নিয়মিত কর আদায় হলেও উন্নয়ন যেন সোনার হরিণ

রাউজান পৌরসভা

শফিউল আলম, রাউজান :

রাউজান পৌরসভা নিয়মিত পৌর কর, হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করলেও গত কয়েক বছরে পৌরসভার ফান্ড থেকে উন্নয়ন কাজ হয়নি বলে জানায় স্থানীয়রা। রাউজানের পশ্চিম গহিরা, দক্ষিণ গহিরা, অংকুরী ঘোনা, বদুরঘোনা, মঘাশস্ত্রী বড়–য়া পাড়া, গহিরা মাইজ পাড়া, গহিরা চৌমুহনী, মোবারক খীল, পুর্ব গহিরা, পশ্চিম সুলতান পুর, সন্দ্বীপ পাড়া, সুলতান পুর কাজী পাড়া, জগৎ মল্ল পাড়া, বণিক পাড়া, জলদাশ পাড়া, বেরুলিয়া, নন্দী পাড়া, বড়বাড়ী পাড়া, এলাকাকে নিয়ে ৪৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের রাউজান পৌরসভা গঠন করেন গত ১৯৯৮ সালে। রাউজান পৌর এলাকায় পৌরসভার উন্নয়ন ফান্ড থেকে প্রাপ্ত টাকায় দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন কাজ হয়নি।  স্থানীয় সরকার বিভাগের অর্থায়নে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর প্রচেষ্টায় রাউজান পৌর এলার উপর দিয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম রাঙামাটি মহাসড়ক, খান বাহাদুর আবদুল জব্বার চৌধুরী সড়ক, গহিরা অদুদিয়া সড়ক, পশ্চিম গহিরা আবুদ্দ্যার বাড়ি সড়ক, চিকদাইর শাহাদাত ফজল সড়ক, সাহেব বাড়ি সড়ক, কুন্ডেশ^রী সড়ক, জলিল নগর বাস ষ্টেশন বাজার, জানালী হাট বাজার, গহিরা চৌমুহনী বাজার ইজারা দিয়ে বিপুল পরিমান টাকা আয় করে আসছে। এছাড়া ও রাউজান জলিল নগর বাস স্টেশন, ট্রাক স্টেশন, সিএনজি স্টেশন, মুন্সির ঘাটা সিএনজি স্টেশন, গহিরা চৌমুহনী সিএনজি স্টেশন, রাউজান ফকির হাট বাজার সিএনজি স্টেশন ইজারা দিয়ে টাকা আয় করে আসছে।

এছাড়াও রাউজান ফকিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী, জলিল নগর বাস স্টেশন, মুন্সির ঘাটা, জানালী হাট, গহিরা চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ী থেকে পৌর কর, হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করে আসছে। সরকারি বেসরকারি অফিস থেকে প্রতি বছর হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে। রাউজান পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বসিন্দাদের কাছ থেকে পৌরকর, হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে। রাউজান পৌরবাসী নিয়মিত পৌর কর হোল্ডিং ট্যাক্স দিলে ও পৌরসভার উন্নয়ন ফান্ড থেকে পৌরসভার মধ্যে দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন কাজ করা হয়নি। সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায় পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের পালিত পাড়া সড়কে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে সড়কের উপর বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। এলাকার বাসিন্দা মিলন দাশ, মুক্তিযোদ্ধা সাধন পালিত বলেন, পালিত পাড়া সড়কে গত ২০ বছরের মধ্যে কোন উন্নয়ন কাজ করেনি রাউজান পৌরসভা। সড়কের উপর জমে থাকা পানি বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে সীমাহীন। ছত্রপাড়া এলাকার ৭৫ বছরের বৃদ্ধ অমৃত দাশ প্যারালাইসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎিসাধীন। তিনি বলেন, রাউজান পৌরসভা হওয়ার পর থেকে পৌরকর, হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করলেও এ এলাকায় কোন উন্নয়ন কাজ করেনি। ৮নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বেলাল বলেন, তার বাড়ির সামনে দিয়ে দাশ পাড়া পাড়া পালিত পাড়া সংযোগ সড়ক। দাশপাড়া, পালিতপাড়া সড়কের কোন উন্নয়ন কাজ করেনি রাউজান পৌরসভা। সড়কের পাশে নালা ময়লায় ভরাট হয়ে গেছে। পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জানে আলম জনি মতবিনিময় সভায় বলেন, পৌরবাসীর ট্যাক্সে মেয়র ও কাউন্সিলরগণ ভাতা ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। মেয়র পৌরসভার অফিসে না আসায় এলাকার উন্নয়ন কাজ না হওয়ায় তিনি লজ্জিত।

২য় প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন, গত দশ বছরের মধ্যে পৌরবাসী উন্নয়ন কর্মকান্ড থেকে বঞ্চিত। পৌরসভার প্রকৌশলী ও সচিব রুমেল বড়–য়া বলেন, গত ২০১৮- ২০১৯অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে ৮৬ লাখ টাকা উন্নয়ন বরাদ্দ পাওয়া যায়। এ টাকা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ভাগ করে দিয়ে উন্নয়ন কাজসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় করা হয়েছে।

পৌরসভার মেয়র দেবাশীষ পালিত বলেন, ৪৪ বর্গকিলোমিটার বিশাল আয়তনের রাউজান পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে পৌরসভার উন্নয়ন বরাদ্দের টাকা ও স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে উন্নয়ন কাজ করেছি। কিছু এলাকায় সড়কের কাজ করা হয়নি  চলতি অর্থবছরে  ঐ সব এলাকায় কাজ করা হবে।