‘ম্যারাডোনা ছিলেন মনেপ্রাণে ফিলিস্তিনি’

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক :

ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে  ফুঁসে উঠেছে পুরো বিশ্ব। লাখো মানুষ বিভিন্নভাবে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন।বাদ যাচ্ছেন না ক্রীড়া তারকারাও। কিন্তু ক্রীড়াবিশ্বে এমন একজন মহারথী ছিলেন, যিনি ফিলিস্তিনকে শুধু সমর্থনই করেননি, ‘ভয়ডরহীনভাবে’ নিজেকে ’মনেপ্রাণে ফিলিস্তিনি’ বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন।গত বছরের নভেম্বরে ফুটবলবিশ্বকে কাঁদিয়ে চিরবিদায় নেন সর্বকালের অন্যতম  সেরা ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা। তার বিদায়ে দুঃখ ভারাক্রান্ত ফুটবল সমর্থকরা শুধু ফুটবলার হিসেবেই নয়, ব্যক্তি ম্যারাডোনার ‘বিদ্রোহী’ চরিত্রকেও অনেক পছন্দ করতেন। কিউবার বিপ্লবী কমিউনিস্টনেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্ত্রোর সঙ্গে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের কথা কারো অজানা নয়। শুধু লাতিন আমেরিকার বিপ্লবই নয়, ম্যারাডোনা আজীবন নিপীড়িত মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন। বিশেষ করে নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন। কয়েক সপ্তাহজুড়ে চলা ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনের ওপর বর্বর হামলার ব্যাপারেও  যে তিনি মুখ খুলতেন সেকথা বলাই বাহুল্য।  ফিদেল ক্যাস্ত্রো ছাড়াও ম্যারাডোনার বন্ধু তালিকায় ছিলেন ভেনেজুয়েলার প্রয়াত বিপ্লবী প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজ, এবং বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। কয়েকবার তাকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ-বিরোধী টিশার্ট গায়ে শাভেজের সঙ্গ ঘুরতে দেখা গেছে। বুটজোড়া তুলা রাখার পরও তিনি ফিলিস্তিনের অকুণ্ঠ সমর্থন করে  গেছেন। ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর হামাসের মুখপাত্র সামি আবু জুহরি শোক প্রকাশ করে টুইট করেছিলেন। ফিলিস্তিনের প্রতি আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির সমর্থনের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে হামাস।২০১২ সালে ম্যারাডোনা নিজেকে ‘ফিলিস্তিনি জনগণের এক নম্বর ভক্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি তাদের (ফিলিস্তিনিদের) শ্রদ্ধা করি এবং তাদের সমব্যথী। আমি ভয়ডরহীনভাবে ফিলিস্তিনকে সমর্থন করি। ’ খবর বাংলানিউজের।

দুই বছর পর অবরুদ্ধ গাজার ওপর হামলা করে ইসরায়েল। ওই হামলায় কমপক্ষে তিন হাজার ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়। হামলার শিকার ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন ম্যারাডোনা। তিনি বলেছিলেন, ‘ফিলিস্তিনের সঙ্গে ইসরায়েল যা করছে তা লজ্জাজনক। ’

শুধু সমর্থন করাই নয়, ম্যারাডোনা হতে পারতেন ফিলিস্তিন জাতীয় দলের কোচও। ২০১৫ এএফসি কাপের আগে জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারে তার সঙ্গে আলোচনাও করেছিল ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। পরে অবশ্য তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।