সপ্তাহব্যাপী কঠোর লকডাউন : বিধিনিষেধ মেনে চলুন

আজ থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হচ্ছে। লকডাউনের সময় সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। তবে শিল্প কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজস্ব ব্যবস্থায় চালু রাখা যাবে। সকল প্রকার গণ পরিবহণ, অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলবে। উন্মুক্ত স্থানে কাঁচা বাজার বসা যাবে। শপিং মল, দোকানপাট বন্ধ থাকবে, হোটেল রে¯েঁÍারা শুধু পার্সেল সার্ভিস দেবে, বসে খাওয়া দাওয়া চলবে না। যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। ব্যাংকে আগামী সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত লেনদেন চলবে। পূঁজিবাজারে লেনদেন ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত। কোনরূপ সমাবেশ করা যাবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৩১ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। গণমাধ্যম বিধিনিষেধের বাইরে থাকবে। কঠোর লকডাউন প্রতিপালনে পুলিশ তৎপর থাকবে। এছাড়া বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে।
দেশে করোনা পরিস্থিতির ক্রমাবনতিতে সরকার কঠোর লকডাউনের পদক্ষেপ নিয়েছে। জনগণ বিধিনিষেধ প্রতিপালনে সক্রিয় হলে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। করোনা নিয়ন্ত্রণে জুলাই থেকে পুরোদমে টিকা কার্যক্রম চলবে মর্মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে জানিয়েছেন।
২ জুলাই থেকে মডার্নার ২৫ লাখ টিকা আসতে শুরু করবে। লকডাউনে র‌্যাব-পুলিশের ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করবে। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় পরিবহণ শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে- দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
করোনা নিয়ন্ত্রণ ও একই সাথে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট মহলসহ জনগণকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন তথা মাস্ক পরিধান, সমাবেশ এড়িয়ে চলা, স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন, করোনার উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া- এসব যথাবিধি পালন করলে কিছুটা হলেও নিরাপদ থাকা সম্ভব হবে।
গত ৩ দিনে করোনায় শতাধিক মৃত্যু ঘটেছে। গতকাল মৃত্যু ১১৫ জন, শনাক্ত ৮৮২২ জন। সামাজিক সংক্রমণ পরিলক্ষিত হচ্ছে শহর ও গ্রামাঞ্চলে। চাহিদা অনুসারে জেলা-উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা একেবারেই অপ্রতুল। স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি না ঘটলে করোনা পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হবে। বিধিনিষেধ প্রতিপালনে কেবল প্রশাসন ব্যবস্থা ফলপ্রসূ হবে না যদি কমিউনিটি পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবী ব্রিগেড গঠন করা না যায়। এ জন্য গ্রাম, ইউনিয়ন, শহরের পাড়া-মহল্লা-ওয়ার্ডে জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে তরুণ ও সচেতন এলাকাবাসী নিয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। লকডাউনের সময় গরিব ও নি¤œবিত্তদের ও কাজে যেতে না পারা মানুষদের খাদ্যসহায়তার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
জুলাই থেকে নতুন অর্থ বছর শুরু হচ্ছে। গতকাল ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেট পাস হয়েছে। মানুষের জীবন-জীবিকা, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, শিক্ষা-সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবন সচল রাখতে হলে আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। টিকা কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। করোনাকালে সরকারি-বেসরকারি কর্মকা- সচল রাখা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সুরক্ষা, বেকারদের কর্মসংস্থান ও দরিদ্রদের সহায়তা দিতে নানামুখি কর্মকা- চালু রাখার প্রতি সরকারকে মনোযোগ দিতে হবে। এজন্যে করোনা নিয়ন্ত্রণে জনগণের সচেতন ভূমিকাই প্রধান নিয়ামক।