দুদকের মামলায় এসআই নওয়াব কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক »
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাময়িক বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক মো. নওয়াব আলীকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
গতকাল বুধবার দুপুরে নগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন। অভিযুক্ত নওয়াব আলী আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদনও করেছিলেন।
মো. নওয়াব আলী গোপালগঞ্জ সুলতানশাহী কেকানিয়া গ্রামের মৃত গোলাম রসুল শেখের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম দামপাড়াস্থ সিআইডিতে উপ-পরিদর্শক পদে কর্মরত ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নওয়াব আলী ১৯৯২ সালে কনস্টেবল পদে যোগ দেন। রহিমা খানমের অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের প্রাথমিক তদন্তে এসআই নওয়াব আলীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এ বিষয়ে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক মো. আলী আকবর বাদি হয়ে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন। দুদকের মামলায় স্ত্রী গোলজার বেগমকেও আসামি করা হয়। দুদকের মামলার পর তাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সর্বশেষ ঢাকায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) কর্মরত ছিলেন নওয়াব আলী।
দুদকের অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র গ্রহণ করে এসআই নওয়াব আলী এবং তার স্ত্রীসহ তিন অভিযুক্ত। একই সময়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। কিন্তু অভিযুক্তরা ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এর আগে গত ৯ মার্চ একই মামলায় অভিযুক্ত নওয়াব আলীর স্ত্রী গোলজার বেগম আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গুলজার বেগম ছিলেন নগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক।
দুদকের পিপি মাহমুদুল হক মাহমুদ বলেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সিআইডির এসআই নওয়াবআলী আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে নগর পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী এবং দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক এই শুনানি করেন। এই মামলায় আগামী ৬ এপ্রিল শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে।
উল্লেখ্য, নওয়াব আলী সিআইডিতে কর্মজীবনে বিভিন্ন অসৎ উপায়ে অর্জিত টাকার মালিক বানিয়েছেন স্ত্রী গোলজার বেগমকে। স্বামী-স্ত্রী দুইজনের নামে ১ কোটি ৫১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৩৪ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিকানার প্রমাণ পায় দুদক। মাছচাষ থেকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা আয়ের উৎস দেখালেও তার কোন দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া মিরসরাইয়ের পশ্চিম ইছাখালীর মদ্দারহাটে সাতজনের সঙ্গে চুক্তিতে যে মাছের প্রজেক্টের কথা বলেছেন তা ছিল মিথ্যা ও ভুয়া। যেসব ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি দেখানো হয়েছে, তারাও ২০ বছর আগে মারা গেছেন।
দুদকের তদন্তে মিলেছে, গ্রামের বাড়িতে ২০১৩ সালে নিজের নামে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ জমির ওপর একটি দোতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। স্ত্রী গোলজারের নামের নগরের লালখান বাজার এলাকায় পার্কিংসহ ১১শ’ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, একই এলাকায় ৪ শতক জমিসহ সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুরে ৩৫৪ শতক জমি রয়েছে। তাছাড়া স্ত্রীর নামে একটি মাইক্রোবাসও রয়েছে।