বন্দরে কাত জাহাজ

বন্দরে কাত হওয়া জাহাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ভারসাম্য হারিয়ে কাত হয়ে গেল জাহাজ। চট্টগ্রাম বন্দরের ১১ নম্বর জেটিতে রপ্তানি পণ্য বোঝাই করার সময় গতকাল সকালে পানামার পতাকাবাহী ‘ওইএলহিন্দ’ নামের একটি জাহাজ কাত হয়ে যায়। জাহাজটি গতকাল চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। এদিকে জাহাজ কাত হয়ে যাওয়ার ঘটনা অনুসন্ধান করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, ১৮৪ দশমিক ১০ মিটার দীর্ঘ এবং সাড়ে ৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজটি ৯৬৪ একক কনটেইনার নিয়ে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পণ্য বোঝাইয়ের এক পর্যায়ে তা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি কাত হয়ে যায়। আর এ কাত হয়ে যাওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ বন্দর চ্যানেলে বা সমুদ্রে যাওয়ার পর কাত হয়ে গেলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকে যায়। এজন্য জাহাজটি থেকে কিছু কনটেইনার নামিয়ে ভারসাম্য আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তারপরও ভারসাম্য আনা যায়নি।
কিন্তু জাহাজটি কেন কাত হয়ে গেল এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার এসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, সাধারনত অফডক থেকে আসা কনটেইনারগুলোতে বাস্তব ওজন ও কাগজে উল্লেখ করা ওজনের মধ্যে পার্থক্য থাকতে পারে। আর এই পার্থক্য যাতে না থাকে সেজন্য আন্তর্জাতিক সমুদ্র পরিবহন দপ্তর থেকে প্রত্যেকটি কনটেইনারের ঘোষিত ওজন অনুযায়ী একটি সার্টিফিকেট প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। এখন এই জাহাজের কনটেইনারগুলোতে তা অনুসরণ করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা যেতে পারে।’
কারণ হিসেবে তিনি আরো বলেন, ‘জাহাজের চিফ অফিসার কিন্তু কার্গেজ উল্লেখ করা ওজনের প্রেক্ষিতে কনটেইনারগুলো জাহাজের বিভিন্ন পয়েন্টে রাখবেন। কিন্তু যদি কাগজে উল্লেখ করা ওজনের সাথে বাস্তব ওজনের পার্থক্য থাকে তাহলে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।
একই মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার উঠা নামায় জড়িত সাইফ পাওয়ার টেকের প্রধান নির্বাহী ক্যাপ্টেন তানভির । তিনি বলেন,‘ মনে হয় কনটেইনারের ওজনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তবে ভাগ্য ভালো যে তা জেটিতে হয়েছে। বন্দর চ্যানেলে গিয়ে কাত হয়ে কোনো কনটেইনার পড়ে গেলে বিপদ বাড়তে পারতো।’
বন্দরে জাহাজ পরিচালনার সাথে জড়িত আরো কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনেক সময় জাহাজের তেলগুলো বিভিন্ন প্রান্তে রক্ষিত থাকে। জাহাজ কাত হয়ে গেলেও সব তেল একই দিকে চলে যেতে পারে না। এখন এই জাহাজটি কোনো ত্রুটি থাকলে সব তেল একই দিকে চলে যাচ্ছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে কথা হয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ওমর ফারুকের সাথে। তিনি বলেন,‘জাহাজটি কেন কাত হয়ে গেছে তা খুুঁজে বের করার কাজ চলছে। যেহেতু এটি টেকনিক্যাল বিষয় তাই তারা তা খতিয়ে দেখছে। তবে জাহাজটি ঠিক হলেই চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাবে।’