সড়কে মৃত্যু বিভীষিকা

নগর ও উপজেলায় আটজনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিনিধি পটিয়া ও রাজস্থলী»
সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বাড়ছে প্রতিনিয়ত। নগর ও উপজেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৮ জন। এদের মধ্যে গতকাল দুপুরে স্টিলমিল বাজার এলাকায় বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রিকশাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই এক শিশুসহ তিনজন নিহত হন। সকালে রানী রাসমনি ঘাটে গাড়ির ধাক্কায় নিহত হন অন্য একজন। এর আগের রাতে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারালে মৃত্যু হয় এক কিশোরের। এছাড়া কর্ণফুলী উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। রাজস্থলী উপজেলায় সড়কে প্রাণ গেছে এক স্কুল শিক্ষার্থীর।
নগরের বিভিন্ন এলাকায় এসব সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানান চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক শীলব্রত বড়ুয়া।
নিহতরা হলেন পতেঙ্গা স্টিলমিল বাজার বার্মা কলোনী এলাকার আরফা বেগম (৩৮) তার নাতনী আয়শা আকতার মিম (৮), একই থানাধীন খাল পাড় এলাকার রেজাউল করিম (২২), দক্ষিণ কাট্টলী এলাকার হরিলাল দাশের ছেলে গোপাল দাশ (৪৫) ও হাটহাজারী উপজেলার ধলাই ইউনিয়নের কাজিরহাট এলাকার শাহ আলমের ছেলে তামিম (২০)।
জানা যায়, নগরের স্টিলমিল বাজার সংলগ্ন খালপাড় এলাকায় শুক্রবার বেলা ১২টায় একটি সিটি বাস ইপিজেডের দিকে যাওয়ার সময় একটি রিকশাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রিকশায় থাকা আরফা বেগম ও তার নাতনী আয়শা আকতার মিমসহ পথচারী রেজাউল করিম নিহত হন। এসময় বাস ও চালককে আটক করে পুলিশ। অন্যদিকে সকাল ৮টায় রানী রাসমনি ঘাট এলাকায় গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন গোপাল দাশ। ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার সময় বৃষ্টির কারণে রাস্তা স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাওয়ায় বাসায় ফেরার পথে আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভরের ইউনূস্কো সিটি সেন্টারের সামনে একটি মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে তামিম গুরুতর আহত হয়। পরে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক শীলব্রত বড়ুয়া জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় তামিম নামে এক কিশোরকে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। সকালে রানী রাসমনি ঘাট এলাকা থেকে চল্লিশোর্ধ গোপাল দাশকে নিয়ে আসা হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

কর্ণফুলী

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহাসড়কের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা এলাকায় বিআরটিসি বাস-মিনি বাস ও সিএনজি অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে দুইজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন পটিয়ার দক্ষিণ মালিয়ারা গ্রামের নুরুল আমিনের পুত্র নুরুল আবসার (৪৮) ও অজ্ঞাত পরিচয়ের ১৮ বছর বয়সী এক তরুণ।
আহত হলেন ডেইজি সর্দাও (৩৫), রুবেল (৩২), সুমন চৌধুরী (৩০), রিটন দেব (৪৫), রহমত আলী (৪৫), পিন্টু দাশ (৩০), কবির বিশ্বাস (৫০), বেলাল (৩৭), মুজিবুল্লাহ (৫৫), ইরফান (২৩), রিজিয়া বেগম (৩৫), সোহাগ মিয়া (৩২) ও অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো ২ জন পুরুষ। বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭ জনের অবস্থা আশঙ্খাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার আড়াইটার দিকে শাহ আমানত তৃতীয় সেতু এলাকা থেকে কক্সবাজারমুখী বিআরটিসির একটি চেয়ারকোচ রওনা হয়। গাড়িটি কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ফসিল পেট্রোল পাম্প এলাকায় পৌঁছলে মিনি বাস, সিএনজি অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ২ জন যাত্রী নিহত হয়। ঘটনার পর স্থানীয়রা, থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের টিম আহতদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে পাঠান।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো জহির জানিয়েছেন, তিন গাড়ির সংঘর্ষের ঘটনায় ২ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৬/৭ জনের অবস্থা আশঙ্খাজনক।
কর্ণফুলী থানার ওসি মো. দুলাল মাহমুদ জানিয়েছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের চমেক হাসপাতালে পাঠনো হয়েছে। এর মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিআরটিসি, মিনি বাস ও সিএনজি গাড়ি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

রাজস্থলী

চন্দ্রঘোনা রাজস্থলী সড়কের বাঙ্গালহালিয়া শফিপুর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক স্কুল শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ২ জন। গতকাল সকাল ৮টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত উপ্রুইচিং মারমা (১৫) বিলাইছড়ি উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের মংবাচিং মারমার মেয়ে। সে চিৎমরম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শফিপুর এলাকায় মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে মাহিন্দ্র গাড়ি (জিপ) ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেলের যাত্রীরা ছিটকে পড়ে যায়। এতে চালকসহ ৩ জন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চন্দ্রঘোনা খ্রিস্টিয়ান মিশন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক উপ্রুইচিং মারমাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসক ডা. বিলিয়ম এ সাংমা জানান, নিহত স্কুল শিক্ষার্থী হাসপাতালের আনার আগে মারা গেছে। আহত ২ জন আশঙ্কামুক্ত।