এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নকশা নিয়ে আপত্তি তুলে নিলো সিটি কর্পোরেশন

সিমেন্ট ক্রসিংয়ে রুবি সিমেন্টমুখী র‌্যাম চাইলেন মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক »

লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সিডিএ’র দেখানো নকশা অপরিবর্তিত থাকছে। আর এতে পাঁচ মাস ধরে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নকশা নিয়ে অচলাবস্থার  অবসান হলো। গত ৮ জুন সিডিএতে সমন্বয় সভায় লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত নকশা চূড়ান্ত হলেও সিটি কর্পোরেশন এর বিরোধিতা করে আসছিল। গতকাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিমের উপস্থিতিতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নকশা উপস্থাপন করা হলে তিনি এতে সম্মত হন। একইসাথে তিনি সিমেন্ট ক্রসিং এলাকায় রুবি সিমেন্টমুখী একটি র‌্যাম নির্মাণের প্রস্তাবনা দেন।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক ও সিডিএ’র নির্বাহি প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। উপস্থাপনায় তিনি উল্লেখ করেন, দেওয়ানহাট প্রান্ত থেকে আসা চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দুই লেনের অংশটি লালখান বাজার ম্যাজিস্ট্রেট কলোনীর সামনে নেমে যাবে। বাকি দুই লেন সরাসরি জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের সামনে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত হবে। এতে করে বহদ্দারহাট প্রান্ত থেকে বিমান বন্দরের দিকে টানা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থাকবে কিন্তু বিমান বন্দর থেকে আসার পথে লালখান বাজার ম্যাজিস্ট্রেট কলোনীর অংশে নেমে আবারো বিদ্যমান এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সাথে যুক্ত হবে। এতে করে লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস অংশে রোড ডিজাইডারের উপর দুই লেনের ফ্লাইওভার থাকবে। তাই কোনো পাহাড় কাটা পড়বে না।

উপস্থাপনায় মাহফুজুর রহমান আরো উল্লেখ করেন, বিমানবন্দর থেকে আসার পথে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি র‌্যাম টাইগারপাস রেলওয়ে পুলিশের সামনে নেমে যাবে। এতে করে আমবাগানমুখী রোডটি আরো সক্রিয় হবে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান নকশায় দেখা যাচ্ছে লালখান বাজার প্রান্তে বিমান বন্দরমুখী যাত্রীরা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠার সুযোগ পাচ্ছে না। এতে জাকির হোসেন রোড দিয়ে আগত যাত্রীরা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে কিভাবে উঠবে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, এজন্য আমরা জিইসি মোড়ে হোটেল পেনিনসুলার সামনে একটি র‌্যাম করবো। এই র‌্যাম দিয়ে বিমান বন্দরমুখী যাত্রীরা সহজেই উঠতে পারবে।

এই র‌্যাম কোথায় হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পূর্বের ডিজাইনে যে স্থানে ছিল ঠিক সেখানেই এটি নির্মিত হবে।’ তবে পূর্বের ডিজাইনে ব্লুসম গার্ডেনের ( ম্যানিলা হিল) সামনে থেকে র‌্যাম ছিল।

সিমেন্ট ক্রসিং এলাকায় একটি র‌্যাম হবে

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম সিডিএ’র উপস্থাপনা শেষে সিমেন্ট ক্রসিং এলাকায় একটি র‌্যাম নির্মাণের প্রস্তাবনা করেন বলে সিডিএ’র প্রকল্প পরিচালক জানান। তিনি বলেন, মেয়রের প্রস্তাবনার আলোকে আমরা ওই পয়েন্টে আরো একটি র‌্যাম নির্মাণ করবো।

ডিসেম্বরে লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস অংশে কাজ শুরু

এদিকে গতকাল সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী ও মেয়রের একান্ত সচিবের উপস্থিতিতে আলোচনা শেষে লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস অংশে ডিজাইন নিয়ে বিরোধের অবসান হলো। এবিষয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা আগামী ডিসেম্বর থেকে লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস অংশে কাজ শুরু করবো।

উল্লেখ্য, লালখান বাজার থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত চার লেনের ফ্লাইওভার প্রকল্পটি ২০১৭ সালের  ১১ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। কিন্তু এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের নভেম্বরে। বর্তমানে সল্টগোলা রেল ক্রসিং থেকে পতেঙ্গা সি বিচ পর্যন্ত নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। পিলার নির্মাণের কাজ চলছে বারিক বিল্ডিং থেকে দেওয়ানহাট পর্যন্ত।

২ হাজার ৮৫৪ কোটি ৫৬ লাখ ১২ হাজার ১১৩ টাকায় তারা ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করছে ম্যাক্স রেনকিন জেবি। আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার নির্মাণকারীও ছিল এই সংস্থাটি।