মানবিক দায়িত্ব পালনে বেসরকারি হাসপাতালের প্রতি রেজাউল করিমের আহ্বান

সময়ের প্রয়োজনে সাহসিকতা নিয়ে রোগীর সুচিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছেন চসিক মেয়র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
তিনি বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে একজন রোগীকে সেবা দেয়া হাসপাতাল ও চিকিৎসকের নৈতিক দায়িত্ব। করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সকল প্রকার দল, মত ও ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে রোগীর চিকিৎসা সেবা দিয়ে মানবিক দায়িত্ব পালনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
ভয়ানক ব্যথাতুর সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা। প্রতিদিন স্বজন হারানোর বেদনায় নীল হচ্ছি আমরা। করোনার ভয়াবহ সংক্রমণে চট্টগ্রাম আজ বিপর্যস্ত। আইসিউসহ কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র ও অক্সিজেন সরবরাহ সুবিধার তুলনায় সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছে সরকারি হাসপাতালগুলো। প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা দিতে চিন্তাশীল পদক্ষেপ নিয়ে বিশ্বসভায় নন্দিত হয়েছেন। বেসরকারি হাসপাতালগুলো চিকিৎসাসেবায় এগিয়ে এলে চট্টগ্রামের কোনো লোক বিনা চিকিৎসায় মারা যেতো না। কিন্তু দুঃখের সাথে আমরা লক্ষ্য করলাম, বেসরকারি এসব ক্লিনিকগুলো প্রত্যাশানুরূপ সাড়া দিচ্ছেনা। করোনা আক্রান্ত রোগী ছাড়াও হৃদরোগসহ অন্যান্য যে কোনো রোগীর মধ্যে শ্বাসের সমস্যা হলে তাদেরকেও ভর্তি না করে ফিরিয়ে দিচ্ছেন তারা। ফলে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছে অনেক প্রিয়জন।
পরিতাপের সাথে আমরা দেখছি বাজারে প্রয়োজনীয় যে কোন ঔষধের দাম রাখা হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। ৩ হাজার টাকার অক্সিজেন সিলিন্ডার ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। মনে রাখতে হবে, নগর পুড়লে দেবালয়ও বাদ যায়না। চিকিৎসা সেবা পাওয়া এটা কোন সুযোগ নয়, এটা জনগনের অধিকার।
আজ কেন বৈশ্বিক দুর্যোগের সময়ে মানুষকে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে ফিরিয়ে দিবে বেসরকারি হাসপাতালগুলো? কেন একজন প্রসূতিকে ব্যথাজনিত জ্বর থাকার কারণে বিভিন্ন হাসপাতালের দুয়ারে ঘুরেও ভর্তি হতে না পেরে রাস্তায় সন্তান প্রসব করতে হয়? কেন হাসপাতালের দুয়ারের বাইরে বিনা চিকিৎসায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মরতে হয় রোগীকে? কেন আইসিইউগুলো রোগীদের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হবে না? কেন করোনা আক্রান্ত অথবা অন্য কোনো কারণে কারো কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রয়োজনে আপনাদের হাসপাতালে পড়ে থাকা অক্সিজেন সুবিধা পাবে না? কেন পাবেনা ভ্যান্টিলেশন? কেন দুর্যোগকালে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা?
এসব প্রশ্ন রেখেই বলবো, গণশক্তির চেয়ে কোনো সিন্ডিকেটই অধিক শক্তিশালী হতে পারেনি কখনো। যে কোনো ক্লিনিক-হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের এক সেকেন্ডের জন্যও চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। তাই বিনয়ের সাথে বলবো, আর এক মুহূর্তও সময় ক্ষেপণ না করে সকল প্রকার রোগী সেবার দুয়ার সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করুন। মানবতাকে সব কিছুর ঊর্ধ্বে তুলে ধরুন। বিজ্ঞপ্তি