বিএনপিতে নির্বাাচন-ভীতি তাই ইভিএমেও ‘না’ ব্যালটেও না : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক »

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আসলে বিএনপি ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের নিজেদের ওপরই কোন আস্থা নেই। ক্রমাগতভাবে নির্বাচন থেকে পালিয়ে গেলে এক সময় পুরো বিএনপি দলটাই জনগণের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, নিজেদের ওপর আস্থা নেই বলেই বিএনপি জনগণ থেকে দূরে সরে গেছে, সেটা তারা জানে। যার কারণে বিএনপিকে নির্বাাচন-ভীতি পেয়ে বসেছে। সেজন্য ছাপানো ব্যালটেও ‘না’ এবং ইভিএমেও ‘না’ বলছেন তারা।

গতকাল বুধবার বিকেলে নগরীর এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর সমাবর্তন অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি শুধু ষড়যন্ত্রের পথেই হাঁটছে, আর পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে। দেশ-বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আর বিদেশিদের হাতে পায়ে ধরে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা যায় কিনা সেই চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তবে এগুলো করে কোন লাভ হবে না।

তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বলেন, বিএনপি ২০০৮ সালের নির্বাচনে সর্বশক্তি দিয়ে অংশগ্রহণ করে মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালে নির্বাচন থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ডান-বাম, অতিডান-অতিবাম এবং তালেবানসহ সবাইকে নিয়ে ঐক্য করেছিল। ঐক্য করে তারা আসন পেয়েছিল মাত্র ছয়টি। পরে মহিলা আসনসহ হলো মোট সাতটি। সেজন্য তারা জানে আগামী নির্বাচনেও তাদের কোন সম্ভাবনা নেই। সেজন্যই নির্বাচন বা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ওপর বিএনপি ও তাদের মিত্রদের কোন আস্থা নেই।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন অনেকটা তাদের দাবি মেনে নিয়েই ইভিএম থেকে সরে প্রিন্ট ব্যালটে ভোট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এখানে তো বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর দাবিটাই মেনে নেয়া হয়েছে বলা যায়। সুতরাং এখন নির্বাচনের জন্য যদি তাদের দল গোছায় এবং নির্বাচনে আসে সেটি তাদের জন্যই মঙ্গল হবে।

এরআগে তথ্যমন্ত্রী এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন-এর বিশেষ সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটি অব ব্রাসেলস এর চেয়ারম্যান প্রফেসর এন্ড্রে সেনকেন কে সম্মানসুচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

বিশেষ সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে নারীদের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এখন দেশের প্রতিটি সেক্টরে নারীরা কাজ করছেন। আমাদের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, পুলিশের এসপি ও ডিসি আছেন নারী। মাত্র ১২ বছর আগেও একজন নারী ডিসি বা এসপি অথবা ইউএনও হবেন তা কল্পনাও করা যায়নি। এখন দেশে অনেক নারী ইউএনও মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। একজন রুবানা হককে দেখলে আপনি অনুমান করতে পারবেন কিভাবে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে। তিনি ৮০ শতাংশ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প মালিক সমিতি বিজিএমইএ’র নেতৃত্ব দিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নয়, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নও হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা শুধু শিক্ষিতই নয়, স্বনির্ভরও হয়ে ওঠে, সমাজে অবদান রাখার যোগ্যতা অর্জন করে। এশিয়ান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা অনেক দিক দিয়েই অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় অনেক বেশি যোগ্য। এখানে শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী নিজ শহরে এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর বহু গ্র্যাজুয়েট এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তারা সমাজের অগ্রগতিতে এবং সমাজে নারীদের অগ্রগতিতে ভূমিকা রেখে চলছেন।

তিনি বলেন, এটি দেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ১৪০ একর জমি বরাদ্দ করেছে। এটিই একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যার প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ বিশ^বিদ্যালয় বোর্ডের চেয়ারম্যান। এদেশে আর কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের কাছ থেকে এতো বেশি সাহায্য-সহযোগিতা পায়নি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চট্টগ্রামে একটি মেডিক্যাল স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য তারা সরকারের কাছে আরও জমি বরাদ্দের আবেদন করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি।

বিশেষ সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর ডিন ডেভিট টেইলর বীনাকোনা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চ্যান্সেলর কামাল আহমেদ, বর্তমান ভিসি রুবানা হক, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাসেলস এর চেয়ারম্যান প্রফেসর এন্ড্রে সেনকেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. নেহাল আহমেদ প্রমুখ।