‘ইউনিক কার্ডের পরিকল্পনা করছে সরকার’

নিজস্ব প্রতিবেদক »

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, ‘বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর শিশুর জন্মের পরপরই একটি ইউনিক আইডি কার্ড দেয়। ওটাতেই যাবতীয় সব ধরনের তথ্য থাকে। এই ধরনের একটি ইউনিক কার্ডের পরিকল্পনা করছে সরকার। এ ইউনিক আইডিতে থাকবে জন্মনিবন্ধন তথ্যসহ ওই নাগরিকের যাবতীয় সকল তথ্য। হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে যাতে শিশুর জন্মের পরপরই জন্মনিবন্ধন প্রদান করা যায় সে বিষয়ে সরকারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’

গতকাল শুক্রবার সকালে ‘জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে যারা কাজ করেন এবং সেবা প্রদানকারী ও সেবা গ্রহণকারীদের অনুপ্রাণিত করতে হবে। দেশের আত্মনির্ভরশীল, বয়স্ক, কর্মঠ জনগোষ্ঠীর শুদ্ধ ডাটাবেইজ সরকারের যেকোন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর জন্য শতভাগ জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। পাড়া-প্রতিবেশী, সহকর্মীসহ আশপাশের সকলেই যাতে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের আওতায় আসে তা নিশ্চিত করার জন্য সকলকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্থানীয় সরকার অধিদফতরের উপপরিচালক শাহীনা সুলতানা স্বাগত বক্তব্য ও পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। এতে বলা হয় এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) অর্জনের জন্য জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন গুরুত্বপূর্ণ। ১৮টিরও অধিক সেবা পেতে জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের গুরুত্ব ও কার্যক্রম তুলে ধরে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইনের গুরুত্বপূর্ণ ধারাসমূহ উপস্থাপন করে। এছাড়াও জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সার্ভারের সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়।

প্রায় দুই দশকে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন চালু হওয়ার কথা জানিয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, ‘জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের সাথে এনআইডিসহ সরকার প্রদত্ত সকল সনদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তিনি ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন করার জন্য উৎসাহিত করতে এবং সকলকে একসাথে কাজ করতে সকলকে অনুরোধ জানান। সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সেবা প্রত্যাশীদের হয়রানি না করে সেবা সহজীকরণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনসহ সরকারের সকল সেবা একই সিস্টেমে প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আত্মগোপন করে থাকা রোহিঙ্গারা যাতে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সেবা পেতে না পারে সেজন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’

জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের উপ-পরিচালক মাধবী বড়ুয়া বলেন, ‘মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ১৯৯৭ সাল থেকে জন্মনিবন্ধন দিবসকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে। উপজেলা-জেলা পর্যায়ে বাল্যবিবাহ রোধ এবং জন্মনিবন্ধনসহ সরকারের অন্যান্য সকল কাজে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে।’

এনজিও বিষয়ক প্রতিনিধি মো. আলী শিকদার তার বক্তব্যে বলেন, ‘জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন, বয়স্ক শিক্ষা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধসহ বিভিন্ন কাজে সকল এনজিও প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। সময়মত জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন নিশ্চিত করা এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’

চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি মো. সাদি উর রহিম জাদিদ, বিভাগীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও অন্যান্য সরকারি দপ্তরসমূহের কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।