নির্ধারিত দাম না মানার প্রতিযোগিতা চলছে

রোজার আগে বাজারে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে চাল, চিনি, তেল ও খেজুরে শুল্ক-কর কমিয়েছিল সরকার। এরপরও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি। রমজান মাসকে ঘিরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। সরকার শেষে বাধ্য হয়ে গরুর মাংস, ছোলা, ব্রয়লার মুরগিসহ ২৯টি নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দেয়। কিন্তু তাতেও সুফল মিলছে না। দেখা যায়, আগের মতোই বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে বাজারে কোনো পণ্যই মিলছে না। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দর অর্ধেকে কমে এলেও অন্যান্য পণ্যের দাম কমেনি।
নগরের কাঁচাবাজারে ৪০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। দাম বেড়েছে মাছ-মাংসেরও। দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার নিত্যপণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও তা মানার ব্যাপারে কোনো আগ্রহ নেই বিক্রেতাদের। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আলু ২৮ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ২৮ টাকা, ফুলকপি ২৯ টাকা, বেগুন ৪৯.৭৫ টাকা, শিম ৪৮ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ২৩ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা।
বাজারে সব ধরনের ফলের দামই অনেক বেশি। বিশেষ করে রমজান মাস আসার পরই এসব ফলের দাম বেশি হয়েছে। যে আপেল রমজানের আগে বিক্রি হতো ২৪০-২৬০ টাকায় সেই আপেল রমজানের শুরু থেকেই বিক্রি হচ্ছে ৩৬০-৩৮০ টাকায়। এভাবে বাজারে থাকা সব ধরনের ফলের দামই এখন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। বেশির ভাগ ক্রেতা কেজি হিসেবে ফল না কিনে পিস হিসাবে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ।
এ পরিস্থিতিতে ত্যক্ত-বিরক্ত এক ক্রেতা সাংবাদিককে বলেন, বাজারে কোনো জিনিসের দাম স্থির থাকে না। আজ দেখে যাই এক দাম, কাল আসলে হয়ে যায় আরেক দাম। আমার কথা হচ্ছে- কোনো পণ্যের দাম বাড়লে সেটা তো পাইকারি মার্কেট থেকে খুচরা বাজারে আসতে দু-এক দিন সময় লাগে। তাহলে কোন দৈত্য রাতের মধ্যেই দোকানে স্টক থাকা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় জানতে চাই। রমজানে পৃথিবীর অন্যান্য মুসলিম দেশে পণ্যের দাম কমে, আর আমাদের দেশে পাল্লা দিয়ে প্রতিযোগিতা করে সব পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। সরকারের আসলেই কোনো নিয়ন্ত্রণই নাই বাজারে। সংবাদমাধ্যমে দেশের নীতিনির্ধারকদের কথা, আর বাজার পরিস্থিতিতে আকাশ-পাতাল পার্থক্য।
রমজানে চট্টগ্রামে সব পণ্যের অবাধ সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ৪০টি বাজার, মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং সিন্ডিকেট ও কালোবাজারি রোধে বাজার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)। তবে বাজারে অভিযানের কোনো প্রভাব পড়েছে বলে মনে হচ্ছে না।