ব্যস্ত সময় পার করছে কামাররা

নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া :

কোরবানির ঈদকে সামনে   রেখে   লোহার টুংটাং শব্দে মুখরিত কক্সবাজারের  পেকুয়ার  কামারের দোকান গুলো। আগুনের শিখায়  লোহা পুড়িয়ে তৈরি করা এসব ছুরি, দা, বঁটি, চাপাতি দিয়ে পশু   কোরবানির পাশাপাশি মাংস কাটার জন্য। এসব কিনতে কামারের   দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

সরেজমিনে ঘুরে   দেখা যায়,   পেকুয়া উপজেলার প্রধান বাণিজ্যিক   কেন্দ্র আলহাজ্ব কবির আহমদ   চৌধুরী বাজারের ওয়াপদা   রোড সহ উপজেলার সাকুরপাড়   স্টেশন, মগনামা মহুরি পাড়া, রাজাখালী আরবশাহ বাজার, টইটং বাজার, বাঘগুজারা বাজার,   সোনালি বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে অবস্থিত কামারের   দোকান গুলোতে একের পর এক   ক্রেতা   দোকানে এসে ভিড় করছে।

ফলে সকাল দুপুর ও রাতের   বেলায়ও হরদমে কাজ চলছে। ঈদুল আযহার   কোরবানি পশু জবাইয়ের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে কামারদের ব্যস্ততা। একদিকে হাপরে আগুনের শিখা অন্যদিকে হাতুড়ি   পেটানোর টুংটাং শব্দে তৈরি হচ্ছে দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি।   কোরবানি ঈদ উপলক্ষে কামারদের তৈরি   লোহার বিভিন্ন পণ্যের   বেশ কদর রয়েছে।

বহু বছর আগে   থেকেই সনাতন পদ্ধতিতে তারা তৈরি করে আসছেন দা, বঁটি,   কোদাল, ছুরি, কুড়ালসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। আবার   কেউ পুরনো দা, বটি, ছুরি নতুন করে শান   দেওয়ার জন্য ভীড় জমাচ্ছে কামারীদের   দোকানে। তবে বিগত সময়ের তুলনায় এসব সরঞ্জামাদির দাম অনেকটাই   বেশি।

গোয়াখালী এলাকার বাসিন্দা জহির উদ্দিন  নামে এক   ক্রেতা জানান, এখানে এসেছি একটি দা আর বাসার কিছু   ছোট ছুরি শান করাবো বলে। দাম অনেক   বেশি রাখা হচ্ছে। কি কারণে   নেয়া হচ্ছে কামারদের এমন প্রশ্ন করলে তারা বলে প্রতিটি জিনিসের দাম   বেড়ে   গেছে। আগের তুলনার চেয়ে ৫০   থেকে ১শ টাকা   বেশী নিচ্ছে। তবুও   যেহেতু   কোরবানে প্রয়োজন তাই   কোন উপায় না   পেয়ে অবশেষে একটি দা ও   ছোট ছুড়ি শানায় নিলাম।

বাবুল কর্মকার নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম হচ্ছে ঈদুল আযহা। আর এই ঈদে মুসলিম ধর্মের অনুসারীরা পশু জবাই করে থাকেন। এই পশু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজন হয় দা, বটি, ছুরি, চাপাতিসহ   লোহার সরঞ্জামদি। এই সময়ের জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকি আমরা।   কোরবানির ঈদের আগে এক সপ্তাহ ভালো   বেচাকেনা হয়। ওই সময় দামও ভালো পাওয়া যায়।   লোহার তৈরি   ছোট ছুরি ৬০   থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জবাই ছুরি মিলছে ৫০০-৬০০ টাকায়।

এছাড়া বিভিন্ন সাইজের চাপাতি ৬০০-৮০০ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে। দা-বটি বিক্রি হচ্ছে প্রতি   কেজি ৬০০ টাকায়। এ   মৌসুম ঘিরে ভালো আয়-উপার্জন হয়। তবে এবার হতাশা ঘিরে ধরেছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে একেবারেই   বেচাকেনা   নেই বলেই চলে।

দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে প্রতিটি জিনিসের দাম অনেক   বেড়ে   গেছে।   সেই সঙ্গে কারেন্টের বিলও বাড়ছে এবং আগের তুলনার   চেয়ে কয়লার বস্তার দাম অনেক   বেশী। এদিকে ঈদের জন্য কাজে চাপ   বেশি। যার জন্য দুই- তিনজন কর্মচারী সঙ্গে নিতে হয়েছে। এজন্য প্রতিটি পণ্যের দাম আমার একটু করে বাড়িয়ে নিতে হচ্ছে বলে জানান।