টিকায় বাড়ছে আগ্রহ

দ্বিতীয় দিনে টিকা নিলেন ২,৬৭৮ জন
এ পর্যন্ত নিবন্ধন ৩২, ৪৬৬ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক :
টিকা নেওয়ার অপেক্ষায় বসে আছেন হিল্লোল চৌধুরী। চোখে-মুখে করোনা জয়ের একরাশ স্বপ্ন নিয়ে চেয়ে আছেন টিকাদান বুথের দিকে। নাম ডাকার সাথে সাথে প্রবেশ করেন বুথে। টিকা নেওয়ার পরে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় বেরিয়ে আসেন বুথ থেকে। যেন বন্দি জীবন থেকে মুক্ত হওয়ার অন্যরকম অনুভূতি। নির্ভয়ে হাসি-মুখে টিকা নেওয়ার এ দৃশ্য যেন করোনার বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার আনন্দের অনুভূতি। নির্ভয়ে টিকা নেওয়ার এ দৃশ্য শুধুই হিল্লোল চৌধুরীর না, গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতাল টিকাদান কেন্দ্রের টিকা নিতে আসা সবার মধ্যে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
নির্ভয়ে টিকা নেওয়ার মধ্যে করোনা টিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে গতকাল সোমবার নগরের ১০টি টিকাদান কেন্দ্র ও ১৪ উপজেলায় মোট ২ হাজার ৬৭৮ জন সম্মুখসারির যোদ্ধা টিকা নিয়েছেন। এ নিয়ে দুই দিনে চট্টগ্রামে মোট ৩ হাজার ৭৬৮ জন টিকা গ্রহণ করেন। এছাড়া গতকাল সোমবার পর্যন্ত নগরে ও চট্টগ্রামের ১৪টি উপজেলায় টিকা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন ৩২ হাজার ৪৬৬ জন। এরমধ্যে নগরে ২৩ হাজার ৬৩৫ এবং উপজেলায় ৮ হাজার ৮৩১ জন ।
টিকা নেওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে হিল্লোল চৌধুরী জানান, স্বপ্নের টিকা নেওয়াটা সত্যিই অনেক আনন্দের। সাধারণত ইঞ্জেকশান নেওয়ার সময় হালকা ব্যাথা অনুভব হলেও এ টিকা নেওয়ার সময় তেমন কিছুই অনুভব হয়নি। টিকা নিয়ে প্রায় ২০ মিনিট অতিক্রম হয়েছে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের সমস্যা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। আশা করি টিকা নেওয়ায় করোনা থেকে সুরক্ষা পাব।
টিকা নেওয়ার আগে অনুভূতি জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসা ডা. ডেইজি আকতার বলেন, অনেক আনন্দ লাগছে। আজ ভ্যাক্সিনেশন হবো এবং নিজেকে সুরক্ষিত করতে পারব। অনেক দেশ এখনো টিকা পায়নি, তার মধ্যে আমরা নিতে পারছি এটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়।
সবাইকে নির্ভয়ে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ৭৮ বছর বয়সী মোহাম্মদ হাসান আলী বলেন, টিকা নেওয়ার পরে এখনো আমার কোন সমস্যা হচ্ছে না। আমি এ বয়সে টিকা নিয়েছি। সবাইকে বলবো আপনারা নির্ভয়ে টিকা নিতে আসুন।
টিকা নেওয়ার পরে কেমন লাগছে জানতে চাইলে পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে বসে থাকা শরিফুন কবির বেগম বলেন, টিকা নেওয়ার পরে এখনো কোন রকম সমস্যা হচ্ছে না। টিকা নেওয়ার আগে সবাই যেভাবে গুজব ছড়িয়েছে টিকা নেওয়ার পরে সেরকম কিছুই অনুভব হচ্ছে না। আমার মতে সবার এ টিকা নেওয়া উচিত।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের ১৪টি উপজেলার মধ্যে লোহাগাড়ায় ৫০ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৮০, ফটিকছড়িতে ৪০, বাঁশখালীতে ১৬০, আনোয়ারায় ৭৯, সীতাকুণ্ডে ৭৭, সাতকানিয়ায় ৮৮, রাউজানে ২১০, মিরসরাইয়ে ১০৪, চন্দনাইশে ২০, বোয়ালখালীতে ৯২, হাটহাজারীতে ৮০, সন্দীপে ১০ এবং পটিয়ায় ১২০ জন টিকা গ্রহণ করেন।