পুকুর-দীঘি-জলাশয় দখল করা যাবে না

বাকলিয়ায় মতবিনিময় সভায় সুজন
‘মশক নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম চলমান রয়েছে। প্রতিদিন ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। এত কিছুর পরও মানুষ যত্রতত্র ময়লা ফেলে এবং পানি চলাচলের পথ বন্ধ করায় শীত মৌসুমে মশার বংশ বিস্তার হচ্ছে। এই উদাসীনতা ও অপরিণামদর্শী মোটেই জনহিতকর নয়, বরং আত্মঘাতী। যারা এই পথে হাঁটছেন তারা যদি ঠিক না হন তাদের উচিত শিক্ষা দিতে বাধ্য হবো।’
গতকাল বিকেলে ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডে নুরুল ইসলাম মাতৃসদন হাসপাতাল মিলনায়তনে এলাকাবাসীর সাথে এক মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন একথা বলেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার ভাগাড় বানাচ্ছেন এগুলো তাদের দিয়েই সরানো হবে।
তিনি সভাস্থলে আসার সময় নগরীর দ্বিশতবর্ষী বলুয়ার দীঘি পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করে বলেন, খাতুনগঞ্জ-কোরবানীগঞ্জের মানুষ আমার কাছে অভিযোগ করেছে দীঘিটির চারপাশের দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনার কেউ কেউ আবর্জনা ফেলে ভরাট করে ফেলছে। এই দীঘির করুণ অবস্থা দেখে এসেছি। এর পানি দূষিত হয়ে গেছে। দীঘির বিশাল অংশ ইতোমধ্যেই ভরাট করে বেদখল করা হয়েছে। দীঘির পাশ থেকে খানকায়ে আলমগীর থেকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জশনে জুলুছের বিশাল মিছিল বের হয়। এছাড়াও এখানে রয়েছে নগরীর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাশ্মশান। আরো আছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক বাসা-বাড়ি। তাই প্রতিদিন এই দীঘির চারপাশ দিয়ে অসংখ্য মানুষ চলাচল করে এবং স্থানীয়রা এই দীঘির পানি নিত্য কাজে ব্যবহার করতো। কিন্তু এখন এই পানি ব্যবহার অযোগ্য।
তিনি আরো বলেন, যারা এই দীঘিতে ময়লা ফেলেছেন এবং নানাভাবে কুমতলবে দীঘি ভরাট করছেন তা নিজ উদ্যোগে অপসারণ করার জন্য ৭ দিন সময় বেঁধে দিয়েছি। এর মধ্যে যদি তা অপসারণ করা না হয় তাহলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে এগুলো অপসারণ করবে। এ জন্য যা খরচ হবে তার পুরোটাই সনাক্তকৃত ভরাটকারীদের বহন করতে হবে।
প্রশাসক আরো ঘোষণা করেন, এই নগরীর যে সকল পুকুর, জলাশয় দীঘি ভারট করা হয়েছে সেগুলো পুনরুদ্ধার করা হবে এবং কাউকে পুকুর জলাশয়ের এক ইঞ্চি অংশ দখল করতে দেয়া হবে না।
তিনি বলুয়ার দীঘি থেকে মিয়াখান নগর ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে ব্রিজের পাশে ময়লার বিশাল স্তূপ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, কিছু দিন আগে এখানে পরিষ্কার করা হয়েছিলো। স্থানীয়রাই এখানে আবার ময়লার ভাগাড় তৈরি করেছে। এটা দায়িত্ব জ্ঞান হীনতার কদর্য চিত্র। আগামীকালই এগুলো পরিচ্ছন্ন বিভাগ পরিষ্কার করে দেবে। এরপর যদি আবার ময়লার স্তূপ দেখি তা স্থানীয়দের দিয়ে পরিষ্কার করা হবে।
তিনি এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে চাক্তাই স্কুলের মাঠটিকে খেলার উপযোগী করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। এ ছাড়া ওয়াসার পানি সরবরাহের মূল লাইন থেকে বাকলিয়ার যে অংশ সংযোগ লাইন চাইছে তাদের সংযোগ দেয়ার অনুমতি দিলে স্বেচ্ছাশ্রমে এলাকাবাসী সংযোগ লাইনের কাঁটা অংশ ঠিক করে দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাতে সাড়া দেয়ার জন্য ওয়াসা কর্র্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিক অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরী, নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, কাউন্সিলর প্রার্থী নুরুল আলম মিয়া, শাহিন আক্তার রোজি, ডাক্তার অঞ্জন কুমার দাশ, শফিউল আজম বাহার, মো. জানে আলম, মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি