চলতি সপ্তাহে লকডাউন হতে পারে চকবাজার

রুমন ভট্টাচার্য :
রেড জোন ঘোষিত ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ড লকডাউনের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। লকডাউনের আওতায় থাকবে পুরো ওয়ার্ড। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই চকবাজার ওয়ার্ড লকডাউন হতে পারে এমনটাই আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চসিক সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহের যে কোনোদিন চকবাজার ওয়ার্ড লকডাউন করা হতে পারে। তবে তারিখ নির্ধারিত হয়নি। ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে ২০ জন স্বেচ্ছাসেবকের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা। ট্রেনিং দিতে ইতোমধ্যে আইইডিসিআর থেকে এসেছেন দু’জন। রোববার (২১ জুন) সকাল থেকে শুরু হতে পারে স্বেচ্ছাসেবকদের ট্রেনিং। ট্রেনিং শেষেই মূলত কার্যকর হতে পারে লকডাউনের বাস্তবায়ন।
শুরুতে মঙ্গলবার (১৬ জুন) রাত ১২টার পর ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডকে লকডাউন করা হয়। এরপরই আসে চকবাজার ওয়ার্ডের নাম। এর আগে গত ১৩ জুন করোনা পরিস্থিতিতে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির দ্বিতীয় সভায় নগরীর ১০টি ওয়ার্ডকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়।
চকবাজার থানা সূত্রে জানা গেছে, চকবাজার থানা এলাকায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ১৪১ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে ২৩ জন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ জন। তবে আরো অনেকে সুস্থ হয়েছেন, যারা এখন রিপোর্টের অপেক্ষায় আছেন।
চসিক ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, চকবাজার এলাকার ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার।
১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু সুভাতকে বলেন, ‘আমি থানা থেকে যে তালিকা পেয়েছি সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫ জন। তবে আমার হিসেবে আরো ১০ জন বাড়বে। মোট ৭৫ জন হবে। কারণ পাঁচলাইশ এলাকার কিছু অংশ আমার ওয়ার্ডে ঢুকেছে। সেখানকার আক্রান্তের হিসাব এখানে আসেনি।’ তবে মৃত্যুর সংখ্যা তিনি জানাতে পারেননি।
কাউন্সিলর মিন্টু জানান, নির্দেশনা মোতাবেক তরুণ ও উদ্যমী যাদের বয়স ২২-২৫ বছরের মধ্যে এরকম ২০ জন স্বেচ্ছাসেবকের একটি নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সম্ভবত কাল বা পরশুর মধ্যে তাদের ট্রেনিং দেওয়া হতে পারে। ট্রেনিং শেষে আশা করা যায় ২-৩ দিনের মধ্যে লকডাউন কার্যকর করা হবে।
কাউন্সিলর মিন্টু আরো জানান, চকবাজারের মেইন রোড খোলা থাকবে। কারণ অন্যান্য এলাকা এ ওয়ার্ডে ঢুকেছে। মেইন রোডে গাড়ি চললেও চকবাজার এলাকার কোথাও থামতে পারবে না। মহল্লা ও অলি-গলির মুখ বন্ধ করে দেওয়া হবে কেউ যাতে বের হতে না পারে। স্বেচ্ছাসেবকরা মূল্য পরিশোধের বিনিময়ে তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেবে বাসায়। চকবাজার ওয়ার্ডে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। এছাড়া বাকলিয়ার অধিকাংশ মানুষ চকবাজার হয়ে চলাচল করে। এসব মাথায় রেখে লকডাউন কার্যকরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা সুপ্রভাতকে বলেন, ‘আইইডিসিআর থেকে দু’জন ডাক্তার এসেছেন। রোববার বা সোমবার থেকে হয়ত স্বেচ্ছাসেবকদের ট্রেনিং দেওয়া হবে। আমরা একসাথে ৬০ জনকে ট্রেনিং করাব। প্রতি ওয়ার্ড থেকে ২০ জন করে নেওয়া হয়েছে। এরপর আবার ৬০ জনকে করানো হবে। চকবাজারে লকডাউন বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। চলতি সপ্তাহের মধ্যে হতে পারে এরকম আশা করা যায়।’
চকবাজার লকডাউনের বিষয়ে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘এপর্যন্ত এধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘লকডাউন বাস্তবায়নে পুরোপুরি তৈরি আছি। আমরা ফিল্ড ওয়ার্ক করে রেখেছি। যখনই নির্দেশনা আসুক বাস্তবায়নে প্রস্তুত।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত ১০টি ওয়ার্ড হচ্ছে-১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী, ১৬ নম্বর চকবাজার, ১৪ নম্বর লালখান বাজার, ২০ নম্বর দেওয়ান বাজার, ২১ নম্বর জামালখান, ২২ নম্বর এনায়েত বাজার, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর, ৩৭ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহর, ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ও ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর।