১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিতে জনদুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক >

বর্ষার আগে ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে নগরীর নিচু এলাকাগুলো। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে নগরের বিভিন্ন স্থানে পানি জমেছে।
গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নগরীতে ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এছাড়া সন্দ্বীপে ১০০ মিলিমিটার, ফেনীতে ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়। মৌসুম শুরুর আগে সারাদেশে হওয়া এই বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে মাত্রা ছিল বেশি। টানা গরমের পরে এমন বৃষ্টি নগর জীবনে স্বস্তি দিলেও যেসব এলাকায় পানি জমেছে সেখানে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তর পতেঙ্গা কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘এই বৃষ্টি মৌসুমপূর্ব বৃষ্টি। বর্ষা শুরুর আগে এ ধরনের বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। আজ (মঙ্গলবার) রাতে টানা বর্ষণের পর বুধবার (আজ) থেকে বৃষ্টির মাত্রা কমে আসবে।’
তিনি আরো বলেন, মূলত চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর মৌসুমী বায়ু প্রবেশের পর নিয়মিত বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর আগ পর্যন্ত এমন অনিয়মিত বৃষ্টিপাত হবে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিতে বিকেল থেকে নগরীর বহদ্দারহাট, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, কমার্স কলেজ রোডসহ নগরের বেশিরভাগ নিম্নাঞ্চলে হাঁটু পানি জমেছে। মূলত মেগা প্রকল্পের বাঁধ ও খালগুলোতে আবর্জনা জমায় জোয়ারের পানি আটকে এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় কাতালগঞ্জ এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, কর্ণফুলি নদীর জোয়ারের পানি নগরে প্রভাব ফেলেছে। চলমান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে নদীর পাড়ে খালে দেওয়া হয়েছে বাঁধ। এ বাঁধের ফলে খালগুলো আবর্জনায় ভরাট হয়ে উঠেছে। তাছাড়া নালা নর্দমায় আবর্জনা জমাট বেঁধেছে। ফলে জোয়ারের রাস্তায় হাঁটুপানি জমেছে। এরপর যুক্ত হয়েছে বৃষ্টির পানি। এতে নালা নর্দমায় জমে থাকা আবর্জনা রাস্তায় উঠে এসেছে। নগরের যানবাহন এসব পানির ওপর চলার ফলে রাস্তায় চলাচলরত সাধারণ মানুষের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। জলাবদ্ধতার কারণে এসব এলাকার ব্যবসায়ীদের গুনতে হচ্ছে লোকসান। কারো কারো দোকানে ঢুকে পড়েছে পানি। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসেছেন তা সরেজমিন দেখতে।
এমন বৃষ্টিতে স্বস্তির কথা জানাচ্ছেন নগরবাসী। কাতালগঞ্জের একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে বেচাবিক্রি কম। আবার বিকেল হতে জমেছে জোয়ারের পানি। এ জলাবদ্ধতার কারণে ক্রেতারা দোকানে আসতে পারছে না।’
অফিস থেকে ফেরার পথে বৃষ্টিস্নাত রুহুল আমিন বলেন, ‘প্রতিদিন অফিসে যেতে আসতে রোদে পুড়তাম। গরমের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। তবে এ বৃষ্টি যেন সুখের বার্তা বয়ে এনেছে।’
জলাবদ্ধতার ব্যাপারে নগরের চাক্তাই এলাকার ওমর ফারুক রানা বলছেন, ‘চাক্তাই খালে বেশ কয়েকবছর ধরে জমে আছে আবর্জনা। খাতুনগঞ্জের সকল ময়লা ফেলা হচ্ছে এতে। এ খালে এত পবশি ময়লা জমেছে যে এতে কিছুদিনের মধ্যে দালান করার উপযোগী হবে। নগরের বেশিরভাগ রাস্তা উঁচু করলেও এসব আবর্জনা পরিষ্কার না করলে বর্ষায় তলিয়ে যাবে নগরীর বেশিরভাগ নিচু এলাকা। তাছাড়া সাধারণ জনগণেরও এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।’