লক্ষ্যমাত্রার বেশি জমিতে বোরো আবাদের সম্ভাবনা

লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১হাজার ১শ ৬০ হেক্টর, আবাদ হবে ১৬শ হেক্টর

১শ হেক্টর বীজতলা প্রস্তুত

রাজু কুমার দে, মিরসরাই :

মিরসরাইয়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫শ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যদিও ধানের বাজারমূল্য কম, সেচ খরচ বেশি হওয়ায় বোরো আবাদে ভাটা পড়েছিল। এছাড়া শতাধিক স্কিম বন্ধ হয়ে যাওয়ায়ও বোরো আবাদ কমে গিয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বোরো আবাদ হবে বলে জানায় কৃষি অফিস। মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় ১হাজার ১শ ৬০ হেক্টর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু ইতিমধ্যে ১শ হেক্টর বীজ তলা প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতি এক হেক্টর বীজতলায় আবাদ হবে ১৬ হেক্টর জমি। হিসাবমতে ১শ হেক্টর বীজ তলায় ১৬শ হেক্টর জমি আবাদ হবে। এদিকে মিরসরাইয়ে শতাধিক সেচ স্কিম বন্ধ হয়ে যাওয়া বোরো আবাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে কৃষক। কিন্তু উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নে মহামায়া সেচ প্রকল্পের কারণে ওই ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি বোরো আবাদ হয়ে থাকে। ওই ইউনিয়নে চলতি বছর সাড়ে ৪শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হবে বলে জানান কৃষি অফিস। দূর্গাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মোক্তার হোসেন জানান, মহামায়া সেচ প্রকল্পের কারণে দূর্গাপুর ইউনিয়নের কৃষকরা উপকৃত হচ্ছে। আগের চেয়ে আমাদের ইউনিয়নে ফসল ও সবজি উৎপাদন বেড়েছে।উপজেলা কৃষি অফিস আরো জানায়, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় ১শ৪০টি পানির স্কীম দিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)। যা দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে এখানকার কৃষকরা বোরো ও বিভিন্ন শাকসবজির চাষ করে থাকে। বিনিময়ে বিএডিসি নির্দিষ্ট একটি পানির কর নিয়ে থাকে। কিন্তু ১শ৪০টি স্কিমের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ১শটি। ফলে অনেক ইউনিয়নের পানি সংকটে বোরো আবাদ করতে পারছে না কৃষক। অন্যদিকে উপজেলার একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বোরো চাষে সেচের প্রয়োজন হয়। তাই খরচ বেশি পড়ে। কিন্তু খরচের তুলনায় ধানের বাজারমূল্য কম হওয়ায় তারা বোরো চাষ করছেন না। কৃষকদের হিসেব মতে, এক শতক জমিতে বোরো চাষ করতে খরচ হয় ২শ৫০ থেকে ৩শ টাকা। কিন্তু এক শতকের ধান চাষ হয় মাত্র ১২ থেকে ১৫ কেজি। যার বাজারমূল্য মাত্র-১শ৫০-১শ৬০ টাকা। উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম জানান, চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫শ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। বোরো চাষে খরচ বেশি। তাই অনেক কৃষক বোরো চাষ করতে চায় না। এছাড়া অনেক স্কিম বন্ধ হয়ে গেছে। মিরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ জসিম উদ্দিন বলেন, মহামায়া সেচ প্রকল্পর কারণে দূর্গাপুর ইউনিয়নসহ এর আশপাশের এলাকায় বোরো আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এক সময় যে সকল জমি চাষ হতো না এখন মহামায়া সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবহার করে অনাবাদি জমিগুলো চাষ হচ্ছে। ফলে উপকৃত হচ্ছে কৃষক।