ট্রমা সেন্টার চালু থাকে না কেন

শুধুমাত্র সঠিক তদারকি ও সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতার অভাবে সরকারের অনেক মহৎ কাজ মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে। জনগণ তার সুফল পায় না। এরমধ্যে ট্রমা সেন্টার অন্যতম।
মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসা দিতে ২০১০ সালে সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৬টি ট্রমা সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। তার অনেকগুলোর নির্মাণকাজও শেষ হয়েছে। এরমধ্যে একটি ছিল হাটহাজারী উপজেলায় নির্মিত ট্রমা সেন্টারটি। যা আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। জানা গেছে, উদ্বোধনের পর থেকে এখন পর্যন্ত চালুই হয়নি সেন্টারটি। ব্যবহার না থাকায় ট্রমা সেন্টারের অবকাঠামোসহ অন্যান্য জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে। সেন্টার নির্মাণ করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন জনবল নিয়োগ হয়নি। স্থাপন হয়নি কোন যন্ত্রপাতিও। আসবাবপত্রও সংযোজন হয়নি ট্রমা সেন্টারটিতে। নানান সংকটের কারণে চালু করা যাচ্ছে না ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ট্রমা সেন্টারটি। অথচ হাটহাজারীর ওপর দিয়েই প্রতিদিন দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে যাতায়াত করে থাকেন প্রচুর পর্যটকসহ জনসাধারণ মানুষ। দুই মহাসড়কেই প্রায় সময় দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়।
এর ফলে হাটহাজারী উপজেলার তো বটেই পাশের দুই পার্বত্য জেলার মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহতরাও বঞ্চিত হচ্ছেন ত্বরিৎ চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তি থেকে। দুর্ঘটনায় আহতদের এখনও অগত্যা ভরসা রাখতে হচ্ছে সেন্টার থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে নগরে অবস্থিত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওপর। যানজটের কারণে এত পথ পাড়ি দিতে গিয়ে পথিমধ্যেই অনেক সময় মৃত্যু ঘটে রোগীর। তাছাড়া একারণে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন অনেকেই। কিন্তু এক অজ্ঞাত কারণে সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে বহু বছর ধরে।
অথচ চিকিৎসকরা বলছেন- দুর্ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যে সঠিক চিকিৎসা পেলে পঙ্গুত্ব থেকে বাঁচা সম্ভব। তাই সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুর্ঘটনাজনিত কারণে আহতদের চিকিৎসার স্বার্থে পূর্ণাঙ্গ ট্রমা সেন্টার চালু করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
১২ কোটি টাকা খরচ করার পরেও জনবল ও যন্ত্রপাতির অভাবে ট্রমা সেন্টার চালু না হওয়াটা দুঃখজনক। কার বা কাদের গাফেলতির কারণে সেন্টারটি চালু হচ্ছে না তা খতিয়ে দেখার অনুরোধ করব। বর্তমানে নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী খুবই আন্তরিক। তার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ বার্ন হাসপাতাল। আশা করি সারাদেশে নির্মিত ট্রমা সেন্টারগুলো কোনটি কোন অবস্থায় আছে তার খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।