভাড়াও বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে ট্রাভেল এজেন্ট ও রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর সূত্র।
তবে ভাড়া বৃদ্ধির পেছনে যেসব কারণ শনাক্ত করা গেছে, এগুলো তারমধ্যে অন্যতম। অন্যগুলো হলো- বিদেশি এয়ারলাইনগুলোর ফ্লাইটের সংখ্যা কমানো, কালোবাজারে উচ্চ দামের সুযোগ নিতে গড়ে ওঠা একটি টিকেট সিন্ডিকেট এবং বাংলাদেশ বিমানের উচ্চমূল্য নির্ধারণের ঘটনা।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস বাংলাদেশ (আটাব) এর মহাসচিব বিষয়টি নিয়ে বলেন, যখন বাংলাদেশ বিমান ভাড়া ভাড়ায়, তখন অন্যান্য এয়ারলাইনগুলোও ভাড়া বাড়িয়ে দেয় এবং এ বাড়ানোর কোনো সীমা নাই।
প্রধান প্রধান এয়ারলাইনের পাশাপাশি এয়ার এরাবিয়া, ফ্লাই দুবাই এবং সালাম এয়ারের মতোন বাজেট ক্যারিয়ার বলে পরিচিত সংস্থাগুলোও তাদের প্রিমিয়াম প্রতিযোগীদের চেয়ে মাত্র ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা কম নিচ্ছে।
অথচ সরকারের কাছে তাদের প্রজেকশন ছিল তারা বাংলাদেশ থেকে অন্যান্য ডেস্টিনেশনে অর্ধেক মূল্যে যাত্রী নিবে। কিন্তু, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কোনো মনিটরিং না থাকায় তারা ইচ্ছেমতো ভাড়া নিচ্ছে।
জানুয়ারি থেকেই পর্যায়ক্রমে টিকেটের দাম বাড়তে শুরু করে, এই অবস্থায় দীর্ঘযাত্রা করতে হলেও যাত্রীরা লেওভার বা কানেক্টিং ফ্লাইটের মতো সস্তা বিকল্পের দিকে ঝুঁকছেন।
আকাশপথে যাতায়াত ভাড়া বৃদ্ধির চড়া খেসারত দিচ্ছেন অভিবাসী শ্রমিকেরা। এতে তারাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী।
উচ্চ চাহিদাও ভাড়া বাড়ার আরেকটি কারণ। আবার ডলার সংকটের কারণে টিকিট বিক্রির মাধ্যমে করা আয় পাঠাতে না পারায় বাংলাদেশে ফ্লাইট সেবা প্রদানকারী অনেক বিদেশি এয়ারলাইন এখানে তাদের ফ্লাইটের সংখ্যা কমিয়েছে। সে তুলনায়, ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়িয়ে এই ঘাটতি সামাল দেওয়ার মতো সক্ষমতা নেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনের। কারণ তারা মোট ফ্লাইটের মাত্র ৮ শতাংশ পরিচালনা করে।
আকাশপথে যাতায়াতে উচ্চমূল্যের বিষয়টি খতিয়ে দেখে জরুরী ভিত্তিতে সরকারের করণীয় নির্ধারণ করা উচিত।