কিশোরগ্যাং থামাতে হবে এখনই

সমাজে কোথাও কোনো সুবাতাস নেই। সুখবর নেই। বড়দের দলাদলি, মারামারি, স্বার্থপরতা, মিথ্যাচার, নিষ্ঠুরতা, প্রতারণা দেখতে দেখতে বড় হচ্ছে শিশুরা। আর এর প্রভাবেই সে শিশুটি বড় হয়ে অবচেতনতায় একই আচরণ করছে । পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে গেছে যে, নিজ সন্তানদের প্রতি, নিজ পাড়ার শিশুদের প্রতি আস্থা রাখা কঠিন হয়ে উঠেছে। দলবদ্ধ কিশোর-তরুণ, যাদের শরীর থেকে এখনো মাতৃদুগ্ধের গন্ধ দূর হয়নি তাদের দেখে ভয়ে সিঁটকে যেতে হয়। কারণ এখন এই কিশোর-তরুণরাই যেন আমাদের সকল দুশ্চিন্তা আর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেপরোয়া এই কিশোর-তরুণদের কাছে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমনকি রাষ্ট্র প্রশাসনও যেন অসহায় হয়ে পড়েছে ।
গত প্রায় এক দশক ধরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় নগরে গ্যাং কালচার গড়ে উঠছে। উঠতি বয়েসি কিশোর-তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে এই গ্যাং কালচারে। পাড়ায় পাড়ায় গড়ে উঠছে নানা ধরনের গ্রুপ। অনেক সময় তারা রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাদের প্রশ্রয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠছে ।
পশ্চিমা বিশ্বে গত শতকে নগরায়ণের ফলে এই সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল। আমাদের দেশে নগরায়ণের কুফল হিসেবে এটিকে কেউ কেউ দেখলেও পুরোটা সত্য নয়। কারণ কিশোর-তরুণদের এই বেপরোয়া আচরণ গ্রামাঞ্চলেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। এখন সে সমাজবদ্ধতা নেই, সামাজিক অনুশাসন নেই। পরস্পরকে মান্য করার প্রবণতাও নেই।
বয়স্ক, গুরুজনদের সে স্থান এখন দখল করেছে ‘বড়ভাই’রা। যারা এদের শাসন করার পরিবর্তে উস্কানি ও প্রশ্রয় দিচ্ছে । প্রায় দুগ্ধপোষ্য শিশুদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দিচ্ছে। অপরাধ সংঘটিত করার পর এই পিচ্চি অপরাধীরা সেই ‘বড় ভাই’দের কাছে আশ্রয় নিচ্ছে। বড় ভাই’রা নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এই অপরাধীদের লালন করছে। আর ‘বড় ভাই’রা কোনো না কোনোভাবে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। নেতাদের আনুকুল্য পাচ্ছে ।
এটা বন্ধ করতে হবে। না হলে দেশ ও জনগণের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই এখনই থামাতে হবে।