দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর হবে অর্থনীতির গেম চেঞ্জার

বাংলাদেশের অর্থনীতির গেম চেঞ্জার হবে মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর। সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর না হওয়ায় যে আক্ষেপ মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর পুষিয়ে দেবে। মাতারবাড়ীকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলে শিল্পায়নের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১ নভেম্বর কক্সবাজারের মহেশখালীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দরের চ্যানেল উদ্বোধন ও টার্মিনালের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনালের নির্মাণকাজের দরপত্রের মূল্যায়নের কাজ প্রায় শেষ। এখন সরকারি অনুমোদন পেলে ঠিকাদার নির্বাচিত করা হবে। নির্বাচিত ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তির পরই শুরু হয়ে যাবে নির্মাণকাজ।
বাংলাদেশে প্রথম সমুদ্রবন্দর হওয়ার কথা ছিল কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপে। ২০১২ সালে সরকার সোনাদিয়া দ্বীপে গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রকল্প অনুমোদন দেয়। ২০১৬ সালে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার সময় ধরা হয়। অর্থায়ন করার আলোচনা চলছিল চীনের সঙ্গে। অবশ্য ২০১৪ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে নির্ধারিত সমঝোতা স্মারক সই হয়নি। এরপরই ভেস্তে যায় এই প্রকল্প। এরপর পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর আলোচনায় এলেও সরকার মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে থাকে।
শুরুতে ভূরাজনৈতিক জটিলতা এড়াতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটির পাশাপাশি এটিকে বাণিজ্যিক বন্দর হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। কার্যত এটি দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর।
প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৬ সালে এই টার্মিনাল চালুর কথা রয়েছে। এটি চালু হলে একসঙ্গে দুটি বড় জাহাজ ভেড়ানো যাবে। এর একটি হবে কনটেইনারবাহী, আরেকটি সাধারণ পণ্যবাহী। চট্টগ্রাম বন্দরে এখন যেসব জাহাজ ভেড়ানো যায়, তার চেয়ে তিন গুণ বেশি ক্ষমতার কনটেইনার ও সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়ানো যাবে এই টার্মিনালে।
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এত দিন দেশে কোনো গভীর সমুদ্রবন্দর ছিল না। তাই আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে খরচ যেমন বেশি হচ্ছে, তেমনি সময়ও বেশি লাগছে।
মাতারবাড়ী বন্দর চালু হলে সরাসরি ইউরোপ-আমেরিকায় তৈরি পোশাক রপ্তানি সহজ হবে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বা কলম্বোর মতো বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানির দরকার হবে না। এতে সময় ও অর্থ খরচ কমবে।