মেগাপ্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়নের প্রস্তাব চেম্বার সভাপতির

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন- শিল্পোদ্যোক্তারা জিডিপিসহ দেশের উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা রাখেন। আগামী বাজেটে অন্তর্ভূক্তির লক্ষ্যে এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবনাসমূহ সম্পর্কে জানার উদ্দেশ্যে এই মতবিনিময়ের আয়োজন। কোন কোন খাতকে অগ্রিম প্রদেয় করদায় চূড়ান্ত হতে অব্যাহতি দেয়া যায় তা বিবেচনা করা হবে। দেশীয় লবণ শিল্প রক্ষায় শিল্প খাতে আমদানিকৃত লবণ বাজারে বিক্রি হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যেসব কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান রিটার্ন দাখিল করছে না তাদের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। বৃহৎ কোম্পানিসমূহের অনলাইন ব্যবসাকে করের আওতায় আনা হচ্ছে। এসএমই খাতের উন্নয়নের স্বার্থে সক্ষমতা অর্জিত হলে দেশে উৎপাদন হয় এমন পণ্য আমদানি করা হবে না। সরকার জনকল্যাণ, সেবা প্রদান ইত্যাদি উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সম্পাদন করে থাকে। দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা, কর ব্যবস্থাকে কিভাবে আরো সহজ করা যায়, করের বোঝা কমানো যায় এবং সহজ পরিবেশ তৈরি করা যায় সেই লক্ষ্যে এনবিআর কাজ করছে এবং অটোমেশনে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি গতকাল সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে আসন্ন ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের প্রাক্কালে চট্টগ্রাম চেম্বারের সদস্য ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে এক প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বৃহত্তর চট্টগ্রামে বাস্তবায়নাধীন মেগা প্রকল্পসমূহ যথাসময়ে সম্পন্ন করার জন্য আগামী বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানান। তিনি বলেন- গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সরকার প্রদত্ত লক্ষাধিক কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বর্তমানে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে যা আগামী বাজেটে আরো ত্বরান্বিত হবে। তিনি ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি, কর্পোরেট করহার কমানো, সারচার্জবিহীন নিট সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি টাকার পরিবর্তে ৫ কোটি নির্ধারণ, ইপিজেডে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের ৫ বছরের কর অবকাশ সুবিধার প্রত্যয়ন পত্র এককালীন ইস্যু করা, লৌহ ও লৌহজাত পণ্যের ক্ষেত্রে উৎসে কর ২% থেকে কমিয়ে ১% নির্ধারণ, চূড়ান্ত করদায় বাতিল করে কর সমন্বয়ের ব্যবস্থা করা, স্ক্র্যাপ আমদানির করহার টন প্রতি ৫০০/-টাকা থেকে কমিয়ে ১০০/-টাকা করা, এলপি গ্যাস বিক্রয় পর্যায়ে ৭% ভ্যাটের পরিবর্তে প্রতি কেজি ২/-টাকা হারে ট্যারিফ ভ্যাট প্রবর্তন, সিনথেটিক দিয়ে তৈরি জুতা রপ্তানিতে নিয়োজিত ইন্ডাষ্ট্রিদের শুল্ক মুক্তভাবে খুচরা যন্ত্রাংশ, আর্দ্রতা নিরোধক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল র‌্যাক আমদানি অনুমোদন, প্রচ্ছন্ন রপ্তানির সংজ্ঞা স্পষ্টীকরণ এবং এক্ষেত্রে ডলারে লোকাল এলসি খোলার ব্যবস্থা করা, ২% প্রতিবন্ধী নিয়োগ করলে ৩% কর ছাড়, এলপিজি কনভার্সন কার্যক্রম চালানোর জন্য ক্যাপিটাল মেশিনারীজ আমদানিতে সিএনজির ন্যায় সুবিধা প্রদান এবং শিপ রিসাইক্লিং এ গ্রীন ইয়ার্ড তৈরিতে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি শতভাগ শুল্কমুক্ত রাখার প্রস্তাব করেন। এছাড়া ভ্যাটের ক্ষেত্রে ৪ মাস পর্যন্ত সমন্বয়ের মেয়াদ বৃদ্ধি, মূসক ২.৩ এ লিমিটেড কোম্পানি হলে উৎসে
ভ্যাট থেকে অব্যাহতি, মেডিক্যাল ডিভাইস অ্যান্ড সার্জিক্যাল ইনস্টলমেন্ট উৎপাদনে উপকরণ আমদানিতে শুল্ক ১৫% থেকে কমিয়ে ৫% করার সুপারিশ করেন। বিদ্যমান ক্লিনিক ও হাসপাতালসমূহে মানসম্মত ডায়ালাইসিস সেন্টার চালু করতে বিশেষ বরাদ্দের অনুরোধ জানান চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।
চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন রাজস্ব বোর্ডের সদস্যবৃন্দ মো. মাসুদ সাদিক, জাকিয়া সুলতানা ও সামস উদ্দিন আহমেদ, চেম্বার সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, পরিচালক এ কে এম আক্তার হোসেন ও হাসনাত মোঃ আবু ওবাইদা, চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ ও আফসার হাসান চৌধুরী (জসিম), বিএসআরএম’র চেয়ারম্যান আলীহুসেইন আকবর আলী, জিপিএইচ ইস্পাত চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, কনফিডেন্স সিমেন্ট’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির উদ্দিন আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বারের সভাপতি আজিজুল হক, কক্সবাজার চেম্বার সভাপতি মো. আবু মোরশেদ চৌধুরী, রাঙ্গামাটি চেম্বার সভাপতি মো. আবদুল ওয়াদুদ, বিজিএমইএ’র ১ম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, রিহ্যাব-চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’র ১ম সহসভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী (বাচ্চু), উইম্যান চেম্বারের সহসভাপতি আবিদা মোস্তফা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি