বরইতলী-পেকুয়া-মগনামা সড়ক তিন কিলোমিটারে চার শতাধিক গর্ত

যানবাহন বিকল হয়ে দীর্ঘ যানজটে দ্বিগুণ দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া :

কক্সবাজারের বরইতলী-পেকুয়া-মগনামা সড়ক এখন মরণ ফাঁদে রূপ নিয়েছে । কিছু দিন পর পর দেখা মিলছে বিরাট আকারের গর্ত। সড়ক আর সড়ক নেই, এখন রূপ নিয়েছে মরণ ফাঁদে । গত শনিবার পেকুয়া উপজেলার প্রধান সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সরেজমিনে গিয়ে দেখা মেলে সড়কের এ বেহাল দশা। সরেজমিনে আরো দেখা যায়, রবইতলি- পেকুয়া-মগনামা সড়কের পেকুয়া সদর ইউনিয়নের চৌমুহনী স্টেশন, আন্নর আলী মাতবর পাড়া, সাবেক গুলদি স্টেশন ও চৈরভাঙা এলাকায় তিন কিলোমিটার সড়কে সৃষ্টি হয়েছে চার শতাধিক গর্ত। এই গর্তগুলো মাড়িয়ে চলাচল করছে ছোট-বড় যানবাহন। গর্তে পড়ে প্রায় সময় উল্টে যাচ্ছে ছোট ছোট বাহন। এছাড়া ও পণ্যবাহী ট্রাক গর্তে আটকে নিত্যদিন তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। এতে করে সড়কে যাতায়াত করা মানুষজন পড়ছে চরম দুর্ভোগের মুখে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেকুয়া ও কুতুবদিয়া উপজেলার বাসিন্দাদের চলাচলের অন্যতম পথ বরইতলি-মগনামা সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অন্তত বিশ হাজার মানুষ চলাচল করেন। পরিবহন করা হয় পেকুয়ায় উৎপাদিত লবণ, চিংড়ি ও সাগর থেকে আহরিত মাছ। চকরিয়া, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের সাথে এ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম এই সড়কটি । স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সুষ্ঠু তদারকির অভাবে সড়কটির এ বেহাল দশা। গাড়ি চলাচল ব্যাহত হবার পাশাপাশি কাদাজল মাড়িয়ে এ সড়কে হাটাও এখন দায়। দীর্ঘদিন ধরে সড়কের এ নাজুক অবস্থা সৃষ্টি হলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কেউ। তাই নিরূপায় হয়ে গভীর, অগভীর ছোট-বড় চার শতাধিক গর্তে ভরা সড়কটি ব্যবহার করতে হচ্ছে।আন্নর আলী মাতবর পাড়ার বাসিন্দা রিদুয়ান, হেলাল উদ্দিন বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতে অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের পিছ ওঠে যেতে শুরু করে। সে সময় থেকে আমরা সড়কের এসব অংশ সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসলেও কেউ কর্ণপাত করেনি। তাই সড়কের এসব গর্ত এখন পুকুরে রূপান্তরিত হয়েছে।স্থানীয় রিক্সা চালক আবু ছৈয়দ বলেন, এ সড়ক দিয়ে রিক্সা চালাতে গেলে দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। বৃষ্টি হলে যাত্রীরা এ পথে আর আসতে চায় না। এছাড়া সড়কে রিক্সা নিয়ে আসলেই গাড়ির ক্ষতি অবধারিত। যা আয় হয়, তার চেয়ে বেশি ব্যয় হয়ে যায় রিক্সা মেরামতে।স্থানীয় লবণ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ তোফায়েল বলেন, ইতিমধ্যে এ সড়কে লবণবাহী ২০-৩০টি ট্রাক গর্তে আটকে পড়ে। এতে ব্যবসায়িক ক্ষতি ও জনদুর্ভোগ বেড়ে যায়। তাই এখন লবণ পরিবহন প্রায় বন্ধ রয়েছে। এতে মজুদকৃত লবণ পরিবহন করতে না পেরে চাষি ও ব্যবসায়ী উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবার আশংকা তৈরি হয়েছে। কারণ যথাসময়ে পরিবহন করা না গেলে, সব লবণ পানিতে পরিণত হবে।পেকুয়ার বিভিন্ন পেশাজীবিরা বলেন, চৌমুহনী স্টেশন থেকে চৈরভাঙা স্টেশন পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে হয় বড়সড় দুর্ঘটনার শঙ্কা মাথায় নিয়ে। কখন জানি গাড়ি উল্টে যায়। দুই উপজেলার বাসিন্দাদের ভোগান্তি লাঘবে সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন। পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মগনামা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন সাবমেরিন নৌঘাঁটি ও মাতারবাড়ির কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংযোগ লাইনের বৈদ্যুতিক খুঁটি নির্মাণের পণ্য আনা- নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত বড় বড় ট্রাক লরিগুলো এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে।

অত্যন্ত ভারী এসব গাড়ি চলাচলের কারণে সড়কে এসব খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ইট বালি দিয়ে বেশ কয়েকবার এসব মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু কয়েকদিন পর আবার গর্ত সৃষ্টি হয়ে যায়। সড়কটির টেকসই মেরামতের জন্য আমি সড়ক ও জনপথ বিভাগকে অনুরোধ করেছি।